সন্তানদের লালন পালন করার জন্য বহু স্বার্থত্যাগের সম্মুখীন হতে হয় পিতা-মাতাকে। কখনও নিজের পছন্দের খাবার, কখনও পছন্দের জিনিস ছেড়ে দিতে হয়। শিশুদের পড়াশোনার ক্ষেত্রেও বাবা মাকে করতে হয় কিছু স্বার্থত্যাগ যার মধ্যে অন্যতম হলো টিভি বা মোবাইল থেকে দূরে থাকা। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে কথা বলেন ইনফোসিস-এর প্রতিষ্ঠাতা নাগাভার রামরাও নারায়ণ মূর্তি।
সন্তানদের পড়াশোনা করানোর সময় ঠিক কী কী নিয়ম পালন করতে হয় অভিভাবকদের, এই প্রশ্ন করায় নারায়ণ মূর্তি বলেন, ‘আমার বাড়িতে সন্ধ্যা ৬:৩০ থেকে রাত ৮:৩০ পর্যন্ত ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করত। ওই সময়ে আমাদের বাড়িতে কেউ টেলিভিশন দেখত না। রাতের ডিনারের পর রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পরিবারের সকলে মিলে একসঙ্গে পড়াশোনা করতাম।’ শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও দুই সন্তানের পড়াশোনার জন্য প্রত্যেকদিন তাঁদের সাড়ে তিন ঘন্টার বেশি সময় দিতেন তাঁরা। মোবাইল বা টিভি নয়, বরং এই সময়টা সন্তানদের সঙ্গেই কাটাতেন তাঁরা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রীর যুক্তি ছিল, আমি যখন টিভি দেখছি তখন কখনওই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কথা বলতে পারি না। তাই ছেলে মেয়েরা যখন পড়াশোনা করত, তখন আমরাও টিভি না দেখে পড়াশোনা করতাম ওদের সাথে। বাবা মায়েরা যদি সিনেমা দেখেন এবং বাচ্চাদের যদি বলেন, ‘তোমরা পড়াশোনা করো’,তাহলে কখনওই সেই বাচ্চাটি পড়াশোনা করবে না।’
কোচিং ক্লাস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নারায়ন মূর্তি বলেন, ‘যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকদের কথা মন দিয়ে শোনে, তাদের কখনওই কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করার প্রয়োজন হয় না। কোচিং সেন্টারে ক্লাস করে পরীক্ষায় পাস করার পন্থা সম্পূর্ণ ভুল। একজন ছাত্র যদি শিক্ষক এবং অভিভাবকদের কথা মন দিয়ে শোনে তাহলে বাড়ির বাইরে গিয়ে কোচিং সেন্টারে ক্লাস করার কোনও প্রয়োজনই হয় না।’
প্রসঙ্গত, নারায়ণ মূর্তি এবং সুধা মূর্তির দুই সন্তান অক্ষতা এবং রোহন। অক্ষতা নারায়ণ মূর্তি একজন ব্রিটেন ভিত্তিক ভারতীয় ব্যবসায়ী, বেশভূষাশৈলী নকশাকার এবং উদ্যোগী পুঁজিবাদী। অন্যদিকে রোহন ভারতের মূর্তি ক্লাসিক্যাল লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা এবং ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন কোম্পানি সোরোকোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, একমাত্র জামাই ঋষি সুনাক একজন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি একজন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও যুক্তরাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা।
(Feed Source: hindustantimes.com)