ফর্চুন ইন্ডিয়া ৫০০ সংস্থাগুলির শীর্ষে থাকা নারীর সংখ্যা কত? সামনে অবাক করা তথ্য

ফর্চুন ইন্ডিয়া ৫০০ সংস্থাগুলির শীর্ষে থাকা নারীর সংখ্যা কত? সামনে অবাক করা তথ্য

ফর্চুন ইন্ডিয়া ৫০০ সংস্থাগুলির মধ্যে থেকে মাত্র ১.৬ শতাংশ কোম্পানিতেই শীর্ষ পদে রয়েছেন মহিলারা। এদিকে ফর্চুন ইন্ডিয়া নেক্সট ৫০০ কোম্পানিগুলির মধ্যে ৫ শতাংশের শীর্ষে আছেন মহিলারা। সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে যৌথ ভাবে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল ফর্চুন ইন্ডিয়া এবং এসপি জৈন ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ। ভারতীয় সংস্থার শীর্ষে থাকা কর্তাদের মধ্যে যে পুরুষ এবং মহিলাদের অনুপাতের ফারাক কতটা তা তুলে ধরতেই এই সমীক্ষা চলানো হয়েছিল। এদিকে এই সমীক্ষাকে সাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক এবং বিল-মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। জানা গিয়েছে, এই সমীক্ষায় ইন্ডাস্ট্রির ১৩০ জন শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই সমীক্ষামূলক গবেষণাটা চালানো হয়। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে থেকে ৫৪ শতাংশ মহিলা ছিলেন এবং ৪৬ শতাংশ পুরুষ। দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা এবং বেঙ্গালুরুতে প্রায় ১৬টি গোলটেবিল বৈঠক হয় এই গবেষণার জন্য। এদিকে এই গবেষণার জন্য মতামত জানতে বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের হাতে সমীক্ষা ধরানো হয়েছিল। এদিকে এই গবেষণা থেকে এটা জানা গিয়েছে, ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ কর্তারা এটা মেনে নিচ্ছেন যে সরকার বিগত ১ দশক ধরে মহিলাদের সব দিক দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য তারপরও যে কর্পোরেটে মহিলাদের অংশ নেওয়ার হার তলানিতে, তাও মেনে নেওয়া হচ্ছে।

তবে কী কারণে ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ পদে মহিলাদের সংখ্যা এত কম? বলা হচ্ছে, বিভিন্ন সংস্থার সাংগঠনিক নীতি, কর্মজীবনের অগ্রগতির সুযোগ, কর্ম-জীবনের ভারসাম্য, সাংস্কৃতিক নিয়ম এবং স্টেরিওটাইপের মতো কারণেই মহিলারা এত কম সংখ্যায় শীর্ষ স্থানে আছেন। এদিকে এই রিপোর্ট প্রকাশ হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করেন নারী কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি লেখেন, ‘নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের ভিত্তিপ্রস্তর। তবে এই ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জগুলিকে মোকাবিলা করতে হবে, তা স্বীকার করার ক্ষেত্রে যে স্বচ্ছতা, আমি তার প্রশংসা করতে চাই।’

এদিকে রিপোর্টে জানানো হচ্ছে, অধিকাংশ মহিলারাই ম্যানেজমেন্টের মধ্যবর্তী পদে থাকাকালীন চাকরি ছেড়ে দেন। এই সময়ে তাঁরা বিয়ে করে ফেলেন বা সন্তানের জন্ম দেন। এই আবহে মাঝ পথে চাকরি থেকে বিরতি নিয়ে ফের কাজে ফেরা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায় সেই সব মহিলার জন্য। এদিকে এই বিরতির জেরে ক্যারিয়ারের সুযোগও সীমিত হয়ে যায় মহিলাদের জন্য। আর তাই শীর্ষ পদের জন্য মহিলাদের পথ ‘দুর্গম’ হয়ে ওঠে। এদিকে কর্পোরেট মানসিকতায় পক্ষপাতও মহিলাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সংস্থাই মিড-ম্যানেজমেন্টে মহিলাদের নিয়োগ করা থেকে পিছিয়ে যায়, কারণ তাদের মাথায় ঘোরে যে কোনও এক সময় সেই কর্মী ৬ মাসের জন্য মাতৃতাকীলন ছুটিতে যেতে পারেন। এছাড়াও মহিলা কর্মীদের জীবনে আরও অনেক বাধা আসে বলে দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। বলা হচ্ছে, নিজের মা-বাবা বা শ্বশুড়-শাশুড়ির খেয়াল রাখা বা সন্তানের বোর্ড পরীক্ষার মতো ঘটনার জেরে কাজ থেকে তাদের ফোকাস সরে যায়। তবে কর্পোর্টের শীর্ষে মহিলা ও পুরুষের সংখ্যার এই অসামঞ্জস্য মেটানো যায় কীভাবে? গবেষণায় অংশ নেওয়া কর্তাদের মতে, মহিলা নিয়োগের ক্ষেত্রে সংস্থাদের কর ছাড় দিতে পারে সরকার। তাতে অনেকেই উৎসাহিত হতে পারেন। এছাড়াও লিঙ্গ-ভিত্তিক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। সংস্থার বোর্ডে মহিলা প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে।

(Feed Source: hindustantimes.com)