আজ, শুক্রবার সংযুক্ত আমিরশাহির দুবাইয়ের মঞ্চে বাণিজ্য সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পমহলের প্রতিনিধিদের সম্বোধন করলেন ‘ভাইবোন’ বলে। এমনকী বাণিজ্য সম্মেলনের বিশেষ অতিথি, আমিরশাহির বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থানি বন আহমেদ আল জেয়াউদিকে ‘কিউট’ বলে সম্বোধন করলেন। তখনই গোটা সভাগৃহে ফেটে পড়ল হাততালিতে। স্পেন এবং বার্সেলোনার মতো দুবাইয়ের সম্মেলনেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর রাজ্যে লগ্নির আবেদন জানান। বাণিজ্য সম্মেলনে এক মঞ্চে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি উভয়ে পৃথক বৈঠক করেন। সেখানে বাংলার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বাণিজ্য বিষয়ক নানা আঙ্গিক নিয়ে আলোচনা হয়। কেন বাংলায় বিনিয়োগ করবেন শিল্পপতিরা? সেটা বুঝিয়ে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কিউট’ সম্বোধন করা মন্ত্রী থানিও জানান, বাংলার সঙ্গে বাণিজ্যে গাঁটছড়া বাঁধতে তারা অত্যন্ত ইচ্ছুক। বাণিজ্য সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পপতিদের কাছে তুলে ধরলেন বাংলার উৎকর্ষতার কথা। ইউনেস্কো বাংলাকে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সেরা ট্যুরিজম ডেস্টিনেশন হিসেবে ঘোষণা করেছে বলে জানান মমতা। কন্যাসন্তানদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলা রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রথম পুরস্কার পেয়েছে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলার কৃষকদের আয় সব রাজ্যের থেকে বেশি। এখানে শ্রমিকদের জন্যও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প রয়েছে। আমাদের এখানে এত প্রতিভা রয়েছে, তা গোটা বিশ্বের কাছে বেঞ্চমার্ক।’
অন্যদিকে আজ, শুক্রবার দুবাইয়ের বাণিজ্য সম্মেলনে শিল্পপতি ও উদ্যোগপতিদের বাংলায় বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আহ্বান, ‘আমরা উন্নয়ন চাই। আমরা গরিব মানুষের উন্নয়ন চাই। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে কৃষকদের মুখেও হাসি থাকে এবং শিল্পের মুখেও হাসি থাকে। শিল্প আর কৃষি দুই বোনের মতো। ঠিক যেমন হিন্দু আর মুসলিম দুই বোন, তেমনই। এটাই বাংলার সৌন্দর্য। আমাদের রাজ্যে সব পরিকাঠামো তৈরি আছে। জমি তৈরি আছে। বিদ্যুৎ ও কয়লা রয়েছে। সমুদ্র রয়েছে। রয়েছে মেধা এবং প্রশিক্ষিত শ্রমিক। বাংলায় আসুন। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আসুন।’
চন্দ্রযান–৩ এর সাফল্য গোটা বিশ্ব দেখেছে। সেই কর্মযজ্ঞে বাংলার থেকে ৪০ জন বিজ্ঞানীর অবদান রয়েছে বলেও এদিন দুবাইয়ের বাণিজ্য সম্মেলনে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা হার্ভার্ড থেকে কেমব্রিজ সর্বত্র আছেন। আমাদের এখানে ৩০০–র বেশি আইটিআই ও পলিটেকনিক তৈরি আছে। অনেক চিকিৎসক রয়েছে। নার্সিং ট্রেনিং কলেজও রয়েছে। দুবাই গোটা বিশ্বের অন্যতম ফিউচারিস্টিক শহর। ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বাণিজ্যিক সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বাংলার। আমাদের পরিকাঠামো পুরো তৈরি। ২০০ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক রয়েছে। জমি এবং জমি নীতি রয়েছে। জমি ম্যাপ রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমি লিজ দেওয়ার পরিবর্তে ফ্রি হোল্ড রাইটস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব আছে।’
(Feed Source: hindustantimes.com)