বিয়ের পর পড়তে এলে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ১৯ বছরে বিবাহিত ছাত্রীর জন্য বন্ধ স্কুলের দরজা। তবে, ছাত্রী চাইলে ঘরে বসে পড়াশোনা করতে পারে। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ার একটি ইন্টারমিডিয়েট স্কুলেই ঘটেছিল এমন অদ্ভুত ঘটনা। একাদশ শ্রেণিতে পড়ে এই ছাত্রী। পড়তে পড়তেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাই সে বিবাহিত হওয়ার কারণে স্কুলে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছিল। কারণ উত্তরাখণ্ডের এই স্কুল প্রশাসনের দাবি যে বিবাহিত মেয়েরা স্কুলে আসলে ‘পরিবেশের উপর খারাপ প্রভাব’ পড়ে। অন্য পড়ুয়াদের মনে প্রভাব পড়ে। তাই ছাত্রীকে স্কুলের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সে যাতে বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা শেষ করে ফেলে।
আসল ঘটনাটি অদ্ভুত
উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ার ঘটনার এটি। সেখানকার নিয়াজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সিমরন স্থানীয় এলাকার আনন্দ সিং সরকারি গার্লস ইন্টার কলেজে পড়ে। ২৮ শে জুলাই বিয়ে করেছে ১৯ বছর বয়সী সিমরন। এরপর সে নিজের বাকি পড়াশোনা শেষ করতে স্কুলে আসলে, ক্লাসে বসতে দেওয়া হয়নি। পরিবারের হাজারও অনুরোধ সত্ত্বেও, স্কুল প্রশাসন কোনওরকম সহযোগিতা করেনি। স্কুলে না এসে, বাড়িতে পড়তে বলায়, এ বিষয়ের বিরুদ্ধে ছাত্রী ও তার পরিবার মুখ্য শিক্ষা আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়েছিল।
চিঠিতে সিমরন বলেছিল যে একদিকে সরকারের বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্প রমরমিয়ে চলছে। অন্যদিকে স্কুল প্রশাসনের এমন নিয়ম সাধারণ জীবনে বাধা দিচ্ছে। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মুখ্য শিক্ষা আধিকারিক আম্বা বালোদি বলেছিলেন যে বিবাহিত মহিলাকে পড়াশোনা করতে বাধা দেওয়া নিয়ে এখনও তেমন কোনও আইন প্রণয়ন করা হয়নি।
স্কুলের অধ্যক্ষ কী বলছেন
স্কুলের অধ্যক্ষ বিজয়া পন্তের এক সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, এই প্রথম কোনও বিবাহিত নারী স্কুলে এসে পড়তে চেয়েছে। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী, বিবাহিতদের এখানে পড়তে দেওয়া হয় না। কারণ এটি অন্য ছাত্রদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হয়। তবে এ প্রসঙ্গে যদি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়ে দেয়, তাহলে হয়ত ক্লাসে আবার আগের মতো বসে পড়াশোনা করার অনুমতি দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর অবশেষে স্কুলে নিয়মিত পড়ার সুযোগ পেয়েছে সিমরন। বৃহস্পতিবার থেকে সে সময়মতো স্কুলে যাচ্ছে। সিমরনের স্কুলে যাওয়ায় খুশি স্বজনরা। জেলা শিক্ষা অফিসার চন্দন সিং বিষ্ট জানান, সিমরন নিয়মিত পড়াশোনা করছে। তাঁদের কোনও ধরনের সমস্যা নেই। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নিয়ম-কানুন না জানার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
(Feed Source: hindustantimes.com)