‘হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা করে না, দাঙ্গা করে কিছু লোভী নেতা’, বললেন মমতা

‘হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা করে না, দাঙ্গা করে কিছু লোভী নেতা’, বললেন মমতা

কলকাতা: পয়গম্বর বিতর্কের আঁচ পড়েছে বাংলাতেও (Prophet Remarks Row)। আগুন জ্বলেছ হাওড়ার একাধিক এলাকায়। বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনাও সামনে এসেছে। বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও থামানো যায়নি অশান্তি। তা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তাঁর মতে, জীবনেরই নিশ্চয়তা নেই যখন, সেখানে মারামারি, খুনোখুনি, ঘৃণা ছড়িয়ে কোনও লাভ নেই। সাধারণ মানুষ নন, রাজনৈতিক নেতারাই দাঙ্গা করেন বলেও মন্তব্য করলেন তিনি।

পয়গম্বর বিতর্কের আবহে শান্তির বার্তা মমতার

বৃহস্পতিবার দক্ষিণেশ্বরে পুস্তক উদ্বোধনের পাশাপাশি লাইট অ্যান্ড সাউন্ড অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয় মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে। সেখানেই পয়গম্বর বিতর্কের জেরে অশান্ত পরিবেশ নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, “আজ আছি, কাল নেই যখন, খামোকা ঝগড়া করব কেন! যুদ্ধ, খুন কেন করব! কেন পরস্পরের বিরুদ্ধে ঘৃণা ভাষণ দেব! সবাইকে বুঝতে হবে, ধর্ম একটা নয়। সব ধর্মের কথাই বলছি। দাঙ্গা কখনও হিন্দু করে না। করেনা মুসলমানও। শিখ, খ্রিস্টানও দাঙ্গা করে না। দাঙ্গা করে কিছু লোভী নেতা, যাঁদের মাথা নোংরা ডাস্টবিনে ভর্তি। তা থেকেই জঞ্জাল তৈরি করে আগুন লাগান ওঁরা, গাড়ি পোড়ান, যখন তখন বসে পড়েন। এ আবার কী! কারও সমালোচনা করছি না। কিন্তু আমাদের সময় কখনও হয়েছে এমন?”

মমতার কথায়, “মস্তিষ্কই আমাদের এগিয়ে দেয়। তখনই হৃদয় থেকে কথা বেরোয়। মস্তিষ্ককে মানবিকতার ভাণ্ডার করে তোলা উচিত, ডাস্টবিন নয়। কিছু লোক রয়েছেন, সারা ক্ষণ কুচুটেপনা করছেন, কৈকেয়ী-মন্থরার মতো। কাজকর্ম নেই। মস্তিষ্ক থেকে হৃদয়ে যে মানবিকতার সঞ্চার ঘটবে, সেটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মাথাটাই তো ডাস্টবিন হয়ে গিয়েছে! খারাপ জিনিস ঢেলে দিচ্ছেন।”

অর্থবল, পেশীবলের জোরেই কিছু মানুষ কুৎসা করছেন বলেও মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, “অর্থবল, পেশীবল কখনও সবসময় মানবিকতার জন্ম দেয় না। যে হৃদয়ে মানবিকতা নেই, তাকে আমি মরুভূমি বলি। উল্টোপাল্টা বললেই হবে! হিন্দু ধর্ম কোথা থেকে এসেছে! তপোবনের মুনি-ঋষিরা ঋগ্বেদ, সাম, যজু, অথর্ব, বেদ-বেদান্ত থেকে কী বলেছিলেন? রামকৃষ্ণ পরমহংস বলেছিলেন, টাকা মাটি, মাটি চাকা। উনি টাকার স্বরূপ বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। টাকার প্রয়োজন নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু কাল যদি না থাকি আমি, তার কী মূল্য!”

নূপুর শর্মার মন্তব্য উত্তার হয় দেশের একাধিক রাজ্য

উল্লেখ্য, পয়গম্বর মহম্মদকে নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিজেপি-র প্রাক্তন নেত্রী নূপুর শর্মা। তার পরই দেশের একাধিক জায়গায় অশান্তি মাথাচাড়া দেয়। তার প্রভাব পড়ে বাংলাতেও। পর পর বেশ কয়েক দিন সেখানে পথ অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৪৪ ধারা জারি করতে হয়। সাময়িক বন্ধ রাখতে হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। মুর্শিদাবাদেও অশান্তি মাথাচাড়া দেয়। তার জন্য বিজেপি-কেই সরাসরি দায়ী করেন মমতা। তাদের নেত্রীর মন্তব্যের দায় কেন সাধারণ মানুষকে নিতে হবে, প্রশ্ন তোলেন তিনি।

(Source: abplive.com)