জন্মসূত্রে সোনার চামচ মুখে ওঠেনি তাঁর, নিজের তাগিদেই উঠেছেন উচ্চতায়। এখন তিনি চিনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। নাম কলিন হুয়াং। মুকেশ আম্বানি কিংবা আদানিদের কাঁধে কাঁধ মেলানোর দৌড়ে এখন অনেক এগিয়ে তিনি। বাবা ধিরুভাই আম্বানির কাছ থেকে ব্যবসা পেয়েছিলেন মুকেশ আম্বানি। তারপর কঠোর পরিশ্রম করে সেই ব্যবসাকে বিরাট উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন। এখন শুধু দেশের নয়, এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি।
অথচ এই কলিন হুয়াং কোনও ধুমধাম ছাড়াই এত টাকা উপার্জন করেছেন যে তিনি চিনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন। কলিন এখন চিনের একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তাঁর কোম্পানির আইপিওও এনেছেন। আমেরিকায় একটি নতুন কোম্পানিও চালু করেছেন। তবে, কলিনের এই বটগাছের মতো বড় হয়ে মাথা উঁচু করে দৌড়োনোর যাত্রাটা কিন্তু এতটাও সহজ ছিল না। কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। চিনের জল ব্যবসার রাজা তথা সবচেয়ে ধনী ঝং শানশানকে পেছনে ফেলে, এশিয়ার ধনীদের তালিকায় চার নম্বরে উঠে এসেছেন। বর্তমানে প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকার মালিক কলিনের গল্পও একই রকম অনুপ্রেরণাদায়ক।
কীভাবে শুরু করেছিলেন কলিন
কলিন ১৯৮০ সালের জানুয়ারিতে হ্যাংজুতে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মা একটি কারখানায় কাজ করতেন। বাবা-মায়ের কাছ থেকেই তিনি শিখেছিলেন যে অর্থ উপার্জনের জন্য ঠিক কতটা পরিশ্রম করা জরুরি। হ্যাংজু বিদেশী ভাষা স্কুলে পড়াশোনা করেন। ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে মেজর করেছেন কলিন। পরে ২০০৪ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য আমেরিকায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছিলেন।
গুগল মাইক্রোসফটের সঙ্গে কাজ করেছেন
পড়াশোনা শেষ করে, গুগল এবং মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানিতে কাজ করেছেন কলিন। সে সময় প্রযুক্তি এবং ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন তিনি। কয়েক বছর কাজ করার পর ব্যবসায় চলে আসেন। ২০১৫ সালে, কলিন পিন্ডুওডুও নামে একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম শুরু করেন। চিনের দ্রুত বর্ধনশীল প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছিল এটি। গ্রাহকদের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছিল অল্প দিনেই।
বিদেশেও রমরমিয়ে চলে কলিনের ব্যবসা
চিনে সাফল্যের পর কলিন তাঁর ব্যবসা নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। ২০১৮ সালে আইপিও এনে, সংগ্রহ করেন ১.৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, কলিন চিনের বাইরে গিয়ে আমেরিকাতেও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম টেমু শুরু করেছিলেন। ফুলে ফেঁপে উঠেছিল এই প্ল্যাটফর্মটি, যা এখন আমেরিকার শীর্ষ শপিং অ্যাপগুলির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। বাজারের অবস্থান: পিন্ডুওডুও-এর এখন প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। ২০২৩ সালে ১৪৭.৬ বিলিয়ন ইউয়ান আয়ের রিপোর্ট করেছে কোম্পানি, যা আগের বছরের থেকে ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
(Feed Source: hindustantimes.com)