জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: দেশভাগের যন্ত্রণা-কে সেলুলয়েডে বন্দি করে গিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশে ‘মেঘে ঢাকা তারা’র মতো কালজয়ী সিনেমার স্রষ্টা ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়িটি ভেঙে ফেলা হল! কবে? ৬ ও ৭ আগস্ট দুই দিনে সেই বাড়ি ভেঙে ফেলার অভিযোগ ওঠেছে।
ভারতীয় সিনেমার প্রবাদপ্রতিম ব্য়ক্তিত্ব ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহী শহরের মিয়াপাড়ায়। শৈশব, কৈশোর ও তরুণ বয়সে অনেকখানি সময় ওপার বাংলাতেই কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই বাড়িটি এখন আর নেই! স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের অভিযোগ, হাসিনা সরকারের পতনের পর শহরের বেশ কয়েকটি পুরনো স্থাপত্য ভেঙে ফেলেছেন হোমিওপ্যাথিক কলেজের অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান। বাদ যায়নি ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজরিত বাড়িটিও।
স্থানীয় সাংস্কৃতিককর্মীরা জানিয়েছেন, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেছেন ঋত্বিক। পরবর্তীকালে সপরিবারে চলে যান কলকাতায়। ১৯৮৯ সালে তাঁর পৈতৃক বাড়ির কিছুটা অংশ রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজকে লিজে দিয়েছিল বাংলাদেশের তত্কালীন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকার। সেখানে কলেজ তৈরি হলেও, দক্ষিণ দিকের পুরনো ঘরগুলি অক্ষতই ছিল।
এর আগে, ২০২০ সালে সাইকেল গ্য়ারেজ তৈরি জন্য ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত ছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবাদে ঝড় ওঠে বাংলাদেশে। এরপর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাড়িটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। স্রেফ কমিটি তৈরিই নয়, ঘটক পরিবারে ব্য়বহৃত বাড়ির যেটুকু অংশ তখনও অক্ষত ছিল এবং কুয়ো চিহ্নিতও করা হয়। পুরনো বাড়িটি আগের অবস্থায় সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু । এরমধ্যেই গত ৬ ও ৭ আগস্ট বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল।
আজ, বুধবার সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নথি ওই বাড়ি ও জেলা প্রশাসকের কাছেও যান রাজশাহীর শহরের সাংস্কৃতি কর্মীরা। সাংবাদিক বলেন, ‘বাড়িটি ভাঙলে অধ্যক্ষকে পদত্যাগ করতে হবে’। যদিও ঋত্বিক ঘটকে বাড়ি ভাঙার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হোমিওপ্য়াথিক কলেজের অধ্যক্ষ। ছাত্রের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছেন তিনি।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ বলেন, ‘ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়িটি ভেঙে ফেলার কথা শুনলাম। সাংস্কৃতিককর্মীরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছি। যারাই এই বাড়ি ভাঙুক, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাড়িটির যা অবশিষ্ট আছে তা সংরক্ষণ করা হবে’।
(Feed Source: zeenews.com)