উচ্ছিষ্ট স্যান্ডউইচ খাওয়ায় চাকরি গেল মহিলার, সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঢেউ

উচ্ছিষ্ট স্যান্ডউইচ খাওয়ায় চাকরি গেল মহিলার, সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঢেউ

পরিষ্কার করতে করতে খিদে পেয়েছিল, স্যান্ডউইচ খেয়ে ফেলেছিলেন তাই, সেই অপরাধে মহিলা কর্মীর চাকরি কেড়ে নিয়েছে কোম্পানি। এরপরই কোম্পানির বিরুদ্ধে ফ্রন্ট খুলেছে ইউনিয়ন। মানুষ রাস্তায় নেমে তীব্র প্রতিবাদও শুরু করেছে। ওই মহিলা লন্ডনের ইকুয়েডরের বাসিন্দা। তিনি লন্ডনের একটি শীর্ষ আইন সংস্থায় ক্লিনার হিসাবে কাজ করতেন। সামান্য স্যান্ডউইচ খাওয়ার অভিযোগে মহিলার চাকরি হারানোর বিষয়টির প্রতিবাদ জানাতে লন্ডনের রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করেছে শ্রমিকদের সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়।

জানা গিয়েছে, টেবিলে রাখা উচ্ছিষ্ট স্যান্ডউইচ খাওয়ার কারণে গ্যাব্রিয়েলা রদ্রিগেজ চাকরি হারিয়েছেন। ইকুয়েডরের গ্যাব্রিয়েলা রদ্রিগেজ লন্ডনে টোটাল ক্লিন এজেন্সিতে কাজ করতেন। গত দুই বছর ধরে সলিসিটরস ডেভনশায়ারের সদর দফতর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব ছিল মহিলার, অতএব ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার প্রসঙ্গে মহিলা বলেছেন যে ক্রিসমাসের আগে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

  • সংস্থাটি মহিলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে

৩৯ বছর বয়সী সিঙ্গেল মা গ্যাব্রিয়েলা বলেছেন যে তাঁকে একটি ভুল কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি এর বিরুদ্ধে মামলা করার কথা ভেবেছেন৷ অন্যদিকে ওই মহিলার বক্তব্য অস্বীকার করে সংস্থাটি বলছে যে, ওই নারীর অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে চাকরির আইনের ভিত্তিতে। সংস্থাটি আরও বলেছে যে তিনি আইনজীবীদের দুপুরের খাবারের জন্য রাখা টুনা স্যান্ডউইচ খেয়েছিলেন তিনেক। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই স্যান্ডউইচের দাম ভারতীয় মূল্যে ১৫৬.৯১ টাকা অর্থাৎ ১.৫০ পাউন্ড। তাই তাঁকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে

ওই মহিলাকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার পর থেকেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে লন্ডনে। ঘটনার প্রতিবাদে শহরের শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে যে এইভাবে শ্রমিকদের সঙ্গে অবমাননাকর আচরণ করা হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন যে স্যান্ডউইচটি কিছুক্ষণ পরে নিশ্চিতরূপে ফেলে দেওয়া হত, আর এই উচ্ছিষ্ট খাবারটি খাওয়ার জন্য একজন কর্মীকে এইভাবে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।

আউটলেট অনুসারে, কর্মীদের সমর্থনকারী ইউনাইটেড ভয়েসেস অফ ওয়ার্ল্ড ইউনিয়ন (ইউভিডব্লিউ) দাবি করেছে যে ‘পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের তুচ্ছ বিষয়ে বরখাস্ত করা হয়। অনেকেই বলেন ‘তাঁরা যেহেতু ময়লা পরিষ্কার করেন’ তাই তাঁদের সঙ্গেও ময়লার মতো আচরণ করা হয় এবং গ্যাব্রিয়েলা এই আচরণেরই একজন। আমরা নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে একত্রিত হব – এমনকি ডেভনশায়ার সলিসিটরসের মতো বড় শক্তিশালী সংস্থাগুলিও এমন কাজ করে ছাড় পাবে না।’

গার্ডিয়ানের মতে, UVW যুক্তি দিয়ে জানিয়েছে যে রদ্রিগেজের অপসারণ একটি বৈষম্যমূলক কাজ। তিনি সীমিত ইংলিশ সহ ল্যাটিন আমেরিকান না হলে তাঁকে এইভাবে অপসারণ করা হতো না। ইউভিডব্লিউ একটি ‘জাস্টিস ফর গ্যাব্রিয়েলা’ ক্যাম্পেইনও শুরু করেছে।

আইন সংস্থাটি দাবি করেছে যে ডেভনশায়ার গ্যাব্রিয়েলার বিরুদ্ধে কোনও অফিশিয়াল অভিযোগ করেনি। এবং স্পষ্টভাবে টোটাল ক্লিনকে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য বলেছিল। টোটাল ক্লিন নিজস্ব কারণে গ্যাব্রিয়েলাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তটি নিয়েছিল। এটি টোটাল ক্লিন এবং গ্যাব্রিয়েলার মধ্যে একটি ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু আমরা টোটাল ক্লিনকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি যে টোটাল ক্লিন যদি গ্যাব্রিয়েলাকে কাজে ফিরিয়ে আনতে চায় – আমরা আপত্তি করব না – যেমনটি আমরা কখনও করিনি।’

(Feed Source: hindustantimes.com)