‘নম্বরটাই গুরুত্বপূর্ণ, দাড়ি-গোঁফ নয়’ – ট্রোলের জবাবে বিস্ফোরক টপার প্রাচী

‘নম্বরটাই গুরুত্বপূর্ণ, দাড়ি-গোঁফ নয়’ – ট্রোলের জবাবে বিস্ফোরক টপার প্রাচী

মুখে গোঁফ থাকায় কম কথা শুনতে হয়নি প্রাচীকে। দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় ৯৮.৫ শতাংশ পেয়ে টপ করেছেন প্রাচী নিগম। তাঁর অসামান্য প্রতিভার প্রশংসা হারিয়ে গিয়েছে ট্রোলিংয়ের চাপে। প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়া ঠাট্টা করে চলেছেন ছাত্রীকে নিয়ে। প্রাচীর ভাল স্কোর, তাঁর পড়াশুনা এবং কঠোর পরিশ্রম দেখে, তাঁর প্রশংসা করার পরিবর্তে, সমাজের কিছু অংশ তাঁর মুখে দৃশ্যমান চুল নিয়ে মজা করে চলেছেন। এবার আর চুপ করে থাকলেন না প্রাচী। কড়া ভাষায় জবাব দিলেন ট্রোলের।

উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের বাসিন্দা প্রাচি নিগম। বিদ্যামন্দির ইন্টার কলেজের ছাত্রী তিনি। ইউপি বোর্ডের দশম শ্রেণিতে শীর্ষস্থান অর্জন করে পুরো রাজ্যে খ্যাতি এনে দিয়েছেন তিনি। ৯৮.৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রমাণ করেছেন যে, সত্যিকারের আগ্রহ থাকলে যেকোনও অসুবিধাও অতিক্রম করা যেতে পারে। তাই সত্ত্বেও মুখের অবাঞ্ছিত লোম নিয়ে ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছিলেন প্রাচী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি হওয়া মিমগুলি দেখে ছাত্রী এবং তাঁর পরিবারের ভীষণ খারাপ লেগেছিল।

  • প্রাচীর কড়া জবাব

এক সাক্ষাৎকারের সময় উপযুক্ত জবাব দিয়ে প্রাচী বলেছেন, ট্রোলারকে অভিনন্দন তাঁদের ভাবনার জন্য, সাফল্যই আমার পরিচয়। যাঁরা মুখের অবাঞ্ছিত লোম নিয়ে মজা করেছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে প্রাচী বলেছেন- আমি আমার লক্ষ্য অর্জন করেই ছাড়ব।

প্রাচীর আরও জবাব, তাঁর সমস্ত মনোযোগ তাঁর পড়াশোনায় নিবদ্ধ ছিল এবং কেউ কখনও তাঁর অতিরিক্ত মুখের চুলের কথা বলেননি। আমার পরিবার, আমার শিক্ষক, আমার বন্ধুরা কখনই আমার চেহারার জন্য আমার সমালোচনা করেনি এবং আমি কখনও এটি নিয়ে মাথা ঘামাইনি। ফলাফলের পরে যখন আমার ছবি প্রকাশিত হয়েছিল তখন থেকেই সবাই ট্রোল করতে শুরু করেছেন। তারপরই এটি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। আমার লক্ষ্য একজন ইঞ্জিনিয়ার হওয়া এবং শেষ পর্যন্ত যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল আমার নম্বর। আমার মুখের চুল নয়।

  • প্রাচীর সাফল্যের মন্ত্র

নিজের পড়াশোনায় সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেছেন যে পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করেন তবে আপনার পড়াশোনার ফলাফলও ভাল হবে। প্রাচী নিগমও নিজের সাফল্যের মন্ত্র শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, যেকোনও পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে রিভিশন খুবই জরুরি। প্রাচী আরও জানিয়েছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়াশোনা করাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, ডেডিকেশন থাকাটা জরুরি। জানিয়েছেন, তিনি নিয়মিত ৫-৬ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। বলেছেন, যে সাবজেক্টে আপনার গ্রিপ কম, সে বিষয়ে একটা বিশেষ কৌশল তৈরি করতে হবে। যে সময়ই পড়াশুনা করুন না কেন, সেটা মাথায় রাখুন। আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করেন তবে আপনি অবশ্যই সফলতা পাবেন।

জানা গিয়েছে, প্রাচীর মুখে যে অবাঞ্চিত দাঁড়ি গোঁফ রয়েছে, তাঁর বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হবে লখনউ পিজিআইতে। পরিচালক অধ্যাপক ড. আর কে ধীমান বলেছেন, মেয়েদের দাড়ি-গোঁফের কারণ হতে পারে টেস্টোস্টেরনের ভারসাম্যহীনতা, স্থূলতা বা পরিবারের কারও ডায়াবেটিস। ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিছু বাচ্চাদের দাড়ি ও গোঁফ বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে জেনেটিক্স এবং অতিরিক্ত ওজনও। একটি সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে অবাঞ্ছিত লোম স্থায়ীভাবে দূর করা যায়।

(Feed Source: hindustantimes.com)