কদর কমেছে হাতে আঁকা চালচিত্রের
পটের উপর তুলির রঙিন টানে নিপুণ শিল্পকর্ম। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের চালচিত্র শুধু কলকাতার কুমোরটুলিই নয়, ভিনরাজ্য়েও সমাদৃত। এক সময়ে হাতে আঁকা চালচিত্রের অনেক চাহিদা ছিল। কিন্তু, এখন সময় বদলেছে। কম্পিউটারের যুগে কদর কমেছে হাতে আঁকা চালচিত্রের। কম্পউটারে অনেক সহজেই ডিজাইন তোলা যায়, তাই দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করে আঁকা চালচিত্রের প্রয়োজনীয়তা কমে গিয়েছে। খরচ ও সময় দুই-ই বাঁচানোর তাগিদ।
সাবেকি দুর্গা সহ বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তির পিছন দিকে যে চালা বা চালিকা থাকে, তা সাজানোর জন্য ব্যবহার করা হয় ছোট ছোট ছবি । সেই ছবিতেও বিভিন্ন দেবদেবীর কাহিনি বর্ণণা করা হয়। সেই ছোট ছোট ছবিকেই চালচিত্র বলা হয়। এই সব ছবির মাধ্যমে গল্প বলা এক অনন্য শিল্প।
দুর্গাপুজোর সময় চালচিত্রের চাহিদা থাকলেও খাটুনি অনুসারে আয় হয় না। ফলে জীবিকা নির্বাহ করা দুর্বিষহ হয়ে দাড়িয়েছে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব রেবা পাল। বিয়ের পর স্বামীর হাত ধরে চালচিত্র আঁকা শিখেছেন। রেবাদেবীর স্বামী ও শ্বশুর় চালচিত্র এঁকেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁরও জীবনধারণের একমাত্র অবলম্বন চালচিত্র। এর কদর কমায় সংসার চালানো দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেবা পাল জানালেন, চালচিত্রের সেরকম চাহিদাই নেই। অর্ডার একটা দুটো আসে। কম্পিউটার আসার পর থেকে তার অনেক আগেই চাহিদা কমেছে।
বয়সের ভারে ঠিক মতো চলাফেরা করতে পারেন না। তবু একটু আয়ের আশায় জরাজীর্ণ বাড়ির বারান্দায় বসে চালচিত্রে নিপুণ শিল্পকর্ম ফুটিয়ে চলেছেন রেবাদেবী। এখনও আশা রাখেন, কম্পিউটারের যুগেও কিছু মানুষ এর কদর বুঝবে ঠিক ।
(Feed Source: abplive.com)