দিদি লতার পদচিহ্ন অনুসরণ করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন আশা ভোঁসলে। কিশোরী আশা বয়সে প্রায় দ্বিগুণ লতার সেক্রেটারির হাত ধরে পালিয়েছিলেন! ৩১ বছরের গণপত ভোঁসলের সঙ্গে ছোট বোন আশার অসম বয়সী বিয়ে মেনে নিতে পারেননি লতা। মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয় দুজনের।
উচ্চবংশীয় স্বামীর সঙ্গে আশার সংসার খুব বেশি সুখের হয়নি। তবে আশার মিউজিক্যাল কেরিয়ারের পিছনে গণপত ভোঁসলের অবদান অনস্বীকার্য। প্রথম সন্তান হওয়ার পরে আশা প্লে-ব্যাক ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন, তাঁর সুপারস্টার স্ত্রীকে গান গাইতে একপ্রকার বাধ্য করতেন গণপত। দাম্পত্য হাজারো ওঠাপড়া সত্ত্বেও শুরুতে হাল ছাড়েনি আশা। তাই আজকাল অতি সহজেই সম্পর্ক ভাঙতে দেখে খানিক বিস্মিত হন আশা ভোঁসলে। আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবি শঙ্করের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপট আশা তাঈ।
কিংবদন্তি শিল্পী বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৯০। আমি বিয়ে করেছি, আমার তিন সন্তান হয়েছে। যখন বিয়ে টিকিয়ে রাখা মুশকিল মনে হত, ছেলেমেয়েদের নিয়ে মায়ের কাছে চলে যেতাম। কিন্তু কোনওদিন ডিভোর্স ফাইল করিনি। কিন্তু আজকাল প্রতি মাসেই শুনি ডিভোর্সের কথা। এটা কেন হচ্ছে?’ আশার প্রশ্ন শুনে গুরুজি বলেন, ‘আজকের প্রজন্ম বড্ড বেশি আত্ম-কেন্দ্রিক এবং চট জলদি সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্বাসী’।
আশা অকপটে বলেন, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ আট দশক কাটিয়েছেন তিনি, কিন্তু আগের জেনারেশন এখনকার প্রজন্মের মতো হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্বাসী নয়। ভালোবাসা এখন দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, আক্ষেপ আশার। এতে গুরু শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর পালটা জানান, ‘আসলে অনেক সময় আকর্ষণকে ভালোবাসা বলে মানুষ ভুল করে… মানুষ সংবেদনশীলতা হারিয়েছে’।
আজকাল মেয়েরা সন্তানের জন্ম দিতে ভয় পাচ্ছে। মেয়েদের কাছে সন্তান ‘বোঝা’ হয়ে গিয়েছে, জানান আশা। নিজের উদাহরণ টেনে বলেন, সংসার, কেরিয়ার সামলানোর পাশাপাশি তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি, তাঁদের মানুষ করেছেন। আশা বলেন, ‘এখন মানুষভাবে বাচ্চা হলে তাঁদের জীবনে সমস্যা বাড়বে’।
তৃতীয়বার সন্তান সম্ভবা থাকার সময় পাকাপাকিভাবে প্রথম স্বামীর ঘর ছেড়েছিলেন আশা ভোঁসলে। ১৯৬০ সালে আলাদা হন দুজনে। ৬ বছর পর মৃত্যু হয় গণপত ভোঁসলের। আইনি বিচ্ছেদ হয়নি তাঁদের। এরপর ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন কিংবদন্তি গায়িকা। বয়সে ছোট আরডি বর্মনকে বিয়ে করেছিলেন শিল্পী। বাঙালি বাড়ির পুত্রবধূ হয়েছিলেন। আরডি বর্মনেরও এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। একসঙ্গে কাজের সূত্রেই তাঁদের ঘনিষ্ঠতা। তবে শেষজীবনে আশার সঙ্গে থাকতেন না আরডি বর্মন।
(Feed Source: hindustantimes.com)