প্রথম দফার ভোটে কমিশনের নজরে কোচবিহার, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলার নির্দেশ

 প্রথম দফার ভোটে কমিশনের নজরে কোচবিহার, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলার নির্দেশ

রুমা পাল, অনির্বাণ বিশ্বাস, বিটন চক্রবর্তী, কোচবিহার: প্রথম দফার ভোটে কমিশনের নজরে কোচবিহার (EC On Cooch Behar Secuirity)। কোচবিহারকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলার নির্দেশ কমিশনের। শীতলকুচির (Sitalkuchi) ঘটনার পর সতর্ক নির্বাচন কমিশন। কোচবিহারের সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ কমিশনের। কোচবিহারের জন্য কমিশনের বিশেষ ২ পর্যবেক্ষক।

২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের (WB Assembly Election 2021) সময় শীতলকুচিতে যা ঘটেছিল, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেটা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। প্রথম দফায় উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় ভোট শুরুর আগে, DM, SP-দের সঙ্গে বৈঠকে এমনই কড়া বার্তা দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর কমিশনের এই তৎপরতার মধ্যে শীতলকুচি ইস্যুতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘাত চলছেই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, ‘বিধানসভা ভোটের সময় শীতলকুচিতে CISF ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করে দিল। এখানে যদি তৃণমূলকে জেতান, তাহলে কারও ক্ষমতা হবে না, আপনাদের লাল চোখ দেখানোর, সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই হোক না কেন। ‘বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ বলেন শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘শীতলকুচিতে যে ঘটনা ঘটেছিল, সেটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও মর্মান্তিক। ঘটনা কেন ঘটেছিল এটাও মানুষের জানা। এবারের ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে কোচবিহারে।

১৯ এপ্রিল লোকসভার লড়াইয়ের কিক অফ। তার আগে শীতলকুচি ইস্যুতে ভোটযুদ্ধের পারদ চড়ছে উত্তরে। ১৯ এপ্রিল যে ৩টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে, তার মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে কোচবিহার। শনিবার কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনের আধিকারিকরা। বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশের নোডাল অফিসাররা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে কমিশনের তরফে সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকদের বলা হয়েছে,২০২১-এর ভোটের সময় শীতলকুচিতে যা ঘটেছিল, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেটা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। কোচবিহার জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে।

২০২১ সালের ১০ এপ্রিল। বিধানসভা ভোটের চতুর্থ দফা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় চারজনের। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে, লোকসভা ভোটের মুখে লাগাতার সুর চড়াচ্ছে তৃণমূল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কোচবিহারের মানুষ বিজেপিকে জিতিয়ে কী পেয়েছে? পেয়েছে বিএসএফের চোখরাঙানি আর গুলি চালানো। কাশ্মীরের মতো প্যালেট বুলেট ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। কয়েক মাস আগে আমি এখানে এসেছিলাম। তার পা থেকে ১৪৪টা প্যালেট বুলেটের ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। যেভাবে কাশ্মীরে প্যালেট বুলেট ব্যবহার করা হয়, এখানেও তা করা হচ্ছে। ‘ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস এখন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভাষায় কথা বলছে। কাশ্মীরে পুলিশের ভূমিকা, কাশ্মীরে সেনার ভূমিকা নিয়ে কোনওদিন কংগ্রেস-বিজেপির মধ্যে কোনও সংঘাত তৈরি হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কংগ্রেসে ছিলেন, তারপরে NDA-তেও ছিলেন। কার্যত তারা প্রকাশ্যে BSF-তে, ED-কে, NIA-কে আক্রমণ করার জন্য দলের কর্মীদের প্ররোচিত করছে।’

রাজনৈতিক বাগযুদ্ধের উত্তপ্ত আবহে, কোচবিহারে শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে তৎপর নির্বাচন কমিশন। শনিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বহিরাগত ঠেকাতে নেওয়া হবে জিরো টলারেন্স নীতি। বাহিনীর গতিবিধিতে নজর রাখবে নির্বাচন কমিশন। ভোট শুরুর ৭২ ঘণ্টা আগে থেকে আরও বাড়ানো হবে নাকা চেকিং। আন্তর্জাতিক সীমান্তে ড্রোনের সাহায্যে BSF বিশেষ নজরদারি চালাবে।

(Feed Source: abplive.com)