পশ্চিমবঙ্গ: কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন;

পশ্চিমবঙ্গ: কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন;

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
– ছবি: আমার উজালা

বিজেপিতে যোগ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং অন্যান্যদের উপস্থিতিতে তিনি বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাও নজরদারি করা হবে অভিজিৎ লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার কোনও ইঙ্গিত পাচ্ছেন কি না? এর আগে গত ৫ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তখনই সিদ্ধান্ত হয় গঙ্গোপাধ্যায় এখন তাঁর রাজনৈতিক ইনিংস শুরু করতে চলেছেন।

বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন

বিজেপিতে যোগদানের পর রাজ্য সরকারকে তীব্র নিশানা করলেন প্রাক্তন বিচারপতি। অভিজিৎ বলেন, সবাই জানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিবাজ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও লড়বেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আজ আমি সম্পূর্ণ নতুন জগতে পা রেখেছি। এই দলে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের মতো নেতা রয়েছেন। সুকান্ত দা, শুভেন্দু রাজ্যের অফিসার। আমি সময়ে সময়ে তার পরামর্শ চাই। দলের একজন সুশৃঙ্খল সৈনিক হিসেবে কাজ করতে চাই। দল আমাকে যে দায়িত্বই দেয়, আমি তা পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ

সন্দেশখালীতে একথা বলেন 

সন্দেশখালী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা খুবই খারাপ ঘটনা। সেখানে গিয়েছিলেন রাজ্যের নেতারা। সেখানে পৌঁছাতে তাকে বাধা দেওয়া হয়। এতদসত্ত্বেও তিনি সেখানে এসে মহিলাদের সঙ্গে দাঁড়ান। সন্দেশখালীর নির্যাতিতদের প্রসঙ্গ তুলছে বিজেপি।

সুকান্ত মজুমদার এ তথ্য জানান

এই সময় সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসাবে আমি নরেন্দ্র মোদীর পরিবার থেকে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আমাদের দলে স্বাগত জানাই। তিনি যেভাবে বঞ্চিত ও শোষিত নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার হিসেবে কাজ করেছেন তাতে আমি বিশ্বাস করি। বিজেপির নেতৃত্বে তিনি সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আগামীতে বাংলার রাজনীতি মোড় নেবে। বাংলার শিক্ষিত যুবকদের এগিয়ে আসার এবং রাজ্যের রাজনীতিকে পুনর্নির্মাণে অবদান রাখার এটাই উপযুক্ত সময়।

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কে?

পদত্যাগের আগে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন। গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার ‘মিত্র ইনস্টিটিউশন’ (মেইন) থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজরা ল কলেজ থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। একই সঙ্গে তিনি ‘অমিত্রচন্দ্র’ বাংলা থিয়েটারের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন

অভিজিৎ উত্তর দিনাজপুর জেলার পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিসে ‘এ’ গ্রেড অফিসার হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তবে এটাও মজার বিষয় যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে লড়াইয়ের জন্য তিনি আজ পদত্যাগ করেছেন সেই একই কারণে বছর খানেক আগে তিনি কর্মকর্তার চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। এখান থেকে অভিজিৎ কলকাতা হাইকোর্টে প্রবেশ করেন এবং আইন প্র্যাকটিস শুরু করেন। তিনি 10 বছর ধরে আইনজীবী হিসাবে কাজ করেছেন।

2018 সালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হন

2018 সালের মে মাসে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে কলকাতা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি করা হয়েছিল। 2020 সালের জুলাই মাসে কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে উন্নীত হন। চলতি বছরের আগস্টে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। দুর্নীতি সংক্রান্ত তার অনেক সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য রাজ্যের রাজনীতিকে নাড়া দিয়েছিল। তিনি আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে দুর্নীতির মামলায় ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত দিতে থাকেন। আইনজীবী থাকাকালে তিনি শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতেন এবং বিচারক হিসেবে এ ক্ষেত্রের দুর্নীতির মামলারও রায় দিতেন।

(Feed Source: amarujala.com)