KIFF 2023 | Manoj Bajpayee: সিনেমা সেন্সরড হওয়া উচিত নয়, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে বিস্ফোরক মনোজ…

KIFF 2023 | Manoj Bajpayee: সিনেমা সেন্সরড হওয়া উচিত নয়, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে বিস্ফোরক মনোজ…

সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: চলছে ২৯ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। কিন্তু ২৯ বছরে এই প্রথম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে এলেন অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী। উৎসবে এসে অভিনেতা বললেন, এ বছর তিনি মাস্টার ক্লাসে এলেও পরের বছর ফেস্টিভ্যালে তিনি তাঁর ছবি নিয়েই আসতে চান।

কেন এ কথা বললেন মনোজ? তাঁর মত, এটা আসলে ছবির সেলিব্রেশন, তাই এখানে কোনও ছবি নিয়েই আসা উচিত। তিনি বলেন, ‘এই চলচ্চিত্র উৎসব যেখানে নতুন প্রজন্মের অভিনেতা এবং পরিচালকরা বর্ষীয়ান অভিনেতা এবং পরিচালকদের সঙ্গে তাঁদের সিনেমার চিন্তাধারা ভাগ করে নেন, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিনেমার সংস্কৃতি এখান থেকেই শুরু’। অভিনেতার দাবি, ‘যখন এখানে প্রথম আমন্ত্রণ পাই, খুবই আনন্দিত হই এখানকার সিনেমার কালচারের জন্য। তাছাড়াও কলকাতাকে ভালবাসি আমি। বাঙালি খাবার খেতে ভালবাসি। আজকে যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এই রবীন্দ্রসদনে আমি অনেকবার নিজের নাটক মঞ্চস্থ করতে এসেছি। যখন দিল্লিতে থাকতাম তখন নাটকের জন্য অনেকবার কলকাতায় এই রবীন্দ্রসদনে এসেছি’।

কোন ধরনের ছবি দেখতে ভালোবাসেন মনোজ? অভিনেতার সাফ জবাব, তিনি হিন্দি ছবি খুব একটা দেখেন না। বাছাই করা কিছু বাংলা তামিল মালায়ালম এবং কন্নড় ছবি দেখেন। তাঁর মতে, যে ছবি তাঁর দেখা উচিত বলে তিনি মনে করেন, সেই ছবিই তিনি দেখেন। পাশাপাশি অভিনেতা জানান, ‘বলিউড’ শব্দটাতেই তাঁর আপত্তি আছে। তিনি বলেন, ‘বলিউড’ শব্দটা আসলে হলিউডের থেকে নকল করা। কিন্তু হিন্দিতে যে ছবি তৈরি হয়, তা কখনোই হলিউডের নকল নয়। আমাদের মতো নাচ গান প্রেমের ছবি তারা তৈরি করে না। আমাদের ছবির বরাবরই স্বাতন্ত্র্য আছে। তাই এই ইন্ডাস্ট্রির নাম কখনোই ‘বলিউড’ হতে পারে না।’

বলিউডের হিরোদেরও একহাত নেন মনোজ বাজপেয়ী। তিনি বলেন,’ষাট সত্তর কিংবা আশির দশকের নায়করা ছিলেন সমাজের প্রতিমূর্তি। অমিতাভ বচ্চন পর্দায় এসে দাঁড়ালে, দর্শক তাঁর মধ্যেই নিজেদের দেখতে পেতেন, কিন্তু এখন হিরোরা যেন এক একজন গ্রিক গড, তাঁদের সঙ্গে হয়তো দর্শকরা রিলেটই করতে পারেন না। অনেকেই আমাকে কিংবা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীকে জিজ্ঞেস করেন, তথাকথিত নায়কের চরিত্রে আমরা কেন অভিনয় করি না। আমার তো মনে হয়, আমরাই তথাকথিত নায়কের চরিত্রে অভিনয় করি, বাকিরা তো একেক জন যেন গ্রিক গড।’

সেন্সরশিপ নিয়ে মনোজ বলেন, ‘আমার মতে কোনও ছবিই সেন্সরড হওয়া উচিত নয়। ফিল্মমেকারদের তাঁদের ইচ্ছামতো ছবি বানাতে দেওয়া উচিত, দর্শকের বেছে নেওয়া উচিত– তাঁরা কোনটা দেখবেন আর কোনটা দেখবেন না।  আমি চাই, ফিল্মেমেকাররা এমন ছবি বানান যাতে সমাজের কোনও ক্ষতি না হয়। পরিচালকদের উপর যদি আমরা এই দায়িত্ব ছেড়ে দিই, তাহলে আমার মনে হয়, পরিচালকেরা অনেক বেশি দায়িত্ববান হয়ে উঠবেন।

এই সূত্রে ওটিটির প্রসঙ্গও তোলেন মনোজ। বলেন, ‘ওটিটি যখন প্রথম আসে তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, এই স্বাধীনতা নিয়ে পরিচালকেরা কী করবেন। ধীরে ধীরে অনেকেই কিন্তু ওটিটিতেও দায়িত্ববান হয়ে উঠেছেন। এখন তাঁরা জানেন, শিল্পের স্বাধীনতা কী ভাবে ব্যবহার করা উচিত। ওটিটিতে যদি কখনো সেন্সর আসে, তাহলে সেখানেই ওটিটি শেষ।

তিনি যোগ করেন, ‘তবে দর্শককে বেছে নিতে হবে, তাঁরা কী দেখবেন আর কী দেখবেন না। আমরা পরিচালককে বলতে পারি না, এটা বানান কিংবা এটা বানাবেন না। দর্শককেই বেছে নিতে হবে কোনটা তাঁদের জন্য ভালো।’ অভিনেতা আরও বলেন, ‘মানুষ যদি সত্যিই সিনেমা দেখে অনুপ্রাণিত হত তাহলে এতদিনে এই দেশ স্বর্গ হয়ে যেত। কারণ আমরা এরকম অনেক ছবি বানিয়েছি যা সমাজের জন্য খুবই উপকারী।’

তিনি কি সাম্যবাদে বিশ্বাসী?

অভিনেতা বলেন, ‘সাম্যবাদী বিশ্বাসী কিন্তু নিরপেক্ষ হওয়ার জন্য কোন ইজমে বিশ্বাসী হওয়ার দরকার নেই। ছোটবেলা থেকেই মায়ের স্ট্রাগল দেখেছি, আমার কাছে আমার মা-ই এমপাওয়ারমেন্টের মূর্তি।’

‘মাস্টার ক্লাসে’ হাজির হয়ে নিজের আরো অন্যান্য অনেক ছবির অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন মনোজ। কলকাতায় এসে উচ্ছ্বসিত মনোজ জানিয়ে দিলেন, কলকাতা থেকে তিনি বাংলার মানুষদের ভালোবাসা নিয়েই মুম্বইয়ে ফিরবেন। জানাতে ভুললেন না যে, কলকাতায় পা রেখেই তিনি খেয়েছেন কষা মাংস এবং সরষে মাছ।

(Feed Source: zeenews.com)