‘সিবিআই তদন্তে ক্লান্ত’, চরম হতাশা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায়

‘সিবিআই তদন্তে ক্লান্ত’, চরম হতাশা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায়

#কলকাতা: তিনিই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ কলকাতা হাইকোর্টের সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই এ দিন এজলাসে বসে আক্ষেপ করলেন, সিবিআই-এর তদন্তের গতি দেখে তিনি ক্লান্ত৷ এমন কি, সিবিআই-এর বদলে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে তদন্তভার দিলে তা বেশি কার্যকরী হত কি না, এ নিেয়ও সংশয় প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়৷

এসএসসি এবং প্রাইমারি টেট-এর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে দশটি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ এর মধ্যে আটটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে, দু’টি প্রাইমারি টেট-এ৷ গতকালও প্রাইমারি টেট-এর একটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়৷

এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সেই মামলারও নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে এই মামলায় হাইকোর্টে সওয়াল করছেন আইনজীবী এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এ দিন অন্য একটি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তখনই তাঁর সঙ্গে কথা শুরু হয় বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই সূত্রে সিবিআই তদন্ত নিয়ে হতাশা ঝরে পড়ে বিচারপতির গলায়৷

হতাশার সুরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘সিবিআই কিছুই করছে না। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলাম৷ ৬ মাস কেটে গেলেও সিবিআই এখনও দুর্নীতির রহস্যভেদ করতে পারেনি৷ আমি সিবিআই-এর কাজ দেখে ক্লান্ত হতাশ৷ প্রায় ৭ মাস কেটে গেলেও সিবিআই কিছুই করতে পারেনি। এটা কী ধরনের তদন্ত? এই তদন্তে কোন উদ্দেশ্য সফল হবে? আমি সিবিআই নিয়ে বিশেষ নোট তৈরি করবো।’

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হতাশা উগড়ে দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘আমি এখন সকালে ক্লান্ত অনুভব করি৷ আর কত? পারা যাচ্ছে না আর।

আর কতগুলো সিবিআই নির্দেশ হবে? ডজন সিবিআই নির্দেশ। লাভ কী হবে নিজেই ভাবছি। মনে করছি এর থেকে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট কি ভালো ছিল? নিজেকেই প্রশ্ন করছি। সিবিআই-এর কোনও কর্মী নেই। কর্মী সঙ্কটে ভুগছে সিবিআই।’

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সিবিআই-এর তদন্ত করা মামলায় কনভিকশন রেট মাত্র ৭.৪ শতাংশ৷ সিবিআই নিয়ে সংবাদমাধ্যম সাত- দশদিন মাতামাতি করে৷ সংবাদমাধ্যম যতদিন দেখাবে ততদিনই, তার পরে সিবিআই কোথায়?’ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও দাবি করেন, তদন্তের নিষ্পত্তি এবং অভিযুক্তকে শাস্তিদানের নিরিখে সিবিআই-এর তুলনায় সিট-এর সাফল্যের হার অনেক বেশি৷

কথোপকথনের মাঝেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘পার্থদা (চট্টোপাধ্যায়) বিচক্ষণ মানুষ। আমি পার্থদার বিরুদ্ধে নই। ব্যাপক অনিয়ম নিয়োগে তাই সিবিআই দিয়েছি।’

Published by:Debamoy Ghosh

(Source: news18.com)