জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলা বছরের শুরুতেই বাসন্তী দুর্গা পুজো হল। আজ, মঙ্গলবার অন্নপূর্ণাপুজো। আজ বাংলার ঘরে-ঘরে দেবীর আরাধনা। কী ভাবে শুরু হল এ পুজোর? একটা ঝগড়া দিয়ে। কার ঝগড়া। ঝগড়া হল শিব-পার্বতীর। কোন দাম্পত্যে তা না হয়। কিন্তু সেই দ্বন্দ্বের পথ ধরে খুলে গেল এক নতুন রহস্য। কী?
একদিন শিবের সঙ্গে ঝগড়া হল পার্বতীর। শিব বললেন, এ জগতের সবই মায়া, ফলে কোনও কিছুই প্রয়োজনীয় নয়। পার্বতী বললেন, মোটেই নয়, যতক্ষণ দেহধারণ, ততক্ষণ জগৎকে মায়া বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না! এই বলে দেবী পার্বতী রাগ করে চলে গেলেন। সঙ্গে ছিল নিজের প্রয়োজনের খাবারটুকু। সেটুকু নিয়েই তিনি অন্তর্হিত হলেন।
এদিকে দেবী পার্বতীর অনুপস্থিতিতে সর্বত্র দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেল। দেবতারা পর্যন্ত খেতে পাচ্ছেন না! ব্যাপারস্যাপার দেখে শিব বুঝলেন, সব কিছু মায়া বলে হয়তো তিনি ঠিক করেননি। তিনিও ধীরে ধীরে খাবারের গুরুত্ব টের পেলেন। টের পেলেন পার্বতীর রাগেরও। তিনি বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলেন, কোথাও কোনও খাদ্য নেই। তবে তিনি জানেন, একমাত্র বারাণসীতেই সদাসর্বদা অন্ন মেলে। তাই বারাণসীর দিকে রওনা দিলেন।
কিন্তু বারাণসীতে গিয়েও শিবের আর একবার অবাক হওয়ার পালা। তিনি দেখলেন, সেখানে রান্নাঘর সামলাচ্ছেন স্বয়ং পার্বতী। শিব তখন তাঁর ভিক্ষাপাত্র নিয়ে দেবী পার্বতীর সামনেই হাজির হলেন। দেবী তাঁকে অন্ন দিলেন। সেই থেকেই দেবী পার্বতী পরিচিত হলেন ‘অন্নপূর্ণা’ নামে। অন্নের দেবী ‘অন্নপূর্ণা’।
বলা হয়, বাড়িতে অন্নপূর্ণা পুজো করলে গৃহস্থের কখনওই অন্নের অভাব হয় না। কেন একথা বলা হয়? এর পিছনে রয়েছে এই পৌরাণিক কাহিনি। অন্নের জন্য মা অন্নপূর্ণার দ্বারস্থ হতে হয় স্বয়ং শিবকেও। মানুষ তো কোন ছার! অন্নের জন্য মানুষকেও মা অন্নপূর্ণার কৃপালাভ করতে হয়। আর যে-গৃহস্থ অন্নপূর্ণা পুজো করেন, তাঁর তাই দেবীর কৃপায় কখনও অন্নের অভাব হয় না।
এখন চলছে নবরাত্রি। নবরাত্রি বছরে দুবার আসে। শারদীয় নবরাত্রি ও চৈত্র নবরাত্রি। শরৎ নবরাত্রি এবং বসন্ত নবরাত্রি। এই দুই নবরাত্রি নিয়েই সারা দেশে তৈরি হয় উৎসবের আবহ। মেতে ওঠেন ভক্তেরা। শারদীয় নবরাত্রি চলে গিয়েছে। এবার চৈত্র নবরাত্রি। এটি বাঙালিরা চিহ্নিত করে মা বাসন্তী ও মা অন্নপূর্ণার পুজো দিয়ে। গতকাল সোমবার ছিল বাসন্তী দুর্গাপুজো, আজ অন্নপূর্ণা পুজো। নবরাত্রি ন’দিনের উৎসব। এবার চৈত্র নবরাত্রি শুরু হয়েছে ৯ এপ্রিল। চলবে আগামীরাল, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। নবরাত্রিতে মা দুর্গার নয়টি রূপের পুজো হয়। রূপগুলি হল– যথাক্রমে মা শৈলপুত্রী, মা ব্রহ্মচারিণী, মা চন্দ্রঘণ্টা, মা কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, মা কাত্যায়নী, মা কালরাত্রি, মা মহাগৌরী, মা সিদ্ধিদাত্রী।
(Disclaimer: প্রচলিত ধর্মীয় রীতি, শাস্ত্র বা তত্ত্বের ভিত্তিতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এটি মানা বা না মানার সুপারিশ করা হচ্ছে না। বিশ্বাস ব্যক্তিগত বিষয়। সচেতন পাঠক যা করবেন স্বদায়িত্বে। আমাদের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও দায়বদ্ধতা নেই।)
(Feed Source: zeenews.com)