এবার ছোট্ট এআই ক্যামেরার সাহায্যেই বাঘ শনাক্ত করতে পারবে গ্রামবাসীরা। শনাক্তকরণের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সতর্কবার্তা পৌঁছে যাবে গ্রামে। পরিসংখ্যান বলছে ভারত ও প্রতিবেশী দেশ নেপালের জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে গ্রামাঞ্চল বসতি অঞ্চলের আশেপাশেও এসে যাচ্ছে তারা। তাই গ্রামীণ মানুষ, লোকালয়ের সুরক্ষার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে সতর্কীকরণের এই নয়া বন্দোবস্ত। দক্ষিণ ক্যারোলিনার ক্লেমসন ইউনিভার্সিটি এবং বেশ কয়েকটি এনজিও’র বিশেষজ্ঞরা গত মাসে এআই প্রযুক্তির ক্যামেরা ব্যবহার করে তাদের কাজের ওপর একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। এই বিশেষজ্ঞ দলের দাবি, এই প্রযুক্তি বাঘ সংরক্ষণে বিপ্লব আনতে পারে।
বিশেষজ্ঞদল দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশের অরণ্যের চারপাশে ছোট ছোট ডিভাইস স্থাপন করে এই পরীক্ষা চালায়। একদিকে বাঘ সংরক্ষণ অন্যদিকে গ্রামবাসীদের সুরক্ষা প্রদান, দুটি বিষয়েই নজর দেয় বিশেষজ্ঞদলটি। এর পাশাপাশি চোরাচালানকারী ও শিকারিদের কার্যকলাপেও নজর রাখতে সক্ষম এই এআই প্রযুক্তির ক্যামেরা। বায়োসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত তাদের গবেষণা অনুসারে, ট্রেলগার্ড নামক ক্যামেরা সিস্টেমটি বাঘ এবং অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। ক্যামেরায় ছবি ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সেকেন্ডের মধ্যে পার্ক রেঞ্জার বা গ্রামবাসীদের কাছে সেই ছবি পৌঁছে যাবে।
প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক এরিক ডিনারস্টেইন এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘মানুষ, বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীর সহাবস্থানের উপায় আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা খুব সহজে সেই লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগোতে পারি।’ গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ক্যামেরাগুলি লাগানোর পরেই কাজ শুরু দিয়েছে। গ্রাম থেকে ৩০০ মিটার দূরত্বের থাকা একটি বাঘের ছবি শনাক্ত করেছে ক্যামেরাটি। এছাড়া একদল চোরাশিকারিকেও ক্যামেরাবন্দি করা সম্ভব হয়।
বাঘ ছাড়া অন্য কোনও প্রাণীর ছবি ক্যামেরাবন্দি হলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে সেই ছবি মুছে ফেলতে সক্ষম এই প্রযুক্তি। কেবলমাত্র বাঘের ছবি ধরা পড়লেই সতর্কবার্তা পৌঁছে যাবে গ্রামবাসী ও ফরেস্ট গার্ডদের কাছে। অরণ্য অঞ্চলে বণ্যপ্রাণীদের সুরক্ষা প্রদান ও সংরক্ষণ এই প্রকল্পটির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ২০৩০ সালের মধ্যে এই বিশেষজ্ঞ দলটি পৃথিবীর ৩০ শতাংশ ভূভাগ ও জলভাগ প্রাণীদের জন্য সুরক্ষিত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কেবল বাঘ নয়, হাতিদের সুরক্ষা ও সংলগ্ন গ্রামে হাতির আক্রমণ প্রতিহত করতে সাহায্য করবে এই ব্যবস্থা।
(Feed Source: hindustantimes.com)