মুখে ‘অতিরিক্ত লোম’ ! UP বোর্ডের টপারকে কুৎসিত আক্রমণ, পাল্টা জবাব নেটিজেনদেরই

মুখে ‘অতিরিক্ত লোম’ ! UP বোর্ডের টপারকে কুৎসিত আক্রমণ, পাল্টা জবাব নেটিজেনদেরই

নয়াদিল্লি:  প্রাচী নিগম। মেয়েটির নাম এখন মুখে মুখে। সারা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে সকলে বলছে, ধন্যি মেয়ে বটে ! উত্তরপ্রদেশের ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষায় শীর্ষস্থান পেয়ে চমকে দিয়েছে এই মেয়ে। কিন্তু শুধু তো রেজাল্টের জন্য নয়, প্রাচী এখন পরিচিত অন্য কারণে। এক সময় তাঁকে তীব্র কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। সমবয়সি থেকে নেটিজেন, কেউ ছেড়ে কথা বলেনি। কারণ ? প্রাচীর মুখ ভরা লোম, স্পষ্ট গোঁফের রেখা।

এই বয়সে বহু কিশোরীই বাহ্যিক রূপ নিয়ে মাতামাতি করেন। কিন্তু প্রাচী নিজের মেধাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। জান লড়িয়ে দিয়েছেন ভাল রেজাল্ট করার জন্য। ফলও পেয়েছেন। সকলকে টপকে সারা রাজ্যে ১ নম্বর জায়গাটা পেয়েছেন তিনি। আর এই তাক লাগানো রেজাল্টের পর অনেক নিন্দুকেরই মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনকী তাঁর ছবি দেখে নেটমাধ্যমে যাঁরা কুমন্তব্যও করছিলেন, তাদের প্রায় তেড়ে গিয়েছেন শুভবুদ্ধিসম্পন্নরা।

প্রাচী নিগমর এই সাফল্যে আজ গর্বের শেষ নেই তার মা-বাবার।  উত্তরপ্রদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড অতি সম্প্রতি ক্লাস ১০ ও ১২ এর রেজাল্ট প্রকাশ করেছে।   প্রাচী সেখানে ৯৮.৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে সকলকে গর্বিত করেছে।  ৬০০ র মধ্যে ৫৯১ পেয়ে শীর্ষ স্থানাধিকারী প্রাচী।

প্রাচীর ছবি সেদিন সামনে আসতেই দুরকম প্রতিক্রিয়া দেখা যায় ইন্টারনেটে।  নেট মাধ্যম মতামত এবং চিন্তা প্রকাশের মুক্ত স্থান ঠিকই, কিন্তু কোনও কোনও সময় নেটিজেনদের মন্তব্য শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করে যায়, যা মানসিক ভাবে আঘাত করার জন্য যথেষ্ট ।  সম্প্রতি, ইউপি বোর্ডের শীর্ষস্থানাধিকারী প্রাচী নিগমের সঙ্গেও এমনটা ঘটে। কারণ,  তার মুখে লোমের আধিক্য।

অনেকেই জানেন, হরমোনের কারণে কোনও কোনও মহিলার শরীরে ও মুখে লোমের আধিক্য বেশি থাকে। প্রাচীরও হয়ত তাই। হরমোনের কারণেই প্রাচীর মুখে পুরুষদের মতো গোঁফও রয়েছে।  মেডিক্যাল কারণ না জেনেই, অনেকে খোঁচা দেওয়া মন্তব্য করতে থাকে নেট মাধ্যমে। সেটা এক সময় মাত্রা ছাড়ায়। তখন এগিয়ে আসেন কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ। যাঁরা  মেধাবী মেয়েটির পাশে দাঁড়ায়। আর এই ঠাট্টা-তামাশা থামাতে বলে। এবং বলেন, প্রাচীকে অভিনন্দন । তিনি আশা করি সোশ্যাল মিডিয়ার এই সব বোকা-মন্তব্যকে পাত্তা দেবেন না।

প্রাচী উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর জেলার বাসিন্দা । তিনি রাজ্য-স্তরের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। তাঁর স্বপ্ন আগামীতে IIT-JEE ক্র্যাক করা। দশম শ্রেণীর ছাত্রীর বাবা চন্দ্র প্রকাশ নিগম পেশায় ঠিকাদার । মা মমতা নিগম একজন গৃহিণী। তাঁর এক ভাই ও বোন আছে।

(Feed Source: abplive.com)