মহারাষ্ট্র পুলিশের কনস্টেবল লিঙ্গ পরিবর্তন করে এখন ‘বাবা’, কে এই ললিত সালভে

মহারাষ্ট্র পুলিশের কনস্টেবল লিঙ্গ পরিবর্তন করে এখন ‘বাবা’, কে এই ললিত সালভে

এখন তিনি ললিত সালভে। মহারাষ্ট্র পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকুরিরত। বেশ সাদামাটা মনে হলেও, গল্পটা আদৌ অতটা সহজ নয়! আসলে তিনি ছিলেন মহিলা। নাম ললিতা সালভে। লিঙ্গ পরিবর্তন করে সে এখন পুরুষ। আর তিনিই হলেন বাবা। ৩৬ বছর বয়সী ললিত ২০২০ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। আর চলতি বছরে জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ তিনি পুত্র সন্তানের বাবা হন। বর্তমানে তিনি এখন পিতৃত্বের সুখ উপলব্ধি করছেন।

ললিত বলেন, ‘নারী থেকে একজন পুরুষ হওয়ার আমার এই যাত্রা মোটেই সহজ ছিল না। ভয়ঙ্কর সব সংগ্রামে পূর্ণ ছিল। আমি ধন্য, যারা আমাকে আমার এই কঠিন সময়ে সমর্থন করেছেন। আমার স্ত্রী সীমা একটি সন্তানের কামনা করেছিল… আমি খুশি যে আমি এখন বাবা হয়েছি। আমার পরিবারও ভীষণ খুশি।’

উল্লেখ্য, নারী থেকে পুরুষ হওয়ার হওয়ার লড়াই অবশ্য শুরু হয়েছে অনেক বছর আগে থেকেই। ১৯৯৫ সালে যখন ললিতা, ললিত হয়ে ওঠেনি। তখন তাঁর বয়স সাত বছর। সেই সময় চিকিৎসক একটা গণ্ডগোল করে বসেন। ললিতার (পড়ুন ললিত) শরীরের অপরিণত অণ্ডকোষকে টিউমার হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি। অস্ত্রোপচার করে তা বাদ দিয়ে দেওয়া হয় শরীর থেকে। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ললিতার আত্মপরিচয়ের সঙ্কট বাড়তে থাকে। ক্রমশ বাড়তে থাকে পুরুষ হওয়ার আকাঙ্খা। পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু সমাজ তাঁর ইচ্ছেকে মর্যাদা দেয়নি। ২০১৭ সালে ললিতা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার করবেন। সেপ্টেম্বরে একমাসের ছুটির জন্য আবেদন জানান। কিন্তু, তাঁকে ছুটি দেওয়া দূরের কথা, চাকরি ছেড়ে দিতে বলা হয়।

এরপর আদালতের শরণ নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না মহিলা কনস্টেবলের। তিনি বম্বে হাইকোর্টে মামলা করেন। আদালত একটি মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে দেয়। সেই বোর্ডে ছিলেন একজন করে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, রেডিওলজিস্ট, প্লাস্টিক সার্জন, ইউরোলজিস্ট, মনোবিদ। বোর্ডে রাখা হয় একজন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ও এক চিকিৎসককে। বোর্ড পরীক্ষা করে দেখে, ললিতার (পড়ুন ললিত) শরীরে পুরুষের জিন রয়েছে। তাঁকে লিঙ্গ পরিবর্তনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। শেষমেশ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ললিতাকে অস্ত্রোপচারের লিখিত অনুমতি দেন, মঞ্জুর হয় ছুটিও। এরপরই কনস্টেবল ললিতা (পড়ুন ললিত) সালভে মুম্বইয়ের সেন্ট জর্জ হাসপাতালে লিঙ্গ পরিবর্তন করেন। আর এখন তিনি একজন সুখী বাবা ও স্বামী।

(Feed Source: hindustantimes.com)