১০০ বছর বেঁচে থাকার স্বপ্ন সকলেরই থাকে। কিন্তু বেঁচে থাকলেই হবে না, সুস্থ এবং সবল ভাবে বেঁচে থাকলেই তবেই তাকে বেঁচে থাকা বলে। তবে ৭০ বছর পেরোতে না পেরোতেই হাজার রকম শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে যায় মানুষ, যার ফলে বাঁচার ইচ্ছে ধীরে ধীরে কমে যায়।
একদিকে বয়স হতে না হতেই মানুষ যখন বিভিন্ন রোগে জর্জরিত তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন মহিলা ১০২ বছর বয়সে স্কাইডাইভ করে পালন করলেন নিজের জন্মদিন। নিঃসন্দেহে এটি সকলের কাছে একটি অনুপ্রেরণা।
ম্যানেট বেলি, যার বর্তমান বয়স ১০২ বছর। তিনি স্কাইডাইভ করে সব থেকে বয়স্ক ব্রিটিশ স্কাই ডাইভার হিসেবে নিজের নাম নথিভুক্ত করে ফেলেছেন, তাও আবার ১০২ বছরের জন্মদিনে। বেলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেনহল গ্রিনের বাসিন্দা।
গত রবিবার অর্থাৎ ২৫ আগস্ট নিজের ১০২ তম জন্মদিন পালন করার জন্য এই বিশেষ রোমাঞ্চকর খেলাটিকেই তিনি বেছে নিয়েছিলেন। তবে এই বিশেষ খেলাটিকে বেছে নেওয়ার অন্যতম কারণ হলো তিনি সামরিকভাবে অভিজ্ঞ। স্বাভাবিকভাবেই অন্য আর পাঁচটা মানুষের থেকে তাঁর মনের জোর যে অনেকটাই বেশি তা বলাই বাহুল্য।
বেলির অবিশ্বাস্য এই কীর্তি ভিডিয়ো সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ঝড়ের গতিতে। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বেলি প্লেন থেকে ঝাঁপ মারছেন নির্ভীকভাবে। প্রশিক্ষকের সাথে একটি নির্মল হাসি ছুঁড়ে দিয়ে কি সুন্দর নির্ভীকভাবে উড়োজাহাজ দেখে লাফ মারলেন তিনি, তাঁকে দেখে মনে হবে যেন অষ্টাদশী কোনও কন্যা।
কেন করলেন এই কাজ?
এই অসাধারণ কাজটি করে ১০,০০০ পাউন্ডের বেশি অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি। যদিও তাঁর লক্ষ্য ছিল ৩্০,০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করা। এই বিপুল অর্থ তিনি ইস্ট অ্যাংলিয়ান এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, মোটর নিউরন ডিজিজ এসোসিয়েশন এবং স্থানীয় বেনহল এবং স্টার্নফিল্ড প্রাক্তন সেনা সদস্য এবং গ্রাম ক্লাবের জন্য সংগ্রহ করছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেলি মিশরে মহিলা রয়্যাল নেভার সার্ভিসের সাথে কাজ করেছিলেন। স্কাইডাইভিং করার আগে তিনি বলেছিলেন, ‘সব সময় নতুন কিছু আপনাকে খুঁজে নিতে হবে। তাই আমি আজ এই সিদ্ধান্ত নিলাম।’ এই অসাধারণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বেলি বলেন, ‘যখন লাফ দেওয়ার মুহূর্ত আসে, তখন আমার মনে হয় আমার আর কিছু করার নেই। আমি চোখ বন্ধ করলাম এবং আমার মনে হল আমি দ্রুতগতিতে কোথাও ভ্রমণ করছি।’
১০২ বছর বয়সে এই অসাধারণ কাজটি করার আরও একটি কারণ হলো তিনি একবার তাঁর বাবার বন্ধুর কাছ থেকে শুনেছিলেন ৮৫ বছর বয়সে প্যারাসুট জাম্পিং করার কথা। বেলির মনে হয়েছিল, ৮৫ বছর বয়সে যদি কেউ প্যারাসুট জাম্পিং করেন তাহলে তিনি কেন ১০২ বছর বয়সে এই কাজ করতে পারবেন না? মনে অদম্য ইচ্ছা নিয়ে তিনি অবশেষে এই অসাধ্য সাধন করেই ফেললেন এবং নিজের নাম ইতিহাসের পাতায় খোদাই করে ফেললেন সারা জীবনের জন্য।
(Feed Source: hindustantimes.com)