মাওবাদী যোগের অভিযোগে প্রায় এক দশক জেলে থাকার পর গত মঙ্গলবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক জি এন সাইবাবা সহ ৫ জনকে বেকসুর খালাস করেছে বম্বে হাইকোর্ট। অবশেষে বৃহস্পতিবার নাগপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে মুক্তি পেলেন প্রাক্তন অধ্যাপক। আর মুক্তি পাওয়ার পর তিনি জেলবন্দি জীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, এত বছর ধরেও তাঁর বেঁচে থাকাটা আশ্চর্যজনক ঘটনা।
নাগপুর সেন্ট্রাল জেলের নীল ও হলুদ গেট বৃহস্পতিবার সকালে খুলে দেওয়া হয়। তারপর হুইলচেয়ারে করে বাইরে বেরিয়ে আসেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন প্রাক্তন অধ্যাপক জি এন সাইবাবা। জেলের বাইরে তাঁর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন তাঁর স্ত্রী বসন্ত কুমারী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ও আইনজীবী।
তিনি জানান, তাঁর সহবন্দি এবং সহ-অভিযুক্ত পান্ডু নরোটকে ২ বছর আগে জেলের মধ্যেই চোখের সামনে মারা যেতে দেখেছেন। নরোট একজন তরুণ এবং উপজাতি ছিলেন। কিন্তু, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গিয়েছিলেন। এবিষয়ে চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন সাইবাবা। তিনি অভিযোগ করেছেন, নরোট একজন সুস্থ যুবক ছিলেন। তিনি জেলে অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তার সঙ্গে ন্যায়বিচার হয়নি। তার সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়েছিল। কিন্তু, ঠিকমতো চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছিল।
নিজের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যখন আমি জেলে গিয়েছিলাম তখন আমার অক্ষমতা ছাড়া আর কোনও সমস্যা ছিল না। এখন আমার হৃৎপিণ্ডের মাত্র ৫৫% কার্যক্ষম রয়েছে। আমি পেশী সংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছি। আমার লিভার, গলব্লাডার এবং প্যানক্রিয়াসও আক্রান্ত হয়েছে। আমার ডান হাত আংশিকভাবে কাজ করছে। আমার চিকিৎসক জানিয়েছেন আমার একাধিক অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে।’
সাইবাবার আইনজীবী নিহাল সিং রাঠোর সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, তাঁর মক্কেল একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি সরকারের দ্বারা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। যদিও আবার তিনি কাজ চালিয়ে যাবেন কিনা সেবিষয়ে সাইবাবা জানান, অধিকারের জন্য দাঁড়ানো প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। তিনি বলেন, যে তাঁর স্বাস্থ্য খারাপ থাকা সত্ত্বেও তিনি মানুষের হয়ে কাজ করতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ক্যারিয়ারে যখন শীর্ষে ছিলাম তখন গ্রেফতার হয়েছিলাম। হারানো ১০ বছর আমি ফিরে পাবো না। তবে মানুষের জন্য কাজ করে যাব?’
(Feed Source: hindustantimes.com)