ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে প্রশ্ন
ত্রয়োদশ ওভারের চতুর্থ বলে হার্দিক পাণ্ডিয়া বোল্ড হন। এরপর দীনেশ কার্তিককে না নামিয়ে ছয়ে ব্যাট করতে পাঠানো হয় অক্ষর প্যাটেলকে। এই সিদ্ধান্তটি অনেকেই মানতে পারছেন না। আইপিএলে ফিনিশার হিসেবে দীনেশ কার্তিকের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৮৩-র উপর। গতকাল পাণ্ডিয়া আউট হলে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৯০। অক্ষর প্যাটেল ১১ বলে ১০ রান করে আউট হন ১৭তম ওভারের শেষ বলে। কার্তিক ২১ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। ব্যাটিং অর্ডারে এই বিস্ময়কর বদলের কারণ যা শ্রেয়স আইয়ার দিলেন তা সাফাই ছাড়া আর কিছু নয়।
পরিকল্পনার অঙ্গ
কটকে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে পাঠানো হয়েছিল শ্রেয়সকে। তিনে নেমে তিনি দলের হয়ে সর্বাধিক রান করেছিলেন, দুটি করে চার ও ছয়ের সাহায্যে ৩৫ বলে ৪০। অক্ষরকে আগে পাঠানো প্রসঙ্গে শ্রেয়স বলেন, এই পরিকল্পনা আমাদের আগে থেকেই ছিল। অক্ষর যখন ব্যাট করতে যান তখন সাত ওভার বাকি ছিল। অক্ষর খুচরো রান নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখতে পারদর্শী। এমনকী সেই সময় প্রথম বল থেকে চালিয়ে খেলার দরকারও আমাদের ছিল না। দীনেশ কার্তিকও স্কোরবোর্ড সচল রাখতে পারেন। তবে ডিকে ১৫ ওভারের পর নেমে যেভাবে ব্যাট করেন তাতে তিনি দলের সম্পদ। ওই সময় তিনি নেমেই চালিয়ে খেলতে পারেন।
ফিনিশার কার্তিক
কার্তিক অবশ্য গতকাল শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে পারেননি। এটা টু-পেসড উইকেটের জন্যই বলে দাবি করেছেন শ্রেয়স। তাঁর কথায়, কটকে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা নিয়েছে পিচ। কার্তিককেও তাই ব্যাটিংয়ের শুরুর দিকে কঠিন পরিস্থিতি সামলাতে হয়। তবে সামনের ম্যাচেও আমাদের পরিকল্পনায় কোনও বদল আসবে না। উল্লেখ্য, কার্তিক গতকাল প্রথম ১৫ বলে ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। কিন্তু তার পরের ছয় বলে দুটি ছয় ও দুটি চার হাঁকান। কার্তিকের এই ব্যাটিংই ভারতকে পৌঁছে দিয়েছিল ১৪৮ রানে। কিন্তু কার্তিককে আগে পাঠানো হলে সেই স্কোরই ১৬০-এর আশেপাশে থাকত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
১২ রান কম
শ্রেয়সও মানছেন এই উইকেটে ১৬০ রান তুলতে পারলে তা ভালো স্কোরই হতো। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার উপর চাপ তৈরি করাও সম্ভব হতো। ভারত যে অন্তত ১২ রান কম তুলেছিল তাও স্বীকার করেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক। উইকেটে কোন বলটা উঠবে বা নামবে সেটা আঁচ করা যাচ্ছিল না। ফলে এই উইকেটে ব্যাট করা যে কঠিনই ছিল সে কথা উঠে এসেছে শ্রেয়সের কথায়। তিনি বলেন, আমি ৩৫টি বল খেলেছি। কিন্তু তারপরও বলতে পারব না উইকেট ঠিক কেমন আচরণ করেছে। আমি শট খেলার সময় টাইমিংয়ে জোর দিচ্ছিলাম। সব কিছুই চেষ্টা করেছি। কিন্তু নতুন ব্যাটারদের ক্ষেত্রে নেমেই শট খেলা এই উইকেট মোটেই সহজ ছিল না। এক প্রান্ত থেকে বল নীচু হচ্ছিল। অন্য প্রান্তে নানারকম বাউন্স হচ্ছিল, বল সিম করছিল। উইকেট চ্যালেঞ্জিং হলেও একেই পরাজয়ের অজুহাত হিসেবে দেখাতে নারাজ শ্রেয়স।
ঘুরে দাঁড়াতে প্রত্যয়ী
তবে এই উইকেটেই বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিতিয়েছেন হেনরিক ক্লাসেন। শ্রেয়স বলেন, ক্লাসেন আমাদের স্পিনারদের ভালোভাবেই টার্গেট করেছিলেন। ভালো লেংথের বলেও ভালো শট খেলেছেন। বল ঘোরেনি, ফলে দাঁড়িয়ে থেকেই তিনি বড় বড় শট খেলেছেন। যে স্ট্রোক খেলছিলেন তা বাউন্ডারি লাইনের অনেক বাইরে গিয়ে পড়ে। সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আত্নবিশ্বাসী শ্রেয়স বলেন, এটা একটা দারুণ চ্যালেঞ্জ। আমাদের উপর ভালোই চাপ থাকছে। কিন্তু আমাদের থামাতে পারে এমন কিছু এখনও দেখতে পাচ্ছি না।
(Source: oneindia.com)