‘জানি সমস্ত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছ’, ম্যাটি পেরিকে খোলা চিঠি পর্দার রেচেলের

‘জানি সমস্ত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছ’, ম্যাটি পেরিকে খোলা চিঠি পর্দার রেচেলের

নয়াদিল্লি: গত ২৮ অক্টোবর, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেতা ম্যাথু পেরি (Matthew Perry)। জনপ্রিয় মার্কিনি সিটকম ‘Friends’-খ্যাত (FRIENDS) চ্যান্ডলার বিং। তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে হতবাক হয়ে যায় বিশ্ববাসী। তাৎক্ষণিক একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয় তাঁর সহ-অভিনেতা, বাকি ৫ ‘ফ্রেন্ডস’-এর তরফে। এর পর কেটে গেছে প্রায় দিন ১৭-১৮! আজ নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় ম্যাটিকে খোলা চিঠি লিখলেন জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেত্রী ও অন্যতম ‘ফ্রেন্ড’ জেনিফার অ্যানিস্টন (Jennifer Aniston)।

‘এই ক্ষত অনেকটা গভীর’, আবেগঘন সোশ্যাল পোস্ট পর্দার রেচেলের

দীর্ঘ ১০টি সিজন ধরে চলা বিশ্ববিখ্যাত টেলিভিশন সিরিজ ‘ফ্রেন্ডস’। ২০০৪ সালে শেষ হয়ে যাওয়া সিরিজের খ্যাতি আজও এতটুকু কমেনি। ৬ বন্ধুর এক শহরে একসঙ্গে থেকে জীবনের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলার গল্প। একসঙ্গে রীতিমতো বড় হয়ে ওঠার গল্প। তাঁদের সঙ্গে দর্শকও যেন বড় হয়ে যান খানিকটা। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর সেই ছয়জনের বন্ধুদলে ছেদ পড়ে, হঠাৎই, সকলের অজান্তে। বাড়িরই হট টাব থেকে উদ্ধার হয় অন্যতম ‘ফ্রেন্ড’ চ্যান্ডলার বিং ওরফে ম্যাথু পেরির দেহ। যতক্ষণে খোঁজ মেলে ততক্ষণে সব শেষ। ঘটনার আকস্মিকতায় বাক্য হারান সকলেই। শেষবারের মতো পাঁচ বন্ধু এক হন অভিনেতার শেষকৃত্যে, ঠিক যে স্টুডিওয় ১০টা সিজন সম্পন্ন কালজয়ী সিরিজের শ্যুট করেছিলেন, তার উল্টোদিকে।

তারপরেও কেটে গিয়েছে বেশ কিছুদিন। শোক খানিক সামলে উঠে এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় ম্যাটিকে চিঠি লিখলেন পর্দার চনমনে রেচেল গ্রিন। ‘এই ক্ষত অনেকটা গভীর… আমাদের ম্যাটিকে বিদায় জানানো একরাশ আবেগের ঢেউ নিয়ে এসেছিল যা আমি আগে কখনও অনুভব করিনি। জীবনের কোনও না কোনও পর্যায়ে আমরা সকলেই কিছু না কিছু হারাই। জীবনহানি, বা ভালবাসার চলে যাওয়া। সেই দুঃখে চেপে বসতে পারলে সত্যি কাউকে কেন এত ভালবেসেছিলে সেই আনন্দের মুহূর্তগুলো অনুভব করা যায়। এবং ওঁকে আমরা প্রচণ্ড ভালবেসেছি। আমাদের ডিএনএ-র অংশ ছিল ও। আমরা সবসময়েই ছয় জনের দল ছিলাম। আমরা যেন ঈশ্বর বেছে নেওয়া পরিবার ছিলাম যা চিরকালের জন্য আমাদের জীবনের পথ বদলে দেয় ও আমরা কী হব ভবিষ্যতে তা বদলে দেয়। ম্যাটির ক্ষেত্রে, ও জানত যে ও মানুষকে হাসাতে ভালবাসে। ও নিজেই যেমন বলত, যে ও যদি ‘হাসি’ শুনতে না পায় তাহলে ওর মনে হত ও মারাই যাবে। ওর জীবন আক্ষরিক অর্থেই এটার ওপর নির্ভরশীল ছিল। আর তাতে শেষ পর্যন্ত ও সফলও থেকেছে। আমাদের সক্কলকে প্রবলভাবে হাসিয়ে গিয়েছে।’

তিনি আরও লিখে চলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে আমি আমাদের টেক্সটগুলো পড়ছিলাম একটার পর একটা। হাসছি, কাঁদছি তারপর আবার হাসছি। আমি ওগুলো চিরকাল রেখে দেব।’ জেনিফার লেখেন, ‘ম্যাটি, তোমাকে আমি খুব ভালবাসি এবং আমি জানি তুমি এখন পুরোপুরি শান্তিতে আছ, ও সমস্ত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছ। আমি রোজ তোমার সঙ্গে কথা বলি… কখনও কখনও তো শুনতে পাই তুমি বলছ, ‘তুমি কি এর থেকে বেশি উন্মাদ হতে পার?’ বিশ্রাম নাও ছোট ভাই। তুমি চিরকাল আমার দিন ভাল করে দিতে।’

এই পোস্টে তিনি ম্যাথুর সঙ্গে একটি টেক্সটের স্ক্রিনশটও শেয়ার করেন। জেনিফারের সঙ্গে ‘ফ্রেন্ডস’-এর সেটে তোলা ম্যাথুর একটি ছবি পাঠিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘তোমাকে হাসিয়ে আমার দিন ভাল যায়। আমার দিনটা ভাল হয়ে গেল।’ তার উত্তর দেন অভিনেত্রী। এই ছবিটিই পোস্টের শুরুতে পোস্ট করেন জেনিফার।

অভিনেতা ম্যাটি পেরি সম্পর্কে

১৯৬৯ সালের ১৯ অগাস্ট ম্যাসাচুসেটসে জন্ম নেন ম্যাথু পেরি। তবে ছোটবেলার অনেকটাই কাটান কানাডায়। পরে সপরিবার চলে এসেছিলেন লস অ্যাঞ্জেলেসে। সিটকম ‘Friends’-র চ্যান্ডলার বিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল খ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৪। টানা দশ বছর চলেছিল ‘Friends’-এর ১০টি ‘সিজন’। পেরির অভিনয় মুগ্ধ করেছিল ভক্তকূলকে। বন্ধুদের সঙ্গে নানা ইয়ার্কি-খুনসুটি করতে দেখা যেত পর্দার চ্যান্ডলারকে। তবে জোয়ি, চ্যান্ডলার, রস, মনিকা, রেচেল এবং ফিবি-র বন্ধুত্বে এখন স্পষ্ট ‘ভাঙন’।

(Feed Source: abplive.com)