ব্রিগেড থেকে গীতার বাণী! পাঠের আগে গানে গানে নজরুলের কবিতা

ব্রিগেড থেকে গীতার বাণী! পাঠের আগে গানে গানে নজরুলের কবিতা
সঞ্চয়ন মিত্র ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: নানা দলের রাজনীতি, মিটিং-মিছিল। এসবের জন্য পরিচিত ব্রিগেড (Gita Path in Kolkata Brigade)। কিন্তু এই ডিসেম্বরে অন্য ছবি। এটা যে একেবারে অন্যরকম ব্রিগেড। কলকাতার একেবারে প্রাণকেন্দ্রে সেনাবাহিনীর মাঠে রাজনৈতিক স্লোগান নয়, শোনা হল গীতার বাণী। লক্ষ কণ্ঠে উচ্চারিত হল অর্জুন বিষাদযোগ থেকে সাংখ্যযোগের শ্লোক। শুধু সাধুসন্তরা নন, অসংখ্য সাধারণ মানুষ যোগ দিলেন রবিবারের গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে।

দিন দুয়েক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি।  শুক্রবার ব্রিগেডে প্রস্তুতি পর্ব খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও অন্য বিজেপি নেতারা। প্রধানমন্ত্রীরও আসার কথা ছিল এই দিন। যদিও শেষ মুহূর্তে বাতিল হয় প্রধানমন্ত্রীর সফর। সেই অর্থে সেরকম বড় কোনও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দেখা যায়নি এদিনের মঞ্চে। মূলত সাধুসন্ত এবং সাধারণ মানুষই ছিলেন এদিনের গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে। আর ছিলেন রাজ্যের প্রথম সারির বিজেপি (BJP) নেতারা।

এই প্রথম ব্রিগেডে অনুষ্ঠিত হল গীতা জয়ন্তীর অনুষ্ঠান। শোনা গেল সমবেত শঙ্খধ্বনি, হল নাম সংকীর্তন, পাঠের পরে হল আরতিও। দুটি মঞ্চ করা হয়েছিল গীতা পাঠের এই অনুষ্ঠানে। উঁচু মঞ্চে ছিলেন শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী (Swami Sadanand Saraswati)। তাঁরই সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দ্বৈতাপতি সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধুসন্তরা। তার সামনে একটু নীচুতে হয়েছিল একটি মঞ্চ, সেখানে হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে ভক্তিগীতির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। হয়েছে শোভাযাত্রা। হয়েছে কলস স্থাপন। তারপর হয়েছে বেদপাঠ। বেদপাঠের পরে শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতীকে মূল মঞ্চে বরণ করা হয়।

বাংলার বুকে গীতাপাঠের অনুষ্ঠান। আর সেই মঞ্চেই ধ্বনিত হয়েছে কাজি নজরুম ইসলামের কবিতার অংশ। কাজি নজরুল ইসলামের লেখা ‘শেষ সওগাত’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত পার্থসারথি কবিতাটি গানের আকারে পরিবেশন করা হয়। কবি নজরুলের গান শেষ হতেই শুরু হয় লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠান। পাঠ করা হয় গীতার ৫টি অধ্যায়।

সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়, স্বপন দাশগুপ্তর মতো বিজেপির নেতানেত্রীরা গীতাপাঠে অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথাগত রায়, এসেছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও।

এই দিন ব্রিগেডে গীতাজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মধ্যমণি ছিলেন দ্বারকার শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী। তিনি বলেন, ‘আসল ভারতীয় কে? নকল ভারতীয় কে? এই ভেজালই আমাদের দুর্বলতা। কোনও ভেজাল থাকা উচিত নয়। যে ভারতীয় সংস্কৃতি দেশজুড়ে ব্যাপ্ত, তার নাম সনাতনী হিন্দু সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি দেশের সবাইকে আদর দিয়েছে।’ এদিনের অনুষ্ঠান থেকে সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের বার্তাও উঠে আসে। কিছু অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষকেও গীতাপাঠে অংশ নিতে দেখা যায়। অনুষ্ঠানে আসতে না পারলেও, এদিন লিখিত শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই আয়োজনকে প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

(Feed Source: abplive.com)