মাত্র ৮ দিন আগে শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ের পর্ব সেরেছেন সোহিনী সরকার। আচমকাই সোহিনীর প্রাক্তন সম্পর্ক নিয়ে সরগরম টলিউড থেকে সোশ্যাল মিডিয়া। বিয়ে পরবর্তী ‘কদর্য আলোচনা’য় বিরক্ত সোহিনী এদিন প্রাক্তন প্রেমিক রণজয় বিষ্ণুকে বিঁধে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন।
সোহিনীর প্রথম অভিযোগ, প্রাক্তন মিডিয়া বাইট দেওয়া ছাড়া কিছু করছে না। ব্যক্তিগতভাবে বিয়ের শুভেচ্ছাও জানায়নি। সোহিনীর দ্বিতীয় প্রশ্ন, ২০২২-এ রণজয় সিরিয়াল (গুড্ডি) করার পর থেকেই কেন তাঁদের মধ্যে সমস্যা শুরু হল? এই দুই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম রণজয়ের সঙ্গে। জিমে ব্যস্ত নায়ক। প্রাক্তনের এই বয়ান সম্পর্কে অবগতই ছিলেন না তিনি! বেশ খানিকক্ষণ সময় ধরে সোহিনীর বয়ান পড়ে মুখ খুললেন রণজয়।
অভিনেতা বলেন, ‘আমার এটা নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই। আমার সঙ্গে সোহিনীর একটা সম্পর্ক ছিল, সুন্দর একটা সম্পর্ক ছিল। কোনও সম্পর্ক কোনও একটা কারণেই তো ভেঙে যায়। যতক্ষণ ও আমার গার্লফ্রেন্ড বা আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড ছিল আমাকে সেই নিয়ে প্রশ্ন করাই যেতে পারে। এখন ওর বিয়ে হয়ে গেছে। শোভন ওর বর। আমার কোনও কিছু নিয়ে দায় নেই! এটা নিয়ে কথা বললে বারবার অযথা কথা বলে হবে’।
কিন্তু অনেকের অভিযোগ পাবলিক সিম্প্যাথি আদায়ের জন্য আপনি মিডিয়ার সামনে সোহিনীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সত্যি কি? একটু থেমে অভিনেতা যোগ করলেন, ‘আরে যারা ট্রোল করছে, সেটা আমাকে করুক আর ওদের করুক কোনওটাই কাম্য নয়। ওদের বিয়ে হয়ে গেছে, শোভন একজন ভালো মানুষ। ওরা ভালোভাবে জীবন কাটাচ্ছে, সোহিনী বলেছে কেন আমি ওকে সামনে থেকে শুভেচ্ছা জানায়নি, আমি তো মন থেকে চাই ও ভালো থাকুক। সেটা সামনে থেকে বলাটা আমার যুক্তিপূর্ণ বলে মনে হয়নি।
আর আমি তো কোনও মিডিয়াকে কখনও ফোন করে যেচে ওর কথা বলিনি। বরং আমি তো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি নিজের ব্যক্তিগত জীবন তো সবসময় অ্যাভোয়েড করারই চেষ্টা করি। তারপর লোকজন যখন বরংবার প্রশ্ন করেছে তখন এড়িয়ে গেলে লোকে ভাবে তাহলে নিশ্চয় কিছু আছে….আমার ব্যক্তিগত জীবনটা খুব ব্যক্তিগত। মানুয তো কখনও নিরপেক্ষ হতে পারে না। সোহিনীও হতে পারবে না, আমিও পারব না। কথা বললে অসম কথাই বলতে হয়। হয়ত নিজেরটা ভারী করে অন্যেরটা কম করতে হয়, বিশেষত ব্রেকআপের পর। সেক্ষেত্রে আমি তো কথা বলতেই চাইনি। আমি সত্যি মন থেকে চাই ও ভালো থাকুক, ওর ভালো বিয়ে হয়েছে… কেন ভালো থাকবে না, ভালো থাকার অধিকার সবার আছে’।
রণজয়কে শুধু সোহিনী নন, মুখ খুলেছেন তাঁর অপর দুই প্রাক্তনও। সেই প্রসঙ্গে কী বললেন তিনি? রণজয় বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় দিঘা ঘুরতে গিয়েছিলাম। আমি বড় হয়ে যদি আমস্টারডাম যাই….দিঘার স্মৃতি তো আমার মনে রইল, কিন্তু আমি ঘুরতে গেলে শুধু দিঘাই ঘুরতে যাব, ওটা নিয়েই বেঁচে থাকব সেটা তো হতে পারে না। কারণ পরিবর্তনই একমাত্র শাশ্বত। যারা যারা যা যা বলছে, সবারই একটা নিজের মতো করে অতীত আছে। তারা আমার অতীতের সঙ্গে জুড়ে থাকলেও তাদের সব অতীত আমাকে ঘিরেই এটা হতে পারে না। তাদের নিজের মতো করে প্রচুর অতীত আছে। আমি কারুর অতীত ঘাঁটতে চাই না। বিশ্বাস করি না কাউকে ছোট করে নিজেকে বড় হওয়া যায় না’।
খানিক আত্ম-বিশ্লেষণ করে বললেন, ‘আমি আবারও বলব, আমি সত্যি মন থেকে চাই সোহিনী ভালো থাকুক শোভনের সঙ্গে। আর আমার মেসেজ করার উপর তো ওদের ভালো থাকাটা নির্ভর করে না। আমি কে? আই অ্যাম নোবডি, আমি কারুর জীবনের অতীত। আর কেউ নয়। শুধু হয়ত একই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি এইটুকুই’। (উত্তেজনা রণজয়ের গলায়)
গুড্ডি-তে যোগ দেওয়ার পরেই কেন ভাঙল সম্পর্ক? সোহিনীর এই প্রশ্নের কী উত্তর রয়েছে রণজয়ের কাছে? মুচকি হেসে বলেলন, ‘এই উত্তর যদি আমি দেওয়ার কথা ভাবি সেটা অনেকের জন্য ভালো হবে না। সেটা আমি আর চাই না। কারণ, মিডিয়ার মাধ্য়মে হোক বা যে কোনও ভাবেই হোক আমাকে যদি কোনও কারণে দোষী করা হয় তাহলে সত্যি আমার কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ সত্যিটা প্রমাণ করতে হয় না। দ্বিতীয় কথা হল, একটা জিনিস তো মানবেন, পৃথিবীতে কোনওদিন একহাতে তালি বাজে না। আমার কাউকে কিচ্ছু প্রমাণ করার নেই। যার যা ভাববার সে ভাবুক, আমার তাতে কাঁচকলা। এটাই এখন আমার মানসিক অবস্থা।
শেষে বলব, না সোহিনী-শোভনকে ট্রোল করা উচিত, না আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। কাউকে ট্রোল করাটা অপরাধ, সোহিনী-শোভন দুজনেই এটা ডিজার্ভ করে না। আরে বাবা একজনের বিয়ে হয়ে গেছে, তার সঙ্গে আমার নাম কেন যোগ হবে? তার সঙ্গে শুধু তাঁর স্বামীর নাম যোগ হবে। সবাই সবার জীবনে ভালো থাকুক। আমি পৃথিবীতে প্রথম ব্যক্তি নই, যার দু-তিনটে সম্পর্ক ভেঙেছে। আমি তো কখনও দাবি করিনি আমি ভগবান। যা ঘটেছে তার সঙ্গে সত্যি আমার কোনও লেনাদেনা নেই। আমি নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত।
আমি একা থাকি, কারুর সাথে থাকি- তার সঙ্গে এই প্রসঙ্গের কিচ্ছু যায় আসে না। কেউ আমার সম্পর্কে খারাপ কথা বললেও আমি কারুর সম্পর্কে খারাপ কথা বলব না। এটা আমার শিক্ষা। আমার রুচিতে বাঁধে। কে কোথায় বসে কী লিখবে? কী বলবে, তাতে কী এল গেল? একটা দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন। সে জায়গায় একটা মানুষ বসে আমাকে নিয়ে ভেবেছে, দু-মিনিট সময় ধরে এটাই বড় ব্যাপার। আমি কোনও মহিলাকে একবিন্দু অসম্মান করব না। সে যদি আমাকে অসম্মানও করে, তাহলেও আমি করব না।’
(Feed Source: hindustantimes.com)