তিনি নামে প্রেরণা। কাজেও সকলের প্রেরণা। প্রতিকূলতা জয় করে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট বা এনইইটি-তে বাজিমাত করেছেন কোটার এই তরুণী। বছর চারেক আগে বাবাকে হারানোর পর তাঁর পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসে। বিশাল আর্থিক বোঝার পাশাপাশি চেপে বসে আকাশছোঁয়া ঋণের ভার। ২৭ লক্ষ টাকা আর্থিক ঋণ শোধ করার সঙ্গে প্রেরণাকে ভাবতে হত তাঁর চার ভাইবোনকে নিয়েও।
হাজারো প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে এনইইটি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন প্রেরণা। ঠিকই করেছিলেন, পথে যতই বাধাবিঘ্ন আসুক না কেন, তাঁকে সফল হতেই হবে। বাড়িভাড়া দিতে পারায় ছেড়ে দিত হয়েছিল বাড়ি। এমনই ছোট্ট ঘরে তাঁকে পড়াশোনা করতে হত, যেখানে এক জন কোনওমতে বসতে পারেন। সেরকমই এক চিলতে ঘরে বসে রোজ ১০-১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন প্রেরণা।
সংসার চালানোর মূল ভরসা ছিল মায়ের ৫০০ টাকা পেনশন। সঙ্গে ছিল আত্মীয়পরিজনদের দেওয়া কিছু আর্থিক সাহায্য। অভাবের তাড়নায় পয়সা বাঁচানোর জন্য বাসে ট্রেনেও পর্যন্ত উঠতেন না প্রেরণা। পরিবর্তে বাইসাইকেল বা পায়ে হেঁটে যাতায়াতই ছিল তাঁর অবলম্বন। ২০২২ সালে জীবনের প্রথম প্রচেষ্টাতেই নিট-এ সফল হন প্রেরণা। ৭২০-এ ৬৮৬ পেয়ে দেশের মধ্যে আড়াই লক্ষ পরীক্ষার্থীর সঙ্গে মেধাতালিকায় তাঁর স্থান ছিল ১০৩৩।
সংবাদমাধ্যমে প্রেরণা জানিয়েছিলেন এই সাফল্যের অনুপ্রেরণা তাঁর বাবা। তিনি না থেকেও মেয়ের পাশে ছিলেন। তাই সব বাধা পেরিয়ে তিনি পৌঁছতে পেরেছেন সাফল্যের শীর্ষে।