প্রেমের টানে ১ ঘণ্টা নদী সাঁতরে ওপার বাংলা থেকে এপারে! তারপরের ঘটনা রোমাঞ্চকর

প্রেমের টানে ১ ঘণ্টা নদী সাঁতরে ওপার বাংলা থেকে এপারে! তারপরের ঘটনা রোমাঞ্চকর

West Bengal

oi-Sanjay Ghoshal

ভালোবাসার কী অমোঘ টান! সীমান্তও বাধ মানে না। বাধ মানে না কোনও বেড়াজাল। বিশাল জলরাশিও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না প্রেমিক-প্রেমিকার কাছে। নদী-পাহাড় অক্লেশে পেরিয়ে যেতে পারে অবুঝ মন। তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল এপার-ওপার বাংলা। ওপার বাংলা থেকে নদী সাঁতরে এপারে পালিয়ে এলেন প্রেমিকা।

প্রতীকী ছবি

একেই বলে প্রেম সাগরে ডুব! উত্তাল নদীও কোনও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তাঁর কাছে। প্রেমিককে বিয়ে করতে বাংলাদেশ থেকে এক ঘণ্টা নদীতে সাঁতার কেটে এপারে সুন্দরবনে এসে ওঠেন এক তরুণী। বয়স বড়জোর ২২। ওই বাংলাদেশি তরুণী তাঁর প্রেমিককে বিয়ে করতে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তা না পেরে তিনি জলপথকেই বেছে নেন প্রেমিকের দর্শনে।

সুন্দরবনের উত্তাল নদী, বন্যপ্রাণী, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার- কোনও কিছুর ভয়ই বাসা বাঁধেনি তরুণীর মনে। অসমসাহসীকতার পরিচয় দিয়ে এক ঘন্টা ধরে উত্তাল নদী সাঁতরে তিনি তাঁর ভালবাসার মানুষের কাছে ছুটে এসেছিলেন। প্রেমিকের বাহুবন্ধনে ধরা দিতে তিনি ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় প্রবেশ করেছিলেন নদী সাঁতরে।

কিন্তু কী করে গড়ে উঠল সেই প্রেম। বাংলাদেশের তরুণী কৃষ্ণা মণ্ডলের সঙ্গে এপার বাংলার অভীক মণ্ডলের প্রেম। ওই বাংলাদেশি তরুণীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। তাঁরা দেখাও করেন। এরর শুরু হয় তাঁদের প্রেম পর্ব। কিন্তু ফেসবুকে প্রেম আর কতদিন বাঁধা থাকে। তাঁদের তো বাঁধা পড়তে হবে, এক হতে হবে চার হাত! কৃষ্ণার আর তর সইছিল না। প্রিয়তমের সঙ্গে দেখা করার জন্য মন আকুল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু পাসপোর্ট নেই! কী করে পাড়ি দেবেন ভারতে। তাই অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বেছে নেন জলপথকে। এক ডুবে ভরা নদী পার করে দেওয়ার অদম্য বাসনা নিয়ে তিনি নেমে পড়েন সুন্দরবনের মাতলা নদীতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণা প্রথমে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। যে সন্দরবন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের জন্য বিশেষ পরিচিত। তারপর প্রায় এক ঘণ্টা নদী সাঁতরে তিনি পৌঁছে যান গন্তব্যে। কিন্তু তারপর কী হল? কৃষ্ণা কি খোঁজ পেলেন প্রেমিক অভীকের। প্রেমিকের সঙ্গে মিলতে পারলেন তিনি, নাকি তাঁর সব চেষ্টাই বৃথা গেল!

না, অভীকও যে কৃষ্ণার প্রতীক্ষায় ব্যাকুল ছিলেন। অপেক্ষার প্রহর গুণছিলেন এপারে। কৃষ্ণা এপারে এসে ধরা পড়েছে অভীকের বাহুডোরে। তিন দিন আগে কলকাতার কালীঘাট মন্দিরে অভীকের সঙ্গে বিয়েও হয় কৃষ্ণার। কিন্তু বাসরঘরে তাঁদের জায়গা হয়নি। অবৈধভাবে দেশে প্রবেশের অভিযোগে সোমবার শ্রীঘরে স্থান হয় কৃষ্ণার। কৃষ্ণাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সূত্রের খবর কৃষ্ণাকে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হস্তান্তর করা হতে পারে। এ বছরেরই শুরুর দিকে একজন বাংলাদেশি কিশোর চকলেট কিনতে সীমান্ত পার হয়ে গিয়েছিল। প্রবেশ করেছিল ভারতে। ইমান হোসেন নামে ওই কিশোর তার প্রিয় চকোলেট বার পেতে একটি ছোট নদী সাঁতরে বেড়ার ফাঁক দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। কিশোরকে স্থানীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারপর তাকে আদালতে পেশ করা হয়। এরপর তাকে ১৫ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।

এখন দেখরা কৃষ্ণার কী হয়। কৃষ্ণাকে গ্রেফতার করার পর বাংলাদেশ হাই কমিশনারে হস্তান্তর করলে তাঁদের প্রেমের কী হবে! অভীকের সঙ্গে কি তাঁর আর ঘর বাঁধা হবে না। তাঁরা মিলতে পারবেন না আর! এ এক অনিশ্চয়তার মোড়কে ঢেকে গিয়েছে কৃষ্ণা-অভীকের প্রেম-পর্ব। ফের বোধহয় ছাড়াছাড়ি হতে হবে প্রেমিক যুগলকে, জানে না কেউ-ই!

(Source: oneindia.com)