‘দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে কমিশন’, রাজভবন থেকে বেরিয়ে কড়া অবস্থান অভিষেকের

‘দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে কমিশন’, রাজভবন থেকে বেরিয়ে কড়া অবস্থান অভিষেকের

কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও রুমা পাল, কলকাতা: ‘দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে কমিশন’, রাজভবন থেকে বৈঠক শেষে কড়া ভাষায় জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে (Abhishek Banerjee Jibe At ECI)  একহাত নিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝড়বিধ্বস্ত মানুষদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুমতি এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাথাদের সরানোর দাবি জানাতে গিয়ে কেন তাঁর দলীয় সতীর্থদের হেনস্থা হতে হল, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

অভিষেকের বক্তব্য…
‘দোলা সেনের পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছিল, তাঁকে হিঁচড়ে টেনে নিয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের তিন বারের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে গেছে…তাঁদের হাতে কী ছিল, বোমা-বন্দুক-লাঠি?’, রাজভবনের বাইরে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ দেখায় অভিষেককে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘নির্বাচন কমিশন চায় না ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা নতুন বাড়ি পাক।’ এর পর, রবিবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ যে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গ তুলেও কমিশনকে একহাত নেন তিনি। বলেন, ‘সমস্ত তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন এনআইয়ের এসপি-কে সরানো হবে না? ‘ভিজিটর্স বুকের রেকর্ড-সহ সব নথি কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেন এনআইএ-র এসপি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে না? বিজেপির তল্পিবাহকের কাজ করা এনআইএ ডিরেক্টরকে কেন সরানো হবে না?’ তাঁর দাবি, এনআইএ-র এসপির সঙ্গে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র সিংহ যে বৈঠক করেছিলেন, তার প্রমাণ রয়েছে। এমন ৫২ মিনিটের ফুটেজ জমা দেওয়া হবে, সে কথাও প্রত্যয়ের সঙ্গে জানান অভিষেক। কী রয়েছে সেই ফুটেজে? অভিষেকের বক্তব্য, সাদা প্যাকেট হাতে ঢুকতে দেখা গেল তিওয়ারিকে, বেরোলেন খালি হাতে। সব প্রমাণ জমা দেওয়া হবে, মনে করান তিনি। সঙ্গে হুমকি, ‘২০২১-র থেকেও খারাপ পরিণতি হবে।’
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও খড়্গহস্ত হন তিনি। বলেন, ‘আমি সরাসরি নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি।’ অভিষেকের বক্তব্য, এদিন এই সমস্ত অভিযোগ জানিয়ে বেরিয়ে শান্তিপূর্ণ ধর্নায় বসা তৃণমূল নেতাদের গোটা রাজধানী ঘুরিয়ে শেষমেশ মন্দির মার্গ থানায় আটকে রাখা হয়েছে। এর পর রাজপালের কাছে তাঁর দাবি, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে বিষয়টি হাতে নিতে হবে। জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। আগামীকাল আবার আমাদের এই প্রতিনিধিদল রাজ্য়পালের সঙ্গে দেখা করবে।’ তার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে।

প্রেক্ষাপট…
জরুরি ভিত্তিতে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনই হল। রাত ৯টা নাগাদ তাঁদের সঙ্গে দেখা করার সময় দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ঠিক রাত ৮টা বেজে ৫০ মিনিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের ১১ জন সদস্য রাজভবনে ঢোকেন। শেষ পর্যন্ত যা খবর, তাতে বৈঠক চলছে। এদিন, দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্নায় যে ধুন্ধুমার হয়, যে ভাবে ধর্নায় সামিল দলীয় নেতৃত্বকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় তার প্রতিবাদ জানাতে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন অভিষেকরা। ব্রাত্য বসু, অসীমা পাত্র, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের মতো একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীরা এদিন রাজভবনে যান। যা শোনা যায়, তাতে অভিষেকরা রাজভবনে আসছেন শুনে প্রথমে তাঁদের আসার কারণ জানতে চান রাজ্যপাল। তার পর সময় দেওয়া হয়। দেখা যায়, সময় মতোই একে একে ঢুকছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সোমবার পিংলায় গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে ফিরে এই বৈঠক। একদিকে যখন দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় তৃণমূল নেতারা বৈঠক করেন, তখন রাজধানীর মন্দির মার্গ থানায় আটকে রয়েছেন শান্তনু সেন, দোলা সেন-সহ তৃণমূল প্রতিনিধিরা। সেখান থেকেই শান্তনু সেন জানালেন, তাঁদের পুলিশের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে সারা রাত তাঁরা ওখানেই থাকবেন। নিজেদের ধর্না কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে আপাতত ঠিক হয়েছে।

(Feed Source: abplive.com)