কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: কলেজের পূর্বসূরী প্রাক্তনীকে উত্তরসূরী প্রাক্তনীর শ্রদ্ধার্ঘ্য। জীবনের প্রথম পরিচালককে তাঁর নায়কের শ্রদ্ধাপ্রদর্শনের এক অনবদ্য অনুষ্ঠান রবিবাসরীয় দুপুরে। কথা হচ্ছে বরেণ্য পরিচালক মৃণাল সেন ও মিঠুন চক্রবর্তীর। গৌরাঙ্গ থেকে গুরু হয়ে ওঠার যাত্রা পথের পাশাপাশি নিজের কলেজে পূর্বসূরী মৃণাল সেনকে নিয়ে স্মৃতিচারণায় ডুব দিলেন মিঠুন।
স্কটিশ চার্চের প্রাক্তনীর তালিকায় নেতাজী সুভাষ, বিবেকানন্দ, মান্না দে থেকে মৃণাল সেন, মিঠুন চক্রবর্তী। ২০৩০-এ কলেজের ২০০ বছর পূর্তি হতে চলেছে। আর প্রাক্তন ছাত্র মৃণাল সেনের জন্ম শতবর্ষ চলছে। সেই উপলক্ষেই স্কটিশচার্চ কলেজের প্রাক্তনীদের উদ্যোগে “শতবর্ষে মৃণাল সেন” শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে কলেজের অ্যাসেম্বলি হলে উপস্থিত ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। নিজের কলেজে নস্ট্যালজিক মহাগুরু।
এদিন মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘আজ দিনটা অন্যরকম। যার হাত ধরে ফিল্ম লাইনে আমার জন্ম তাঁর শতবর্ষ। আমার সাফল্যের পিছনে আছে ডেস্টিনি। আমিই ডেস্টিনির সেরা উদাহরণ। অন্ধগলি থেকে একটা ছেলে কীভাবে পৃথিবী বিখ্যাত হতে পারে? কলেজের ইলেকশনে বোমাবাজি হত। আমার নামে কেস হল। তারপর শুরু হল ডেস্টিনির খেলা। মৃণালদাও আমাকে সামনে থেকে দেখেননি। পেছন থেকে দেখেই নায়ক বেছেছিলেন। হিরো হওয়ার যা যা দরকার আমার কিচ্ছু ছিলনা। আমি ভেবেছিলাম ড্যান্সিং ভিলেন হব। মৃণালদার জন্য গোঁফ লাগিয়ে ভিলেন সেজে ছবি পাঠিয়েছিলাম। মৃণালদা ছবি ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে বলেছিলেন আমি মৃগয়া করব। নায়ক খুঁজছি। আমি সবাইকে বলি স্বপ্নকে কখনও ঘুমোতে দেবেন না। কত স্মৃতি ঘুরছে’।
মেগাস্টার কলেজের স্মৃতি রোমন্থন করে আরও বলেন, ‘মাইতি স্যার বলতেন, তুমি আর ক্লাসে এসো না বাবা, তোমাকে আমি প্রেজেন্ট করে দেব। আমি বলতাম আমি না এলে আমার দিন খারাপ যাবে। স্যার বলতেন তুমি এলে আমার দু মাস খারাপ যাবে’। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গেও আলাপচারিতায় দেখা যায় মিঠুনকে। কলেজের বান্ধবীদের টার্গেটে ছিলেন মিঠুন। এমনকী বান্ধবীর নাম ভুল বলায় একটা গাট্টা মারব, গৌরাঙ্গকে বললেন বান্ধবী। জানা গেল নানা গল্প। ক্যান্টিনের টেবিলের ওপর উঠে নাকি নাচ করত গৌরাঙ্গ। ক্লাসে খুব কম যেত। একদম বখাটেদের মত জামাকাপড় পড়ে আড্ডা দিত। মেয়েদের আওয়াজ দিত। বান্ধবীরা ফাঁস করলেন গৌরাঙ্গের কলেজ লাইফের সেই সব কাণ্ড। সব শুনে লজ্জায় লাল মিঠুন।
তবে সাংবাদিক সম্মেলনে মিঠুন জানিয়েদিলেন যে তিনি আর কলেজ লাইফে ফেরত যেতে চান না। তিনি বলেন এই কলেজ তাঁর ভিত তৈরি করে দিয়েছে সেখান থেকে এগিয়ে যাওয়াই উচিত। বর্তমানের ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন যে এই কলেজের মাটিতে জাদু আছে। মৃণাল সেনের সঙ্গে শেষবার কী কথা হয়েছিল তাঁর, তাও শেয়ার করেন অভিনেতা। মেগাস্টার জানালেন যে মৃণাল সেন তাঁকে জানিয়েছিলেন যে তিনি আরও একটা ছবি করতে চান তাঁকে নিয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত আর তা হয়ে ওঠেনি। সবমিলিয়ে নস্টালজিয়ায় ডুব দিয়েছিলেন অভিনেতা।
(Feed Source: zeenews.com)