খলিস্তানি নেতা হত্যায় বহিষ্কৃত ভারতীয় কূটনীতিক, ভারতকে নিয়ে বড় অভিযোগ ট্রুডোর

খলিস্তানি নেতা হত্যায় বহিষ্কৃত ভারতীয় কূটনীতিক, ভারতকে নিয়ে বড় অভিযোগ ট্রুডোর

টরেন্টো: উত্তাপের আভাস পাওয়া গিয়েছিল জি ২০ সম্মেলনের মধ্যেই। ভারত এবং কানাডার সরকারের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা টের পাওয়া গিয়েছিল তখনই। জি ২০ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খলিস্তানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠকে জাস্টিন ট্রুডো এক পা এগিয়ে আবার বিষয়টি ‘বাক স্বাধীনতার’ সঙ্গে তুলনা করেন। বিষয়টি যে খুব একটা ভাল নজরে দেখেনি নয়া দিল্লি, তা টের পাওয়া গিয়েছিল জি ২০ সম্মেলনের শেষেই। জাস্টিন ট্রুডোর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া বিবৃতি দেয় ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক।

এর পরেই ভারতের সঙ্গে ট্রেড মিশন বাতিল করেন কানাডা সরকার। অন্যদিকে, কানাডার খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করেছে কানাডা সরকার। বিষয়টি নিয়ে কড়া বিবৃতি দিয়েছে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সেই সঙ্গে এক ভারতীয় কূটনীতিককেও বহিষ্কার করেছে তারা। কানাডা সরকারের অভিযোগ, ওই কূটনীতিক তদন্তে হস্তক্ষেপ করছিলেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুন মাসে কানাডার খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কানাডার সারেতে গুরু নানক শিখ গুরুদ্বারের কাছে নিজ্জারকে দুই অজ্ঞাত হামলাকারী গুলি করে হত্যা করে। হরদীপ সিং নিজ্জারকে পলাতক ঘোষণা করেছিল ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। খলিস্তানি নেতার পাশাপাশি বেশ সংগঠনের মাথাও ছিল হরদীপ। শিখ ফর জাস্টিস, খালিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধানও ছিল সে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, “কানাডার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বিশ্বাস যে নিজ্জারকে ভারত সরকারের এজেন্টরা হত্যা করেছে। নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে কানাডার এজেন্সিগুলো। কানাডার মাটিতে একজন কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা অগ্রহণযোগ্য।”

কানাডার প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেছেন, “নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত G20 শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমি তাঁকে বলেছিলাম এই হত্যার তদন্তে ভারত সরকারের কোনও সংযোগ থাকা বরদাস্ত হবে না। আমি তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কানাডার মাটিতে এক কানাডার নাগরিককে খুন করা হয়েছে। তদন্তে কোনও বিদেশী সরকারের সম্পৃক্ততা থাকা মানে আমাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হওয়া। সরকার নিজেই কানাডিয়ান এজেন্সির সঙ্গে কাজ করছে। সরকার ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয় রয়েছে।”

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেছেন, “কানাডার ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছেও এই বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।” পার্লামেন্টে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে বিরোধী দলের নেতা পিয়েরে পোইলিভরে বলেছেন, “আপনার অভিযোগ যদি সত্য হয় তাহলে তা আমাদের সার্বভৌমত্বের অপমান।”

(Feed Source: news18.com)