আকাশে মিলেছে শিব ও শক্তির সন্ধান! প্রকাশ্যে মিল্কিওয়ের অজানা রহস্য

আকাশে মিলেছে শিব ও শক্তির সন্ধান! প্রকাশ্যে মিল্কিওয়ের অজানা রহস্য

আকাশে শিব এবং শক্তির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতেই রয়েছে এই দুই দঅতি প্রাচীন নক্ষত্র। আসলে, এগুলি হল দুটি প্রাচীন নক্ষত্রের গোষ্ঠী, যা হিন্দু দেবতাদের নামে পরিচিত, শিব ও শক্তি আকাশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়। আর এই আবিষ্কারের মাধ্যমেই বিজ্ঞানীরা মিল্কিওয়ের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন তথ্য পেয়েছেন, যা সত্যিই বিস্ময়কর। ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল’ জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, এই গবেষণার প্রধান গবেষক, জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানী খেয়াতি মালহান বলেছেন, বিস্তৃতভাবে, আমাদের গবেষণার লক্ষ্য হল পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক প্রশ্নের সমাধান খুঁজে বের করা। কীভাবে ছায়াপথ গঠিত হয়, তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা।

  • শিব ও শক্তির বিবরণ

হিন্দু পুরাণে শিব ও শক্তির মিলন থেকে মহাবিশ্বের জন্মের উল্লেখ আছে। আর বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) এর গায়া টেলিস্কোপের মাধ্যমে আবিষ্কৃত এই শিব ও শক্তির এই চেন দুটি ভিন্ন গ্যালাক্সির অবশিষ্টাংশ, যা একসঙ্গে মিলিত হয়ে নতুন ছায়াপথ মিল্কিওয়ের জন্ম দিয়েছে। শক্তি এবং শিব সিরিজের নক্ষত্রের রাসায়নিক গঠন ১২ থেকে ১৩ বিলিয়ন বছর আগে জন্ম নেওয়া নক্ষত্রের মতোই। তাদের ভর সূর্যের চেয়ে এক কোটি গুণ বেশি।

  • মিল্কিওয়ে কী

মিল্কিওয়ে হল কোটি কোটি নক্ষত্রের একটি দল, যা প্রায় এক লক্ষ আলোকবর্ষ ব্যাসার্ধে বিস্তৃত রয়েছে। তারা, গ্যাস এবং ধূলিকণার এই দলটি দৈর্ঘ্যে একটি তরঙ্গ আকারে ভাসমান। মালহান বলেছেন, আমাদের গবেষণায় মিল্কিওয়ের প্রাথমিক সময় সম্পর্কে জানা গিয়েছে। আমরা তারার দুটি দল চিহ্নিত করেছি যেগুলো হয়তো মিল্কিওয়ে তৈরির আগে শেষ পর্যায়ে ছিল। এই আবিষ্কারে সাহায্যকারী গায়া টেলিস্কোপ ২০১৩ সালে কাজ শুরু করে। এই টেলিস্কোপটি এখনও পর্যন্ত মিল্কিওয়ের সবচেয়ে বড় থ্রিডি মানচিত্র তৈরি করছে।

  • শিব কোথায় এবং শক্তি কোথায়

এই মানচিত্রের জন্যই নক্ষত্রের অবস্থান, দূরত্ব ও গতি নিরূপণ করা সম্ভব হচ্ছে। এই তথ্যের সাহায্যে খেয়াতি মালহান ও তার সহকর্মীরা শিব ও শক্তিকেও শনাক্ত করার সুযোগ পেয়েছেন। বিগ ব্যাং, ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে ছায়াপথের গঠন তৈরি করেছিল। শিব এবং শক্তি এখন মিল্কিওয়ের কেন্দ্র থেকে ৩০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। শিব কেন্দ্রের কাছাকাছি এবং শক্তি গোষ্ঠী আরও দূরে রয়েছে।

২০২২ সালে, বিজ্ঞানীরা গায়ার মাধ্যমে তারার আরও একটি দল আবিষ্কার করেছিলেন, যার নাম ছিল ‘পুরোল্ড হার্ট’। গ্যালাক্সির জন্মের পর থেকেই এই তারারা সেখানে উপস্থিত রয়েছে। কিন্তু শিব ও শক্তি গোষ্ঠীর নক্ষত্রের রাসায়নিক গঠন গ্যালাক্সির অন্যান্য নক্ষত্র থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। লোহা, কার্বন, অক্সিজেন এবং অন্যান্য ভারী ধাতু এই নক্ষত্রগুলিতে অল্প পরিমাণে উপস্থিত রয়েছে। এই ধাতুগুলি মহাবিশ্বের গঠনের শুরুতে যে নক্ষত্রগুলি তৈরি হয়েছিল, সেখানে উপস্থিত ছিল। যখন এই নক্ষত্রের জীবন শেষ হয়ে যায় এবং তারা ভেঙে যায়, তখন এই উপাদানগুলি মহাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। মালহান তাই বলেছেন, আদর্শভাবে, আমরা মিল্কিওয়ের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত পুরো যাত্রার মানচিত্র তৈরি করতে চাই, এটি ১৩ বিলিয়ন বছর বিস্তৃত চলচ্চিত্রের মতো হবে।

(Feed Source: hindustantimes.com)