ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই নিভে গেল আলো, গাজায় ইজরায়েলি হামলায় শেষ ৪০০০ ‘টেস্ট টিউব বেবি’

ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই নিভে গেল আলো, গাজায় ইজরায়েলি হামলায় শেষ ৪০০০ ‘টেস্ট টিউব বেবি’

নয়াদিল্লি: নয় নয় করে ছ’মাস ধরে যুদ্ধ চলছে। ইজরায়েলি হানায় গাজায় এখনও পর্যন্ত ৩৪ হাজার মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে এই পরিসংখ্যান গাজার বাসিন্দা নারী, শিশু, পুরুষের মৃত্যুর। এর বাইরেও গাজার হাসপাতালে ইজরায়েলি হানায় ৪ হাজার নলজাত ভ্রূণ, অর্থাৎ ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর যা Test Tube Babies হিসেবে গন্য হয়, তা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে খবর সামনে এল (IVF Embryos Destroyed in Gaza)। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে মজুত ১০০০-এর বেশি শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর নমুনাও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। (Israel Gaza War)

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এই খবর সামনে এনেছে। বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে এই ঘটনা ঘটেছে। গাজা শহরে Al Basma IVF সেন্টারে হামলা চালায় ইজরায়েল। সেই হামলায় হাসপাতালের এমব্রিয়োলজি ইউনিটে মজুত থাকা পাঁচটি তরল নাইট্রোজেন ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণের ফলে ৪০০০ ভ্রূণ এবং ১০০০-এর বেশি শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর নমুনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। (Israel Hamas War)

দীর্ঘ ছ’মাসের যুদ্ধে যে ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি ঘটেছে, তা অপূরণীয়। কিন্তু এত সংখ্যক ভ্রূণ এবং শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নমুনা ধ্বংসের খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যুদ্ধের পরিণাম যে কী ভয়ঙ্কর, তা এই ঘটনাতেই বোঝা যাচ্ছে বলে মত গাজার সাধারণ মানুষের। ১৯৯৭ সালে গাজায় IVF ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠা করেন কেমব্রিজ ফেরত বহেলদিন ঘলায়নি। তিনি বলেন, “ওই ৫০০০ জীবন বা সম্ভাব্য জীবনের কী মূল্য, তা মর্মে মর্মে বুঝছি আমরা।”

বহেলদিন জানিয়েছেন, এমন মানুষ আছেন, যাঁরা অতি কষ্টে Test Tube Baby-র দিকে এগিয়েছিলেন। তাঁদের আর সন্তানধারণের সুযোগ হবে না। বহেলদিন বলেন, “আমার মনটা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে।” তিনি জানিয়েছেন, আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে থেকেও টিভি, গয়না বেচে কেউ কেউ সন্তানধারণে এসেছিলেন। তাঁদের সব শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানান বহেলদিন।

রয়টার্স জানিয়েছে, গাজার ন’টি IVF ক্লিনিকে Test Tube Babies নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলত। মহিলাদের ডিম্বাণু সংগ্রহ করে টেস্ট টিউবের মধ্যে শুক্রাণুর সংযোজন ঘটিয়ে ভ্রূণ তৈরি করা হতো সেখানে। মায়ের জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের আগে পর্যন্ত টেস্ট টিউবের মধ্যেই থাকত ভ্রূণগুলি। কখনও কখনও হিমায়িত অবস্থায়ও রাখা হতো। ওই ভ্রূণের অধিকাংশই Al Basma-র হাসপাতালে সংরক্ষিত ছিল। ইজরায়েলি হামলায় সেগুলি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

গাজায় ইজরায়েলি হামলা নিয়ে সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি, কিন্তু যুদ্ধ কোথায় গিয়ে থামবে, কেউই তার ইঙ্গিত দিতে পারছে না। এমনকি হতাহতের পরিসংখ্যান নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ গত সোমবারই গাজার আল শিফা হাসপাতালে গণকবরের হদিশ মিলেছে। দু সপ্তাহ আগেই সেখানে দাপিয়ে বেড়ায় ইজরায়েলি সেনা। তার পরই হাসপাতালের ভিতরে গণকবরের হদিশ মেলে, যেখানে বহু প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের দেহ চাপা দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

(Feed Source: abplive.com)