শুধু নায়িকা হয়ে নয়, অভিনয় দিয়ে মানুষের মন ছুঁতে চাই: ইশা

শুধু নায়িকা হয়ে নয়, অভিনয় দিয়ে মানুষের মন ছুঁতে চাই: ইশা

তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: প্রথমবার কমেডি ছবিতে অভিনয়, অথচ চিত্রনাট্য না শুনেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি! ভরসা ছিল পরিচালকের ওপর, নিজের ওপরেও। ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম পরিচিত মুখ তিনি, প্রশংসিতও। টলিউডে বেশ কয়েকটা বছর কাটিয়ে, ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে, অভিনয় নিয়ে কী ভাবেন অভিনেত্রী? এবিপি লাইভে (ABP Live) কমেডি থেকে অভিনয়-দর্শনের গল্পে ইশা সাহা (Ishaa Saha)।

কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের (Kamaleshwar Mukherjee) ‘একটু সরে বসুন’ ছবিতে পিউয়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন ইশা। টলিউডে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করলেও, সোশ্যাল কমেডি ইশার কেরিয়ারে এই প্রথম। কীভাবে সুযোগ এসেছিল এই কাজটির? ইশা বলছেন, ‘কমলদা ফোন করেছিলেন আমায় ছবিটার জন্য। বলেছিলেন, ‘তোকে কাজটা করতে হবে’। একটুও সময় না নিয়েই রাজি হয়ে যাই। তখনও চিত্রনাট্য পর্যন্ত শুনিনি। কাজ শুরু করে জানলাম, বনফুলের গল্প অবলম্বনে তৈরি এটি একটি সোশ্যাল কমেডি। ‘একটু সরে বসুন’ আমার প্রথম কমেডি ফিল্ম। এর আগে আমি পর্দায় প্রায় সবসময়েই খুব গভীর বা গম্ভীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। কমেডি ছবিতে কাজ নিয়ে একটু টেনশনে ছিলাম। কমলদা বুঝিয়েছিলেন, এই ছবি সুড়সুড়ি দিয়ে হাসানোর নয়, সাধারণ সংলাপই এমন বুদ্ধিদীপ্ত হবে যে দর্শকের হাসি পাবে।’

ছবিতে ইশার চরিত্রটা ঠিক কেমন? অভিনেত্রী বলছেন, ‘আমার চরিত্রে খুব একটা কমেডি ছিল না। তবে এমন একটা চরিত্র, যাকে দেখলে মন ভাল হয়ে যায়। এই ছবিতে এক একজন বাঘা বাঘা অভিনেতা অভিনেত্রী রয়েছেন যাঁরা কমেডিতেও ভীষণ পটু। ঋত্বিকদার (ঋত্বিক চক্রবর্তীর) সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এমনই ভীষণ ভাল। আমার বেশিরভাগ দৃশ্য ওর সঙ্গেই ছিল। উল্টোদিকে একজন ভাল অভিনেতা থাকলে খুব সাবলীলভাবেই অভিনয়টা আসে। ঋত্বিকদার সঙ্গে কাজ করলে অনেক কিছু বোঝা যায়, শেখা যায়।’

হাসির মোড়কে এই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে সমসাময়িক সমাজের কিছু বাস্তব পরিস্থিতিকে। ইশা বলছেন, ‘ছবির মুখ্যচরিত্র গুড্ডু। সে বেগুনবাগিচায় থাকে। আমার চরিত্র পিউ, এই গুড্ডুরই পাড়ার মেয়ে। গুড্ডু আর পিউর একে অপরকে পছন্দ হলেও, মুখে কখনও একে অন্যের কাছে স্বীকার করে না সেই কথা। পিউ ছটফটে, মুখরা একটা মেয়ে। একসময় গুড্ডু চাকরির খোঁজে কলকাতা পালিয়ে আসে সেখান থেকেই মোড় নেয় গল্প। হাসির মোড়কে সোশ্যাল কমেডি এই ছবি। গল্পের সঙ্গে সঙ্গে, একটি রাজনীতিক ভাবনাও রয়েছে ছবিটিতে।’

একটু অন্য ধরণের চরিত্রে কাজ করতে চেয়েছিলেন ইশা, সেই সুযোগই তাঁর কাছে এনে দিয়েছে, ‘একটু সরে বসুন’। ইশা বলছেন, ‘শেষ যে ছবিগুলোয় আমি কাজ করেছি, সেগুলি হয় থ্রিলার বা প্রেমের ছবি। যেমন, ‘মিথ্যে প্রেমের গান’, ‘ঘরের ফেরার গান’… প্রত্যেকটাতেই আমার চরিত্র বেশ গভীর। এই ছবিটা আমার প্রথম কমেডি, একটু অন্য স্বাদের ছবি। এত পর পর নিজেকে একরকম চরিত্রে দেখতে ভাল লাগছিল না। একটা বদলের দরকার ছিল। এই ছবিটা যেন সেটাই।’

থ্রিলারের ভিড়ে, কমেডি ছবি নিয়ে কতটা আশাবাদী ইশা? অভিনেত্রী বলছেন, ‘বাংলায় আগামীতে যে ছবিগুলি মুক্তি পাচ্ছে, তার মধ্যে ‘বগলা মামা’ ছাড়া আর কোনও হাসির ছবি নেই। বাঙালি অবশ্য থ্রিলার দেখতে কখনোই বিরক্তিবোধ করে না। এই ছবিটিতে কমেডির পাশাপাশি বুদ্ধিমত্তা রয়েছে।’ ছবি নির্বাচনের সময় কখনও কি ব্যবসার কথা মাথায় রাখেন ইশা? অভিনেত্রী বলছেন, ‘ছবির হিট-ফ্লপ বোঝা অসম্ভব। আমি চিত্রনাট্য পড়ি আর নিজের অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা রাখি।’

চিত্রনাট্যে, চরিত্রে কোন বিষয়টা ইশাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে? অভিনেত্রী বলছেন, ‘আমার একটা ছবি দেখে রনিদা (রজতাভ দত্ত) ফোন করে প্রশংসা করেছিলেন। আমি বলেছিলাম, এই ছবিটায় তো আমি তেমন কিছুই করিনি, কেন বলছো? রনিদা উত্তরে বলেছিলেন, ‘সব ছবিতে কি হাসি কান্না হিরে পান্না থাকবে? সাধারণটাই তো ভাল।’ আমারও মনে হয়। সাদামাটা চরিত্রে অভিনয় করেও দর্শকদের মনে দাগ কাটা যায়। সব ছবিতে কেবল নায়িকার চরিত্রেই অভিনয় করব, এমন উন্নাসিকতা আমার নেই। তবে আমার চরিত্রটা যেন গুরুত্বপূর্ণ হয়, দর্শকদের মনে দাগ কাটতে পারে। প্রভাবশালী চরিত্রে অভিনয় করাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অভিনয়ে ভর করে মানুষের মনে থেকে যেতে পারি যেন।’

(Feed Source: abplive.com)