রোগীমৃত্যুর পর ক্ষতিপূরণ চক্র, পরিজন সেজে চিকিৎসকদের থেকে লক্ষাধিক টাকা দাবি, হুমকি

রোগীমৃত্যুর পর ক্ষতিপূরণ চক্র, পরিজন সেজে চিকিৎসকদের থেকে লক্ষাধিক টাকা দাবি, হুমকি
ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও নান্টু পাল, বীরভূম : রোগী মৃত্যুর পর পরিকল্পিতভাবে তোলা হচ্ছে গাফিলতির অভিযোগ (Neglegance Allegation)। মৃতের পরিজন সেজে চিকিৎসকের (Doctors) কাছে দাবি করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ। টাকা না পেলে, দেওয়া হচ্ছে হুমকি। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন, বীরভূমের (Birbhum) চিকিৎসকদের একাংশ। চিঠি দেওয়া হয়েছে SDPO-কে।

একাধিক সরকারি হাসপাতালে দালালচক্রের জাল কীভাবে ছড়িয়েছে, তা সম্প্রতি সামনে এসেছে। এই প্রেক্ষাপটে এবার চিকিৎসাক্ষেত্রেই সামনে এল আরেক চাঞ্চল্য়কর প্রতারণার অভিযোগ । যেখানে কোনও রোগীর মৃত্যুর পর পরিকল্পিতভাবে তোলা হচ্ছে গাফিলতির অভিযোগ। মৃতের পরিজন সেজে চিকিৎসকের কাছে দাবি করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ। টাকা না পেলে, দেওয়া হচ্ছে হুমকি ! আর এই গোটাটার নেপথ্য়ে কোনও রোগীর পরিজন নয়, রয়েছে একটা বড় চক্র। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন বীরভূমের চিকিৎসকদের একাংশ।

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনর (Indian Medical Assosiation) রামপুরহাট শাখার সদস্য ও চিকিৎসক আবু নাসিমের অভিযোগ, কোনও নার্সিংহোমে রোগী মারা গেলেই কিছুক্ষণের মধ্যে একটা মব চলে আসছে। বলছে চিকিৎসা, অপারেশন ভুল হয়েছে, টাকা দিতে হবে। শুরু হচ্ছে হুমকি, রাস্তায় গেলে মেরে ফেলব বলা হচ্ছে। এটা কয়েক বছর ধরে হচ্ছে, এখন বেশি হয়ে গিয়েছে।

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (Rampurhat Medical College and Hospital) সহকারী অধ্যাপক ও চিকিৎসক সাদ্দাকাশ আলি বলেছেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী করে ৪০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের জন্য দাবি করে। আমি বিষয়টি নিয়ে নার্সিংহোমের মালিককে একাধিকবার পুলিশকে ফোন করতে বললেও, মালিক পুলিশকে ফোন না করে আমাকে রোগীর আত্মীয় পরিজনের বাইরে নার্সিংহোমে উপস্থিত এক চক্রের সামনে ১১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য, রাজি হতে বাধ্য করেন।

তাঁর নার্সিংহোমেও এরকম ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন, হাসনের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) ও চিকিৎসক অশোক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, আমার নার্সিংহোমেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এখানে যে মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে তা এখনও শিশু। আর এই ক্রিমিনালদের জন্য এই শিশুর জীবন হ্যান্ডিক্যাপ হয়ে শেষ হয়ে যাবে। কারন এখানে বড় বড় মেশিন আনা হবে কিন্তু, তাকে চালানোর জন্য ডাক্তার আর থাকবে না। এখান থেকে ডাক্তারেরা পালিয়ে যাবে। আমার জানা নেই এই ধরনের অরাজকতা আর কোথাও হয় কি না।

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রামপুরহাট শাখার তরফে, এই অভিযোগ লিখিতভাবে রামপুরহাটের SDPO-কেও জানানো হয়েছে। সম্প্রতি SSKM ও NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কয়েকজন দালালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বীরভূমে চিকিৎসকদের একাংশ যে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই এখন দেখার।

(Feed Source: abplive.com)