রবিবার আইএসএলের ফিরতি ডার্বি। এই ম্যাচ দুই দল অর্থাৎ ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের কাছে সম্মান রক্ষার লড়াই। তবে সেই সঙ্গে আইএসএলের অঙ্কটাও এই ম্যাচে গুরুতর হয়ে উঠেছে। মোহনবাগানের প্লে-অফ কার্যত নিশ্চিত। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলকে প্লে-অফের ছাড়পত্র পেতে হলে, ডার্বি জিততে হবে, তা না হলে কপালে দুঃখ আছে। আর মোহনবাগানের পাখির চোখ এখন, লিগ শিল্ড জয়। তাই তারা রবিবার লাল-হলুদকে হারাতে মরিয়া থাকবে।
মাসখানেক আগে প্রথম লেগে দুই দলের ম্যাচ লড়াই ২-২-এ শেষ হয়েছিল। এই ডার্বিতে দুই দলই অবশ্য ফল পেতে মরিয়া। আর ম্যাচ ড্র হলে, বাগানের প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে চাপে পড়বেন কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা।
আইএসএলের অঙ্কের হিসেব অনুযায়ী অবশ্য, মোহনবাগান ডার্বির আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলতে পারে। কী ভাবে? লিগ টেবলের যা অবস্থা, তাতে মোহনবাগানের সংগ্রহ এখন ৩৩ পয়েন্ট। এক পয়েন্ট পেলেই তাদের ডার্বি নিশ্চিত। এদিকে বাকি সব ম্যাচে জিতলেও জামশেদপুর এফসি, নর্থইস্ট ইউনাইটেড, পঞ্জাব এফসি, ইস্টবেঙ্গল এফসি এবং হায়দরাবাদ এফসি-র পক্ষে ৩৩ পয়েন্টে পৌঁছনো সম্ভব না। তবে চেন্নাইয়িন এফসি (১৭ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট) এবং বেঙ্গালুরু এফসি-র পক্ষে (১৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট) খাতায় কলমে ৩৩ পয়েন্টে পৌঁছনো সম্ভব। তা ছাড়া মোহনবাগানের সঙ্গে এই দুই দলের হেড-টু-হেড রেকর্ড এখনও নির্ধারিত হয়নি।
তাই শনিবার যদি হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে পয়েন্ট খোয়ায় চেন্নায়িইন এফসি, সেক্ষেত্রে তারা হবে ষষ্ঠ দল, যারা এই মরশুমে আর মোহনবাগানকে ছুঁতে পারবে না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ডার্বির আগেই শেষ ছয়ে ঢুকে পড়বে মোহনবাগান। কিন্তু হায়দরাবাদের এখন যা পরিস্থিতি, তাতে চেন্নাইয়িনের পয়েন্ট নষ্ট করার সুযোগ কার্যত নেই বললেই চলে।
এক্ষেত্রে ডার্বি ড্র করলেই বাগান উঠে যাবে প্লে-অফে। আসলে এই মুহূর্তে লিগ টেবলে যা পরিস্থিতি, তাতে শেষ সাতটি দলের সর্বোচ্চ ৩৩ পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর মোহনবাগানের পয়েন্টও এখন ৩৩। তারা যদি ডার্বিতে এক পয়েন্ট পায়, তবে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৩৪। সে ক্ষেত্রে আর পরের দলগুলির পক্ষে বাগানের নাগাল পাওয়া সম্ভব হবে না। ফলে মোহনবাগানের প্লে-অফ কোয়ালিফিকেশন নিশ্চিত হয়ে যাবে।
এদিকে ডার্বি জিততে না পারলে ইস্টবেঙ্গল চাপে পড়ে যাবে। এমনিতেই এফসি গোয়ার কাছে হেরে তাদের লড়াই বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট এখন ১৮ ম্যাচে ১৮। তারা রয়েছে দশ নম্বরে। এখন আর লাল-হলুদের ভাগ্য শুধু তাদের নিজেদের হাতে নেই, রয়েছে আরও তিনটি দলের হাতে। নিজেদের জয় ছাড়াও এখন তারা কী করবে, সে দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে লাল-হলুদ শিবিরকে।
লাল-হলুদ বাহিনীর এখনও চারটি ম্যাচ বাকি, মোহনবাগান এসজি (১০ মার্চ), কেরালা ব্লাস্টার্স (৩ এপ্রিল, কোচি), বেঙ্গালুরু এফসি (৭ এপ্রিল, কলকাতা),পঞ্জাব এফসি (১০ এপ্রিল, দিল্লি),-র বিরুদ্ধে। এই চারটি ম্যাচের মধ্যে তারা যদি একটিতেও হারে, তা হলে তাদের প্লে অফের রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এই চার ম্যাচে জিতলেও যে তাদের সামনে প্লে অফের দরজা খুলে যাবে, তা একেবারেই নয়। এর পরেও তাদের নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি, চেন্নায়িইন এফসি এবং জামশেদপুর এফসি-র পয়েন্ট হারানোর উপর নির্ভর করতে হবে।
কিন্তু তারা বাকি সব ম্যাচে জেতার পরেও এই তিন দল কী করলে দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগের সেরা ছয়ে যেতে পারে? নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-কে তাদের বাকি চারটি ম্যাচের মধ্যে অন্তত দুই পয়েন্ট খোয়াতে হবে। তাকিয়ে থাকতে হবে চেন্নায়িইন এফসি-র শেষ পাঁচটি ম্যাচের দিকেও। কারণ, ইস্টবেঙ্গলকে সেরা ছয়ে উঠতে গেলে এই পাঁচ ম্যাচে তাদেরও অন্তত তিন পয়েন্ট নষ্ট করতে হবে এবং জামশেদপুর এফসি-কেও তাদের শেষ চারটি ম্যাচে অন্তত দু’পয়েন্ট খোয়াতে হবে। আর ইস্টবেঙ্গল যদি পঞ্জাবকে গ্রুপ পর্বে হারায়, তবে তারা পঞ্জাবকে টপকে যাবে। সেক্ষেত্রে পঞ্জাবের এর বাইরে আলাদা করে পয়েন্ট নষ্ট না হলেও ইস্টবেঙ্গলের সমস্যা হবে না।
(Feed Source: hindustantimes.com)