শাহরুখ তাঁর ‘জান’, ভালবাসেন ফুচকা-মোমো-সবজি দিয়ে ম্যাগি, অফস্ক্রিনে কেমন ‘অটোওয়ালি’ ডোনা?

শাহরুখ তাঁর ‘জান’, ভালবাসেন ফুচকা-মোমো-সবজি দিয়ে ম্যাগি, অফস্ক্রিনে কেমন ‘অটোওয়ালি’ ডোনা?
কলকাতা: কালার্স বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘টুম্পা অটোওয়ালি’ (Tumpa Autowali)। পর্দার টুম্পাকে তো দর্শক বেশ পছন্দ করেন। কিন্তু সেই চরিত্রের আড়ালে যে ডোনা ভৌমিক (Dona Bhowmick) লুকিয়ে আছে তাঁকেও তো চিনতে মাঝেমাঝে ইচ্ছা হয়। প্রিয় অভিনেত্রীকে চেনার সুযোগ এবিপি লাইভে (ABP Live)। ডোনার সঙ্গে মজার প্রশ্নোত্তর পর্ব। তাঁর কী খেতে ভাল লাগে বা কোন অভিনেতা তাঁর পছন্দের, জানা গেল সবটা।

প্রশ্ন: ধারাবাহিকের শ্যুটিং মানে তো প্রচণ্ড ব্যস্ত শিডিউল? প্যাক আপের পর বাড়ি ফিরে প্রথম কাজ কী হয়?

ডোনা ভৌমিক: হ্যাঁ প্রচণ্ড ব্যস্ততা থাকে। তারপর বাড়ি ফিরে আমার প্রথম কাজ হয় সোফায় শুয়ে পড়া! (হাসি) খানিক বিশ্রাম নিয়ে আমার দুই পোষ্য কুকি আর ম্যাঙ্গোর সঙ্গে খুনসুটি করি। তারপর খাবার আর ল্যাপটপ নিয়ে বসি, সিনেমা, সিরিজ দেখতে থাকি। তারপরে ঘুম।

প্রশ্ন: অবসর সময় কী করতে ভালবাসেন?

ডোনা: অবসর সময়ে আমি অনলাইন শপিং করি, খেতে ভালবাসি। আর খেতে খেতে আমি ল্যাপটপে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ দেখি। আগে নাচ করতাম। কিন্তু এখন শ্যুটিং করে এত ক্লান্ত হয়ে যাই যে আর নাচ হয়ে ওঠে না।

প্রশ্ন: পর্দায় তো একটা নির্দিষ্ট ধরনের সাজে দেখেন দর্শক, এমনিতে ফ্যাশন বলতে আপনার কী মনে হয়? Overall Look বেশি জরুরি নাকি comfortable পোশাক ?

ডোনা: ফ্যাশন মানে আমি মনে করি আমি যাই পরি না কেন, সেটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ক্যারি করতে পারতে হবে। ম্যাচিং হোক, বা কনট্রাস্ট বা ব্যাগি লুকস, বাঁধাধরা কোনওকিছুই আমার কাছে ফ্যাশন নয়।

আগে সত্যিই আমার মনে হত আমাকে কেমন দেখাচ্ছে! ওভারঅল লুক বেশি জরুরি মনে হত। এখন আমার কাছে আরামদায়ক পোশাকটা বেশি জরুরি। শ্যুটিংয়ে তো নির্দিষ্ট কস্টিউমে থাকতে হয়। এরপর যখন নিজস্ব সময় কাটাই, কোথাও ঘুরতে যাই তখন কমফোর্টেবল পোশাকই পরার পক্ষপাতী আমি।

প্রশ্ন: তাহলে প্রিয় পোশাক কী ?

ডোনা: আগে ছিল জিন্স আর টপ। এখন আমি ড্রেস পরতে বেশি ভালবাসি। মানে ওটা পরতে বেশি সময় লাগে না তাই (হাসি)। সঙ্গে হয়তো দুল বা কিছু গয়না বা কিছুই না পরে একটা ঘড়িই শুধু। আসলে মুড অনুযায়ী বদলাতে থাকে।

প্রশ্ন: আপনার প্রিয় খাবার কী ?

ডোনা: এটা পুরোটাই আমার মুডের ওপর নির্ভর করে। তবে হ্যাঁ চিরকালীন ভালবাসার খাবার আছে কিছু, যেমন ফুচকা, মোমো আর ধনেপাতা দিয়ে একটু সবজি দিয়ে ম্যাগি, সসেজ… (হাসতে হাসতে) বলেই যাচ্ছি আমি। কিন্তু আমি বাঙালি হয়েও মাছ মাংস খেতে একদমই ভালবাসি না। মটন আমি ছুঁই না।

প্রশ্ন: ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা দেখা নাকি সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা, কোনটা বেশি পছন্দ ?

ডোনা: নিশ্চিতভাবে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে বেশি পছন্দ। কিন্তু আবারও একই কারণ বলব, আমাদের শ্যুটিং। সময় বের করা হয়ে ওঠে না সবসময়। আবার প্রতিবার নাইট শোও দেখা হয় না। কিন্তু শ্যুটিংটা তো আমার কাজ। অ্যাডজাস্ট তো করতেই হবে।

প্রশ্ন: আপনার প্রিয় অভিনেতা ও অভিনেত্রী কে?

ডোনা: আমার অলটাইম ফেভারিট শাহরুখ খান, আমার প্রাণ, আমার ‘জান’। আর অভিনেত্রী হিসেবে আমার দীপিকা পাড়ুকোনকে পছন্দ। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে আমার ছোটবেলার ক্রাশ দেব। এখনও সেই ভালবাসাটা আছে। তার সঙ্গে বড় হওয়ার পর যুক্ত হয়েছে আবির দা (আবির চট্টোপাধ্যায়), জিৎ দা। আর অভিনেত্রীদের মধ্যে চিরকালই আমার শুভশ্রীকে (শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়) ভাল লাগে।

প্রশ্ন: সম্প্রতি দেখা পছন্দের কোনও সিনেমা বা সিরিজ?

ডোনা: সিনেমা আমি শেষ দেখেছি শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’। ওটাই আমার রিসেন্ট ফেভারিট। সিরিজের মধ্যে ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’, ‘লুসিফার’ আমার ভাল লেগেছে। এমনিতে ভূতের সিরিজ বেশি দেখি আমি।

প্রশ্ন: বই পড়তে ভাল লাগে? প্রিয় লেখক কে? শেষ কোন বই বা লেখা পড়েছেন? 

ডোনা: আগে যখন সময় থাকত হাতে তখন বই পড়তে ভাল লাগত। আর এখন তো সবসময়েই পড়তে হয়, স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করতে হয়। বাড়ি গিয়ে বই পড়া হয় না। এমনিতে সুদীপ নাগারকরের উপন্যাস পড়তাম। ‘ফিউ থিংস লেফট আনসেড’ আমার পছন্দের। প্রেমের গল্প পড়তে ভাল লাগে আমার।

প্রশ্ন: অভিনেতা না হলে অন্য কোন পেশায় যেতেন? 

ডোনা: আমি এর আগে চাকরি করতাম। হসপিটাল ম্যানেজমেন্টে আমার স্নাতকোত্তর করেছি। এইচ আর, অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিক্যাল সুপার, ফ্লোর ম্যানেজার হিসেবে এর আগে কাজ করে এসেছি। অর্থাৎ অভিনয় না করলে একেবারে অন্য জগতের, অন্য পেশার মানুষ হতাম।

প্রশ্ন: যাঁরা অভিনয় জগতে পা রাখতে চাইছেন, নতুন, তাঁদের জন্য কী টিপস দেবেন?

ডোনা: মন থেকে অভিনয় করতে চাইলে, এটাই পেশা হিসেবে বাছতে চাইলে, বলব খুব মন দিয়ে নিজেকে তৈরি করতে হবে। মাথায় এটা রেখে দিতে হবে যে আমার দ্বিতীয় বাড়ি হবে আমার স্টুডিও। মনপ্রাণ ওখানেই দিয়ে দেব। নয়তো এখানে টেকা যাবে না। ওয়ার্কশপ করে নিজেকে তৈরি করতে হবে। এখানে এলে বাইরের জগৎ নিয়ে ভাবলে চলবে না, এটাই তখন একজন অভিনেতার জগৎ। মানুষ আমাকে চিনবে, তাঁদের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। এখানে খাটনি আছে, কিন্তু তার সঙ্গে লাভ হচ্ছে এত মানুষের ভালবাসা পাওয়া যাচ্ছে, এত মানুষ আমাকে চিনছেন। এটাই আমাদের পুরস্কার।

(Feed Source: abplive.com)