মোদী জমানায় কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিনক্ষণ পরিবর্তন করে ১ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে। এর আগে বহু দশক ধরেই দেশের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হত ফেব্রুয়ারির শেষ দিনে। তবে ২০১৭ সালে সেই প্রথা ভেঙে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিনে বাজেট পেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। পরবর্তীতে নির্মলা সীতারামন সেই নয়া প্রথা অব্যাহত রেখেছেন। আর এরই সঙ্গে প্রতি বছর ৩১ জানুয়ারি পেশ হয় দেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা। তবে এবছর পেশ হবে না অর্থনৈতিক সমীক্ষা। কিন্তু কেন? আসলে এবছরের বাজেট অন্তরবর্তীকালীন। নির্বাচনের পরে ফের পূর্ণ বাজেট পেশ করা হবে। এই পরিস্থিতিতে আজ, ৩১ জানুয়ারি পেশ করা হবে না অর্থনৈতিক সমীক্ষা।
প্রসঙ্গত, বাজেটে পেশের ঠিক একদিন আগে অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়ে থাকে। আদতে অর্থনৈতিক সমীক্ষাকে একটি প্রাক-বাজেট নথি হিসেবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। এটি তৈরি করেন অর্থ মন্ত্রকের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের আধিকারিকরা। প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানে সমগ্র সমীক্ষার কাজটি সম্পন্ন হয়। যেদিন বাজেট অধিবেশনের সূচনা হয়, সেদিন সংসদের উভয় কক্ষে উপস্থাপন করা হয় এই নথি। এই নথির মাধ্যমে গত অর্থবর্ষে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। কোথায় পরিবর্তন, নজরদারি প্রয়োজন সেই সম্পর্কেও একটি ধারণা পায় সরকার। এছাড়া পরবর্তী অর্থবর্ষের জন্য বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে এই অর্থনৈতিক সমীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, ভারতে ১৯৫০-৫১ সালে প্রথমবার অর্থনৈতিক সমীক্ষা হয়েছিল। সেই সময়ে এটি বাজেট নথিরই একটি অংশ ছিল। পরে ১৯৬০-এর দশকে অর্থনৈতিক সমীক্ষাকে বাজেট নথির থেকে আলাদা করা হয়। কেন্দ্রীয় বাজেটের ঠিক এক দিন আগে এটি পেশ করা শুরু হয়।
এদিকে এবছর অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ না হলেও গত ২৯ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার ‘ভারতীয় অর্থনীতি – একটি পর্যালোচনা’ সূচক রিপোর্ট পেশ করে। এই রিপোর্টে বিগত ১০ বছরে ভারতের অর্থনীতির অগ্রগতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কার্যত মোদী জমানায় ভারতীয় অর্থনীতির হাল হকিকত তুলে ধরা হয়েছে এই রিপোর্টে। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে ভারত ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে। এবং ২০৩০ আসতে আসতে ভারত ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে পারে। এদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৭.২ শতাংশ থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে। এদিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার এই সময়কালে ৩ শতাংশ হবে। এই নিয়ে টানা তিনবছর ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের গণ্ডি ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
(Feed Source: hindustantimes.com)