ভূমি পেডনেকরের দক্ষ অভিনয়, ‘ভক্ষক’ দর্শককে নাড়িয়ে দেয়, ভাবতে বাধ্য করে!

ভূমি পেডনেকরের দক্ষ অভিনয়, ‘ভক্ষক’ দর্শককে নাড়িয়ে দেয়, ভাবতে বাধ্য করে!

নয়াদিল্লি: কিছু ফিল্ম তৈরি হয় কেবলমাত্র মনোরঞ্জনের জন্য। কিছু তৈরি হয় অর্থ উপার্জনের জন্য। কিছু ছবি কেন তৈরি হয়েছে তাই বোঝা যায় না। কিন্তু এমন কিছু ছবি তৈরি হয় যা দেখতে দেখতে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। আপনি আনচান করতে শুরু করবেন, কখনও রাগ হবে, আপনি যা দেখে ভাবতে বাধ্য হবেন যে এ কেমন ধরনের সমাজে বসবাস করছি আমরা। এখানে তো পশুরা সত্যিই মানুষের থেকে অনেক ভাল। এরকমই একটি সিনেমা ‘ভক্ষক’ (Bhakshak Review)। এই ধরনের ছবি তৈরির জন্য সাহসের প্রয়োজন পড়ে এবং সেই ছবি দেখার জন্য অধিক ক্ষমতার প্রয়োজন হয়।

ছবির কাহিনি

এই ছবির গল্প মূলত একটি শেল্টার হোমকে কেন্দ্র করে যেখানে নাবালিকাদের সঙ্গে দুষ্কর্ম হয়ে থাকে। উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরপুরে এই ধরনেরই একটি ঘটনা ঘটেছিল তবে এই ফিল্মে জায়গার নাম বদলে দেওয়া হয়েছে। এখানে স্থানের নাম রাখা হয়েছে মুনাওয়ারপুর। ইউটিউব চ্যানেল চালান এক সাংবাদিক বৈশালী সিংহ। একদিন অর্ধেক রাতে তিনি সূত্র মারফৎ এই খবর দেন। যে খবরে সরকার একেবারে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন। ন্যায় বিচার পাওয়ার কোনও উপায় নেই সেখানে। এমন পরিস্থিতিতে বৈশালী ও তাঁর মধ্যবয়সী চিত্রসাংবাদিক ভাস্কর সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন যে ন্যায়ের জন্য লড়াই করবেন। বলাই বাহুল্য বৈশালীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভূমি পেডনেকর (Bhumi Pednekar) ও ভাস্করের চরিত্রে সঞ্জয় মিশ্র (Sanjay Mishra)। কীভাবে লড়াই করলেন তাঁরা? বৈশালী কি এই ন্যায়ের লড়াইয়ে জয়লাভ করতে পারলেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য এই দুর্দান্ত সিনেমা আপনাকে দেখতে হবে নেটফ্লিক্সে।

কেমন হয়েছে এই ছবি?

প্রথম দৃশ্য দেখেই মনে হবে যে গোটা সিনেমা দেখে ওঠা সম্ভব হবে না। পুরো নাড়া দিয়ে যাবে আপনাকে এই দৃশ্য কিন্তু মানবিকতা কতটা নিচে নামতে পারে এবং তার থেকে ন্যায় কীভাবে পাওয়া যায়, সেই আকর্ষণেই গোটা ছবি দেখতে ইচ্ছা করবে। এই ছবিটি অত্যন্ত ভালভাবে গবেষণা করে তৈরি। অভিনেত্রীর বাছাই অত্যন্ত ভাল। ছবির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে একজন সাংবাদিক ও একজন গৃহবধূর চরিত্রে ভূমি পেডনেকরের সাবলীল অভিনয়। কোনও দৃশ্য অপ্রয়োজনীয় মনে হবে না। এই ফিল্ম চমকে দেবে, ভয় ধরাবে এবং নাড়িয়ে দেবে দর্শককে।

অভিনয়

ভূমি পেডনেকর যেন এই ধরনের ছবির জন্যই তৈরি। তিনি আগে অভিনেত্রী পরে একজন তারকা। এবং এই ছবিতে তাঁর অভিনয়ের কাছে তাবড় তারকারাও বিবর্ণ হয়ে যাবেন। ভূমি যেন এই চরিত্রের মোড়কে নিজেকে মুড়িয়ে নিয়েছেন পুরোপুরি। শাহরুখ খানের প্রযোজনা সংস্থা ‘রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট’-এরও প্রশংসা প্রাপ্য কারণ এই চরিত্রের জন্য তাঁরা ভূমিকে বেছেছেন, কারণ এর থেকে ভাল আর কেউ হতেই পারতেন না। তাঁকে দেখে বোঝা যাবে যে অভিনয় কাকে বলে, আর অভিনয় কীভাবে করতে হয়। সঞ্জয় মিশ্র প্রত্যেকবারের মতোই দুর্দান্ত। মধ্যবয়সী চিত্র সাংবাদিকের চরিত্রে তিনি অত্যন্ত নিপুণ। আদিত্য শ্রীবাস্তবের অভিনয়ও প্রশংসনীয়। বংশী সাহুর চরিত্রে তিনি প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন। সাই তমহনকর ও সূরিয়া শর্মার অভিনয়ও দারুণ। বাকি শিল্পীরাও নিজেদের চরিত্রে যথাযথ।

পরিচালনা

পুলকিত এই ছবি খুবই দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করেছেন। ছবির মূল বিষয়ে পৌঁছতে বেশি সময় নষ্ট করা হয়নি এবং বিষয়ের গাম্ভীর্যের সঙ্গেই ফিল্মটা তৈরি করা হয়েছে। এই ছবি একদম সঠিক স্থানে আঘাত করে এবং সজোরে আঘাত করে এবং এই ধরনের ছবি ‘হার্ড হিটিং’ না হয় তাহলে তা তৈরির কোনও মানে থাকে না।

সব মিলিয়ে এই ছবি দেখা উচিত, সকলের দেখা উচিত এবং অবশ্যই দেখা উচিত।

(Feed Source: abplive.com)