মেদ ঝরানোর তাগিদে কঙ্কালসার হাল, খেয়েই বমি করা? Eating disorder সামলাতে কী করবেন?

মেদ ঝরানোর তাগিদে কঙ্কালসার হাল, খেয়েই বমি করা? Eating disorder সামলাতে কী করবেন?

পায়েল মজুমদার, কলকাতা: চোয়ালের ধারটা (jaw line) স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে? হাতদুটো কি বেশিই চওড়া? জিনস কেন এত ‘টাইট’হচ্ছে? তা হলে কি…? আয়নায় দাঁড়িয়ে চেহারার চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন না এমন মানুষ হাতে গোনা। কিন্তু এর পর যেটা হয়, সেটা এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। কেউ কেউ বিশ্লেষণটুকুতেই ক্ষান্ত দেন, কারও আবার লক্ষ্য থাকে বাড়তি মেদ (Weight Control) ঝরিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু এই মেদ ঝরিয়ে ছিপছিপে (Body Image) হয়ে থাকার বাসনা মাত্রা ছাড়ালে যে ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে, সেটা খেয়াল রাখি তো? মনোবিদদের বক্তব্য, এসব ক্ষেত্রে মর্মান্তিক পরিণতির নেপথ্যে খলনায়ক হয়ে ওঠে Eating disorder।

Eating disorder কী?
উদাহরণ দিয়ে শুরু করা যাক। এক সন্তানসম্ভবা যুবতী মনোবিদের কাছে এলেন। কেন? মাতৃত্বকালীন সময়ে যে ভাবে ওজন বাড়ছে, তা যদি সন্তানজন্মের পরও আর না কমে কী হবে? বিষয়টি শুধু চিন্তাভাবনার স্তরে ছিল না। গর্ভস্থ সন্তানের স্বাস্থ্যের কথা না ভেবে যথাসম্ভব কম খাওয়াদাওয়া চালিয়ে যেতেন তিনি। ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট সুদীপা বসু বললেন,  ‘প্রেগন্যান্সির সময়ে ওজন বাড়বে, এটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু ওঁকে বোঝানো ভীষণ কঠিন হয়ে পড়েছিল।’ অভিজ্ঞতা থেকে কিছুটা একই কথা বললেন ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক সুজিত সরখেল। ‘কয়েকদিন আগেকার ঘটনা। কোনও অবস্থাতেই খাওয়াদাওয়া করবে না, এমন একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। হাসপাতালের ওয়ার্ডে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে যদি বা তাকে খাওয়ানো গেল, তার পর পরই সে হয় কিছুটা হেঁটে বা খানিক দৌড়ে নেবে। লক্ষ্য স্পষ্ট, কোনও মতে ওজন বাড়তে দেওয়া যাবে না।’ 
ঘটনা হল, আমাদের আশপাশে এমন অনেক স্বাস্থ্য-সচেতন মানুষ রয়েছেন যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে সচেতন। তা হলে কী ভাবে বোঝা সম্ভব যে তাঁদের মধ্যে কেউ Eating disorder-র শিকার কিনা? কোন সে লক্ষণরেখা যা পেরোলে সতর্ক হওয়া দরকার? সে জন্য একবার জেনে নেওয়া যাক বিষয়টি ঠিক কী। সাধারণ ভাবে দেখা গিয়েছে, এই সব ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি 

    • খাওয়াদাওয়া নিয়ে এমন আচরণ করেন যাতে খাবারের সঙ্গে তাঁদের যে স্বাভাবিক সম্পর্ক তা পাল্টে যেতে থাকে
    • মোটেও বিচ্ছিন্নভাবে ‘ডায়েটিং’  বা ‘ ওভারইটিং’ করেন না
    • শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়তে পারেন 

Anorexia Nervosa: ভয়ঙ্কর কম খাওয়াদাওয়া এই Eating disorder-র অন্যতম লক্ষণ। শরীর সচল রাখতে ন্যূনতম যতটুকু শক্তি প্রয়োজন, এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ততটুকু খাওয়াদাওয়াও করতে চান না। তাঁদের মধ্য়ে ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে অস্বাভাবিক উদ্বেগ কাজ করে। খাওয়া কমানোর পাশাপাশি মাত্রাতিরিক্ত এক্সারসাইজ-ও করেন এঁরা। কঙ্কালসার চেহারা সত্ত্বেও তাঁদের নিয়ত মনে হতে থাকে, মেদ কমছে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে চেহারা দেখে বোঝা নাও যেতে পারে। যদিও ভয়ঙ্কর রকম অপুষ্টি এক্ষেত্রেও চেনা লক্ষণ। 

ওজন কমাতে Anorexia Nervosa-য় মাত্রাতিরিক্ত এক্সারসাইজ-ও করেন কেউ কেউ (প্রতীকী ছবি)

টানা চলতে থাকলে, ভয়ঙ্কর পরিণতির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, নিয়মিত কম খাওয়াদাওয়া একসময়ে কার্ডিয়াক ও রেসপিরেটরি সমস্য়া তৈরি করতে পারে, হাড় সরু হতে শুরু করে, পরিপাক-সংক্রান্ত শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম বদলে যেতে থাকে, চুল ঝরতে শুরু করে, দেহে হরমোনের মাত্রা উল্টেপাল্টে গিয়ে বন্ধ্য়াত্ব পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। এই ডিসঅর্ডার নিয়ে আলোচনা হলে ক্যারেন কারপেন্টারের কথা হয়তো অনেকেরই মনে পড়ে যাবে। বিখ্যাত মার্কিন গায়িকা ও ড্রামবাদক, ভাইয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে Carpenters নামে নিজেদের মিউজিক গ্রুপ তৈরি করেছিলেন। প্রায় গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দেয় তাঁদের গান। কিন্তু, বহু দিন পর্যন্ত অনেকেই জানতেন না, ক্যারেন Anorexia Nervosa-য় ভুগছেন। সবটা খোলসা হয় ১৯৮৩-র ফেব্রুয়ারি। মা-বাবার বাড়ি থেকে নিজের কিছু পুরনো জামাকাপড় আনতে গিয়ে ওয়াক-ইন ক্লসেট নেতিয়ে পড়েন ক্যারেন। সেই শেষ, আর ওঠেননি ৩২ বছরের যুবতী। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মৃত্যু হয় তাঁর। মর্মান্তিক পরিণতি না হলেও বিভিন্ন সময়ে Anorexia Nervosa-র সঙ্গে লড়েছেন এমন তারকার সংখ্যা নেহাত কম নয়। একবার চোখ বোলানো যাক সেই তালিকায়?

    • কেট মস
    • ভিক্টোরিয়া বেকহ্যাম
    • জেসিকা অ্য়ালবা
    • জেন ফন্ডা
    • ইসাবেল কারো (মৃত্যু পর্যন্ত হয়)

এই নামের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে এই সমস্যা শুধু হলিউডের, এমনও নয়। ২০১৬ সালের এপ্রিলে দিল্লি টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে একটি আলাপচারিতায় বলি-অভিনেত্রী রিচা চাড্ডাও বলেছিলেন, ‘Eating disorders are the best kept secret in the film industry’।  কার্যত একসুর শোনা গেল টলি-অভিনেত্রী তুহিনা দাসের কথায়। বছরখানেক ধরে মুম্বই নিবাসী তুহিনা বললেন, ‘এখানে দেখেছি, কারও ফোটোশ্যুট বা ফ্যাশন ramp-এ কোনও কাজ থাকলে, ইভেন্টের আগের দিন ওয়াটার ফাস্টিং, ড্রাই ফাস্টিং করে। অর্থাৎ সারা দিনে জল পান করেন না বা মাত্র দু-গ্লাস জল পান করেন। কেউ কেউ খাবারে একচুলও নুন খান না। দ্রুত রোগা, শুকনো দেখানোর জন্য এই সব কৌশল।’ স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন অভিনেত্রী জানালেন, ওয়ার্কআউট করে সুস্থ ও ফিট থাকার চেষ্টা তিনিও করেন। কিন্তু এই সব কৌশল শুনে আঁতকে উঠেছিলেন। 

অনেকের মনে পারে, এই সমস্যা হয়তো সে অর্থে সর্বজনীন সমস্যা নয়। কিছু নির্দিষ্ট অংশকেই প্রভাবিত করে। তাহলে একটু গবেষণার দিকে তাকানো যাক?  ২০২১ সালে  ‘কারেন্ট অপিনিয়ন ইন সাইকিয়াট্রি ‘ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় উঠে আসে, বিশ্বজুড়ে মহিলাদের ৪ শতাংশ ও পুরুষদের ০.৩ শতাংশ Anorexia Nervosa-য় ভোগেন। পুরুষদের নিরিখে মহিলাদের মধ্যে এই ধরনের ডিসঅর্ডার যে বেশি, সেটি অন্তত নিজেদের অভিজ্ঞতাতেও দেখেছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুজিত সরখেল ও মনোবিদ সুদীপা বসু। চিকিৎসক সরখেল আরও নির্দিষ্ট করে  জানালেন, সাধারণ ভাবে অল্পবয়সি কিশোরীদের মধ্য়ে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। যদিও ভারতে এই নিয়ে গবেষণা অত্যন্ত কম বলেই পর্যবেক্ষণ তাঁদের। আর এন টেগোর হসপিটালের, জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, অরিন্দম বিশ্বাসের অভিজ্ঞতা আবার বলছে, এই ধরনের সমস্যা মোটের উপর অনেকটাই পশ্চিমি। তাঁর কথায়, ‘মেদ ঝরানো নিয়ে এই মাতামাতি পশ্চিমের দেশগুলিতে অনেকটাই বেশি। আমাদের এখানে, ছিপছিপে শরীর পছন্দ করা হলেও সেই ধরনের শরীর পেতে মাতামাতি অতটা নেই। ‘

Eating Disorder জাতীয় উপসর্গ দেখলে কী করতে পারেন? খুঁটিনাটি


    • এটি একটি মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা। তাই চিকিৎসার জন্য মনোবিদ বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ দরকার।
    • বহু সময়ে, আক্রান্ত ব্যক্তি, সরাসরি মনোবিশেষজ্ঞের কাছে যান না। উপসর্গগুলি যেহেতু শারীরিক, তাই অনেকে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা গ্যাস্ট্রো-বিশেষজ্ঞের কাছেও গিয়ে থাকেন। অসুবিধা নেই। তাঁরা প্রয়োজন বুঝে আক্রান্ত ব্যক্তিকে

মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ নিশ্চয়ই দেবেন।

    • সরকারি হাসপাতাল যেখানে সাইকিয়াট্রি বিভাগ রয়েছে, সেখানে এর চিকিৎসা সম্ভব। তা ছাড়া বহু প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ বেসরকারি প্র্যাকটিশনারও রয়েছেন।
    • পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব কিনা, তার উত্তর প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা। তবে সঠিক চিকিৎসায় সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে, এটা জোরাল ভাবেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

Bulimia Nervosa: এটি আর এক ধরনের Eating disorder। তবে Anorexia Nervosa-র থেকে এটি বেশ কিছুটা আলাদা। এই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি,

Eating Disorder:মেদ ঝরানোর তাগিদে কঙ্কালসার হাল, খেয়েই বমি করা? Eating disorder সামলাতে কী করবেন?

প্রথমে Binge Eating, তার পর বাড়তি ক্যালরি ঝরাতে বমি করা, Bulimia Nervosa-র চেনা উপসর্গ (প্রতীকী ছবি)

    • প্রথমে তুমুল দ্রুততায় কোনও খাবার বিপুল পরিমাণে খেয়ে ফেলেন (Binge Eating) 
    • তার পর, ওই খাবার থেকে আসা ক্যালরি শরীর থেকে বের করতে হয় বমি বা বিভিন্ন ধরনের laxative (কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর ওষুধ) বা Diuretic (বেশি পরিমাণ মূত্র তৈরির দাওয়াই) ব্যবহার করেন
    • কেউ কেউ উপবাসও করতে পারেন, কেউ আবার বাড়াবাড়ি এক্সারসাইজে ভরসা করেন। 

গবেষণা জানাচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদে এর ভয়ঙ্কর পরিণতির আশঙ্কা রয়েছে। যেমন বমি করার জন্য এক ধরনের সিরাপ ব্যবহার করে থাকেন এই ধরনের রোগীরা। কিন্তু এই সিরাপ দীর্ঘদিন নিতে থাকলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে। বার বার বমি করায় তার জেরে নষ্ট হতে পারে দাঁত। দেহে নিয়মিত জলশূন্যতাও দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। চরম কিছু ক্ষেত্রে হার্ট মাসল বা হার্ট ভালভ কোলাপস করে যাওয়ার ভয়ও রয়েছে। সার্বিকভাবে, গোটা বিশ্বে এই ডিসঅর্ডার মহিলাদের মধ্যে বেশি দাপট দেখালেও পুরুষরা যে একদমই এর আওতার বাইরে তা নয়। পপ-স্টার স্যার এলটন জনের কথাই ধরা যাক। একসময়ে তিনিও এর শিকার ছিলেন। তবে মহিলাদের মধ্যে, এটির প্রবণতা বেশি। এবং শুধু হলিউড নয়, বলিউডেও কেউ কেউ এই সমস্যায় ভোগেন।  রিচা চাড্ডা যেমন নিজেই এই অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। 

Binge Eating Disorder
এটিও আর এক ধরনের Eating Disorder। এসব ক্ষেত্রে কিছুতেই খাওয়াদাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তবে Binge Eating Disorder ‘ডায়াগনসিস’-র জন্য ৬ মাস ধরে সপ্তাহে অন্তত দুবার এই ধরনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে খাওয়াদাওয়ার ঘটনা ঘটতে হবে। সঙ্গে আরও কিছু মানদণ্ড মিলে গেলে তবেই সেটিকে Binge Eating Disorder বলে চিহ্নিত করেন ডাক্তাররা। তবে নিজের ওজন নিয়ে হতাশা বা অপরাধবোধ এক্ষেত্রে ‘কমন’ লক্ষণ।

Eating Disorder:মেদ ঝরানোর তাগিদে কঙ্কালসার হাল, খেয়েই বমি করা? Eating disorder সামলাতে কী করবেন?খাওয়ার উপর কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ থাকে না Binge Eating Disorder-এ (প্রতীকী ছবি)

কেন হয়?
ভারতে Eating Disorder নিয়ে গবেষণা এখনও পর্যন্ত খুব একটা বেশি হয়নি, জানাচ্ছেন মনোবিশেষজ্ঞরা। তবে, নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে কয়েকটি বিষয় তাঁরা বার বার উঠে আসতে দেখেছেন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুজিত সরখেল যেমন মনে করেন,’বডি-ইমেজ নিয়ে এই সচেতনতা মূলত পশ্চিমি দুনিয়ায় দেখা গেলেও ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এখন তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। তাই বিশ্বের নানা প্রান্তে এই ছিপছিপে চেহারার প্রতি তাগিদ বেশি।’ মনোবিদ সুদীপা বসু এর সঙ্গে আবার bullying-র বিষয়টিও জুড়লেন। তাঁর কথায়,  ‘যে কটি রোগী দেখেছি, তাঁদের বেশিরভাগেরই অতীতে মেদবহুলতার জন্য খোরাক হওয়ার ইতিহাস রয়েছে। সেখান থেকে কারও কারও ক্ষেত্রে রোগা হওয়ার এই অসমঞ্জস তাগিদ তৈরি হয়।’ তবে শুধু আর্থ-সামাজিক বা মানসিক কারণ নয়।  যে কোনও ডিসঅর্ডারের মতো Eating Disorder-র নেপথ্যে কিছু শারীরবৃত্তীয় কারণও থাকতে পারে, মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। 

অতঃকিম?
এত রকম আশঙ্কার মধ্যেও আশার আলোটিও ক্ষীণ নয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সরখেল জানালেন, এর চিকিৎসা সম্ভব। প্রথমত, এই ডিসঅর্ডারের মধ্যে রোগা হওয়ার যে ‘অবসেশন’ কাজ করে, সেটা কমানোর জন্য ওষুধ রয়েছে। এছাড়া সাইকোথেরাপিও ভাল কাজ করে। সুদীপা আরও বললেন, ‘bully হওয়ার যে ইতিহাস থেকে এই রোগা হওয়ার অবসেশন তৈরি হয়, সেটি সাইকোথেরাপির মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব। কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি এক্ষেত্রে দারুণ কাজে দিতে পারে।’ 
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ডিসঅর্ডারে আক্রান্তরা অন্য কোনও সমস্যা, যেমন অবসাদ বা ওসিডি ইত্যাদি নিয়ে মনোবিশেষজ্ঞের কাছে আসেন। রোগনির্ণয়ের সময়ে ধরা পড়ে, তাঁদের Eating Disorder-ও রয়েছে।  অন্য কিছু সময়ে আবার নানা রকম হজমের সমস্যা নিয়ে মেডিসিন বা গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্টের দ্বারস্থ হন কেউ কেউ। সে সব ক্ষেত্রে তাঁদের প্রাথমিক পরামর্শ দিয়ে মনোবিশেষজ্ঞের কাছে পাঠিয়ে দেওয়াই শ্রেয়, জানালেন চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। তবে গোড়াতেই সতর্ক থাকলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব, এড়ানো সম্ভব মর্মান্তিক পরিণতি। 

(Feed Source: abplive.com)