আপনার মধ্যে এই উপসর্গগুলি দেখা দিচ্ছে? সতর্ক হন, হার্ট অ্যাটাক হয়নি তো?

আপনার মধ্যে এই উপসর্গগুলি দেখা দিচ্ছে? সতর্ক হন, হার্ট অ্যাটাক হয়নি তো?

#নয়াদিল্লি: অকস্মাৎ হার্ট অ্যাটাক আর তাতেই শেষ জীবন৷ চল্লিশের কোটা পেরোতে না পেরোতেই হামেশাই ঘটছে এই ঘটনা। তবে সত্যিই কি আকস্মিক হয় না কি হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত থাকে?

সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক আসলে কী?

ধরা যাক, কারও হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এবং তিনিনি বুঝতেই পারেননি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলা হয় সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক বা সাইলেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্র‍্যাকশন। সমীক্ষায় ধরা পড়েছে যে সমস্ত ধরনের হার্ট অ্যাটাকের মধ্যে প্রায় ৫০% থেকে ৮০% মানুষের সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে।
কোনও হার্ট অ্যাটাককে তখনই ‘সাইলেন্ট’ বলা হয় যখন রোগীর মৃদু উপসর্গ থাকে কিংবা কোনও উপসর্গই থাকে না কিংবা এমন ধরনের লক্ষণ থাকে যা সহজেই রোগী এড়িয়ে যান কিংবা অন্যান্য অসুস্থতার জন্য বুঝতে পারেন না। সাধারণত হার্টে যথাযথভাবে অক্সিজেন না পৌঁছালে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কারণে ধমনীতে প্লেক গঠন বা অন্যান্য ক্ষতির জন্য, রক্ত ​​প্রবাহ আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যার ফলেই হতে পারে হার্ট অ্যাটাক।
যেহেতু সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় না তাই ক্ষতি কতটা হতে পারে তা আমাদের কল্পনারও বাইরে। সেক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণগুলি লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকদের মতে, বেশিরভাগ সময়ে হার্ট অ্যাটাকের আগে রোগীর শরীরে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেগুলি চিহ্নিত করে ডাক্তারের পরামর্শ নিলেই কিন্তু বিপদ এড়ানো সম্ভব।
তবে সবসময় যে আগে থেকে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ বোঝা যায় এমনটা নাও হতে পারে। আবার বেশ কিছুদিন ধরে আভাস দিলেও অনেকেই তা বুঝতে পারেন না। ফলে এই ধরনের অনেক রোগীর শরীরে হার্ট অ্যাটাকের রিক্স ফ্যাক্টর থাকলেও সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে বিপদ ডেকে আনে।

বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি হয় কি?

বিভিন্ন কারণে আমাদের বুকে ব্যথা হতে পারে। তবে, বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি হার্ট অ্যাটাকের সতর্কতামূলক লক্ষণ হতে পারে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাকে বুকের মাঝখানে বা বাম দিকে অস্বস্তি হয় যা কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় কিংবা তারপর চলে যায় এবং আবার সেই ব্যথা কিছুক্ষণ পরে ফিরেও আসে।

বমি বমি ভাব এবং অম্বল সহ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাও থাকে?
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা যেমন পেটে ব্যথা, বদহজম, বুকজ্বালা এবং বমি বমি ভাব হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে পেটের উপরের দিকের মাঝখানে ব্যথা হতে পারে এবং সাধারণত পেট ভারী বোধ হয়। এই ধরনের ব্যথা কয়েক মিনিটেরও বেশি সময় ধরে চলতে পারে।

মাথা ঘোরা কিংবা হালকা মাথা ব্যথা দেখা দেয়?

মাথা ঘোরার অনুভূতি হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। বিশেষত মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ বেশি দেখা যায়। এই উপসর্গটি ঠান্ডা ঘাম, বুকে আঁটসাঁটো ভাব বা শ্বাসকষ্টের সঙ্গেও দেখা যেতে পারে। কিছু মানুষ জ্ঞান পর্যন্ত হারাতে পারেন। সেক্ষেত্রে এই ধরনের লক্ষণ খেয়াল করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ব্যথা হাত ও চোয়াল সহ শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে?

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি শুধুমাত্র শরীরের নির্দিষ্ট অংশে সীমাবদ্ধ থাকে না। একইসঙ্গে শরীরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। তবে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম উপসর্গ হল ব্যথা হাতে ছড়িয়ে পড়া, বিশেষ করে শরীরের বাম দিকে এই ব্যথা হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কিত এই ধরনের ব্যথা সাধারণত বুক থেকে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে হাত ও চোয়ালের দিকে ছড়িয়ে যায়। তাছাড়া ঘাড়, পিঠ এবং পেটেও এই ব্যথা হতে পারে।

এই ধরনের উপসর্গ থাকলে, দ্রুত কী করা উচিত?

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু করা। সেক্ষেত্রে যে কোনও একটি কিংবা একাধিক লক্ষণ খেয়াল করলে অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। অন্তত কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি পরীক্ষা করে দেখা যায় হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এবং রোগীর নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হযচ্ছে, তাহলে শরীরে রক্ত প্রবাহ বজায় ঠিক করতে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) শুরু করতে হবে।

Published by:Rukmini Mazumder

(Source: news18.com)