সেলিম রেজা: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও দেশ ছাড়ার পর আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশের সাথে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সকল প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এরই মধ্যে উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক প্রকল্প নিয়ে ভারতের ভাবনা।
ভারতের পাঁচটি বিদ্যুৎ সংস্থার বাংলাদেশের কাছে মোট বকেয়া অর্থের পরিমাণ এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ‘আদানি পাওয়ারে’রই ৮০ কোটি ডলার পাওনা। এই সংস্থাটি ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় অবস্থিত তাদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনের পুরোটাই বাংলাদেশে রপ্তানি করে থাকে।
এছাড়াও এসইআইএল এনার্জি, পিটিসি ইন্ডিয়া, এনটিপিসি (ডিভিসি ও ত্রিপুরা) ও পাওয়ার গ্রিডের মতো আরও বিভিন্ন সংস্থারও বাংলাদেশের কাছে কোটি কোটি ডলার পেমেন্ট বাকি রয়ে গেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা যে এই অর্থ পরিশোধের সম্ভাবনাকে ব্যাহত করতে পারে। ইতিমধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালও জানান, গত ৫ অগাস্টের পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারতের প্রায় সব দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের কাজ থমকে গেছে, কর্মীরাও অনেকে ভারতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে’ এই প্রকল্পগুলোর কাজ যে চট করে আবার শুরু হচ্ছে না, সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশের রামপালের মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বা নুমালিগড়-পার্বতীপুর জ্বালানি পাইপলাইনের মতো বহু প্রকল্পের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তাহলে কি বাংলাদেশের জ্বালানি, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো-সহ বিভিন্ন সেক্টরে ভারতের বিভিন্ন সংস্থার বিপুল বিনিয়োগ এখন ঝুঁকির মুখে? বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি বা সমঝোতা পুনর্বিবেচনা করার কথা বললেও বাংলাদেশে কোনও ভারতীয় প্রকল্প কিন্তু বাতিল ঘোষণা করেনি। তাছাড়া এই ধরনের বিনিয়োগে সব সময় একটা ‘সভারেইন গ্যারান্টি’ বা সার্বভৌম নিশ্চয়তার আওতায় থাকে। অর্থাৎ প্রকল্প বাতিল করা হলে রাষ্ট্রের ওপর সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার দায় বর্তায়। এধরনের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানির ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন কোর্ট বা আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যাওয়ার রাস্তাও খোলা থাকে।
(Feed Source: zeenews.com)