‘রেশন তুলতে পারছি না, ব্যাঙ্কের টাকা তুলতে পারছি না’, ফের ‘আধার-বিভ্রাট’ জেলায় জেলায়

‘রেশন তুলতে পারছি না, ব্যাঙ্কের টাকা তুলতে পারছি না’, ফের ‘আধার-বিভ্রাট’ জেলায় জেলায়

গৌতম মণ্ডল, রানা দাস ও সমীরণ পাল, কলকাতা : ফের জেলায় জেলায় আধার-বিভ্রাট (  Aadhaar  ) । প্রতিদিনই তালিকায় নতুন নতুন জেলা যোগ হচ্ছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ( North 24 Pargana , South 24 Pargana ) , পূর্ব বর্ধমান, আধার লিঙ্ক নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি পেয়ে মাথায় হাত বাসিন্দাদের। যদিও আধার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনও আধার নম্বর (  Aadhaar Number )বাতিল করা হয়নি। কাকদ্বীপ, বাগদা থেকে পূর্বস্থলী, ফের আধারের গেরোয় চোখে আঁধার দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের, মতুয়া অধ্যুষিত পুরাতন হেলেঞ্চা গ্রামে, আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেশন চিঠি পেয়েছেন ৩৩ জন গ্রামবাসী। বাগদার বাসিন্দা শিপ্রা দাস বলেন, ‘ আমার আধার কার্ড হট করে বন্ধ হয়ে গেছে। এবার রেশন তুলতে পারছি না। ব্যাঙ্কের টাকা তুলতে গেছি, তুলতে পারছি না। খুব আতঙ্কে আছি ‘ । বাগদার  তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, ‘ আমার জানার মধ্যে ৩২-৩৩ জনের আধার কার্ড বাতিলের চিঠি এসেছে’ । তাঁর দাবি এঁরা সবাই মতুয়া।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপেও আধার-বিভ্রাটে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রতাপাদিত্যনগর, রামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দ, এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু বাড়িতে আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়েছে জানিয়ে চিঠি এসেছে। এর মধ্যে এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীও রয়েছেন। কাকদ্বীপের বাসিন্দা চম্পা দাস বলেন, তাঁর ছেলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তাঁর কলেজে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।

পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতেও  একই ছবি। আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেশনের চিঠি পেয়ে চিন্তায় ঘুম উড়েছে বেশ কয়েকজন বাসিন্দার। পূর্বস্থলীর বাসিন্দা শ্রাবণী দেবনাথ জানালেন, ‘ এটা পাওয়ার পর তো খুব ভয়ে আছি। আমার তো সব কিছুই আছে, কিন্তু কী করে আধার কার্ডটা বাতিল হল আমি বুঝতে পারছি না।’

আধারের এই সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন।  ‘আধার কার্ড নিয়ে তফশিলি ফেডারেশনও আমার কাছে চিঠি লিখেছে। বিভিন্ন তফশিলি জাতি, নমঃশূদ্র মানুষের, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের, এক ধরনের গরিব মানুষের তাঁদের আধার কার্ড, আমাদের না জানিয়ে রাজ্যকে, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে না জানিয়ে, ইভেন যাঁর কার্ডটা ডিঅ্যাক্টিভেটেড করে দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের একবার ফিজিকালিও জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করেনি। যেটা আধার কার্ডের প্রভিশন আছে, এবং কেন কাটা হচ্ছে সে জানতে পারছে না। মানুষ নিজেকে খুব অসহায় ভাবছে। এবং ভাবছে এভাবে চললে, তাঁরা আগামীদিন যদি যে সুবিধাগুলো তাঁরা ব্যাঙ্ক ড্রাফটের মধ্যে পায়, ডায়রেক্ট ব্যাঙ্ক বেনিফিটের মধ্যে পায়, তার থেকে তাঁরা বঞ্চিত হতে পারেন। ‘

যদিও আধার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনও আধার নম্বর বাতিল করা হয়নি। আধার তথ্য আপডেট করার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল UIDAI, কোনও অভিযোগ থাকলে তাদের পোর্টালে জানাতে হবে।

(Feed Source: abplive.com)