গরমের র‍্যাশও কোভিডের উপসর্গ হতে পারে, অজানা লক্ষণ কি আপনার শরীরেও

গরমের র‍্যাশও কোভিডের উপসর্গ হতে পারে, অজানা লক্ষণ কি আপনার শরীরেও

#নয়াদিল্লি: মাঝে কেটে গিয়েছে দু’বছর। কিন্তু এখনও করোনা-কাঁটা কাটিয়ে পারেনি বিশ্ববাসী। ২০২২ সালের নতুন বছরে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ আশা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেও কোভিড-১৯-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের আতঙ্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। ইতিমধ্যে আবার কিছু দেশে চতুর্থ ঢেউও শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও বর্তমানে দেশে তথা আমাদের রাজ্যে করোনার গ্রাফ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু করোনার গ্রাস থেকে এখনো পুরোপুরি রেহাই মেলেনি। আবার সময়ের সঙ্গে করোনা ভাইরাসের বিষয়ে আরও নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। বিভিন্ন মানুষের শরীরে এই মারণ ভাইরাস ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করছে। তাই কোভিডের উপসর্গে ক্ষেত্রে সকলের জন্য কোনও একটি নির্দিষ্ট নিয়ম প্রযোজ্য নয়।

আসলে কোভিড মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকেই অনেক উপসর্গ সামনে এসেছে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাথাব্যথা, জ্বর এবং গলা ব্যথার মতো সাধারণ লক্ষণ দেখা গিয়েছে। আবার নির্দিষ্ট কোনও ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে কিছু মানুষের যেমন গন্ধ এবং স্বাদ চলে যাওয়ার মতো লক্ষণ ছিল। তবে গবেষণায় কোভিড সংক্রমণের আরও কিছু অস্বাভাবিক উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে কোভিডে যেগুলি অবহেলা করলে চলবে না। এই ধরনের লক্ষণগুলি দ্রুত সনাক্ত করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপসর্গগুলির কারণে হওয়া শারীরিক সমস্যাগুলির যত দ্রুত চিকিৎসা করা হবে ততই রোগীর পক্ষে ভালো।

ত্বকে র‍্যাশও কোভিডের লক্ষণ?
ত্বকে কোভিড সংক্রমণের প্রভাব পড়া নতুন কিছু নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় ধরা পড়েছে যে পাঁচজন কোভিড রোগীর মধ্যে একজনের কোভিড সংক্রমণের কারণে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা হয়। শুধু তাই নয়, গবেষণায় এই তথ্যও উঠে এসেছে যে যাদের কোভিডের জন্য ত্বকে সমস্যা হয় তাদের বেশিরজনের ত্বকে বিবর্ণতা দেখা যায়। কিছু মানুষের চুলকানিও হয়। আবার ২০২০ সালের একটি স্প্যানিশ গবেষণায় করোনাভাইরাস থেকে হওয়া ত্বকের সমস্যাকে ফুসকুড়ি সহ পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হামের মতো ভাইরাল সংক্রমণে হওয়া ত্বকে লালচে দাগ, ফুসকুড়ি, ফিশনেটের ফুসকুড়ি, ফোসকার মতো ফুসকুড়ি এবং পায়ের আঙ্গুলে ‘কোভিড টো’ নামে মতো ফ্রস্টবাইটের মতো ফুসকুড়ি। সেক্ষেত্রে সারা শরীরে র‌্যাশ কিংবা শরীরের কোনও জায়গায় লাল ফুসকুড়ি, চুলকানি বা জ্বালাভাব থাকলে তা কোভিড সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে। এমনকী কোভিডের মৃদু উপসর্গগুলির মধ্যে ত্বকের র‌্যাশ অন্যতম ধরা হয়। এক্ষেত্রে সংবেদনশীল ত্বকে আরও বেশি প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে,কোভিডের র‌্যাশ হঠাৎ করে শরীরের যে কোনও অংশে হতে পারে। তাই আচমকা ত্বকে কোনও অস্বাভাবিকত্ব খেয়াল করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কোভিড নখই বা আদতে কী?
আমরা ভাবতেও পারি না যে ফুসফুসের কোনও রোগ নখের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। আসলে কোনও সংক্রমণে আমাদের শরীরে বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কোভিডের কারণে নখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধা পায় এবং অস্বাভাবিক প্রোটিনের উৎপাদনের ফলে কোভিড রোগীর নখ আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়। কিছু মানুষের নখ আবার অর্ধ-চাঁদের মতোও দেখতে হয়। সেক্ষেত্রে কোভিড সংক্রমণের পরের দিন কিংবা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নখের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে। আবার প্রাথমিকভাবে নখগুলিতে ব্যথাও হতে পারে। তবে বেশিরভাগ মানুষের নখই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

চুল পড়ার জন্যও দায়ী করোনা?
যদিও চুল পড়ার পিছনে বিভিন্ন শারীরিক কারণ থাকতে পারে, তবে কোভিডের কারণেও চুল পড়ার বিষয় এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। আসলে দুশ্চিন্তা, দূষণ, অস্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং বাহ্যিকভাবে রাসায়নিক দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্যে চুল পড়তে পারে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কোভিডের পরে ৫০% মানুষ চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। এপ্রসঙ্গে ৬,০০০ জন মানুষের উপরে করা একটি পরীক্ষার ভিত্তিতে এই তথ্য উঠে এসেছে যে শরীরে কোভিড সংক্রমণ বেশি হলে চুল পড়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়।

শ্রবণশক্তিও কমে যায়, কানে তালা ধরে?
কোভিডের কারণে টিনিটাস এবং শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার ঘটনাও দেখা গিয়েছে। যদিও এই ঘটনার সংখ্যা কম হলেও অন্যান্য অঙ্গের মতো কানে কোভিডের প্রভাব পড়ে বলে গবেষণায় দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেকের না হলেও কারও এই সমস্যা হতেই পারে। দেখা গিয়েছে, যাঁদের কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার আগে শ্রবণের সমস্যা ছিল না তাঁদেরও এক্ষেত্রে বেশ সমস্যা দেখা গিয়েছে।

Published by:Debalina Datta

(Source: news18.com)