নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে দীর্ঘ ৫ বছর পর আজ বরিশাল সফরে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় বিমানে বরিশালের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। বিকেল ৩ টায় নগরীর ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
ইতিমধ্যে সভাস্থলে মঞ্চ তৈরির পাশাপাশি সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তার আগমনকে কেন্দ্র করে বিভাগের সকল জেলা-উপজেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার বলেন, নেত্রী আসবেন এটি আমাদের জন্য বিরাট পাওয়া। তাকে বরণ করতে গোটা বিভাগের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ উদগ্রীব হয়ে আছেন।
ইতিমধ্যে সমাবেশস্থল প্রস্তুত করা হয়েছে। সমাবেশে কমপক্ষে ১০ লাখ লোকের সমাগমের টার্গেট আমাদের। নেত্রীর আগমনের খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ, তাতে ধারণা করা হচ্ছে ১০ লাখেরও বেশি লোক সমাবেশে যোগ দেবেন।
তিনি জানান, জুমার নামাজের পর আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু হবে। বিকেল ৩ টার মধ্যে সমাবেশের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে উঠবেন।
এতে সভাপতিত্ব করবেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। সঞ্চালনা করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
এছাড়া আরও বক্তব্য দেবেন- ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম ও বরিশাল সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ।
জনসভার সঞ্চালক বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস জানান, ৩ টি স্তরে সমাবেশস্থল করা হয়েছে। প্রথম স্তরে প্রধান অতিথির মঞ্চ। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও তার সাথে বরিশালের নৌকা প্রার্থীরাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বসবেন।
দ্বিতীয় স্তরে থাকবেন বরিশাল বিভাগ ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ। তৃতীয় ধাপে নেতাকর্মীদের নারী ও পুরুষের ২ টি ভাগে ২০ হাজার চেয়ার রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফর কমিটির সমন্বয়ক বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ জানান, নেত্রীর আগমনকে ঘিরে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের কারণে সর্বস্তরের জনগণ এ জনসভায় আসবেন এবং জনসভা সাফল্যমণ্ডিত করবেন বলে মনে করি।
তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মুড়ে দেওয়া হয় সমাবেশস্থল। সেই সাথে বাড়তি নজরদারি ছিল নগরীতে। তার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রশাসনের সবগুলো ইউনিটের হাইভোল্টেজ টিম কাজ করেছে।
পাশাপাশি বরিশাল নগরীর দেয়াল, সড়ক, ড্রেন সংস্কারে ছিল বাড়তি তোড়জোর। এছাড়া নগরীর প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য সব চলার পথ পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় মাইকিং, লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে এবং সভা করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন জানান, বরিশাল বিভাগের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যা করেছেন, অতীতের কোনো সরকার তা করেনি।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি শিশুদের চিঠি পেয়ে পায়রা নদীতে সেতু নির্মাণ করছেন।
আজ সেই মানুষটি আমাদের বরিশালে আসছেন, তা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা বরিশালের সর্বকালের সর্ববৃহৎ নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে নগরী ৪ স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী করা হয়েছে।
কাজ করছে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, টহল পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নগরীতে টহল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় যোগ দেন। ৫ বছর পর এবারও তিনি নির্বাচনী সভায় যোগ দিতে আসছেন। চলতি বছরের মার্চে প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফরের কথা থাকলেও পরে তা স্থগিত করা হয়।
(Feed Source: sunnews24x7.com)