‘তুমি সাগরের ঢেউয়ে….’, অনশনমঞ্চে মৌসুমী ভৌমিকের গান ভাইরাল, কাঁদলেন ডাক্তারা

‘তুমি সাগরের ঢেউয়ে….’, অনশনমঞ্চে মৌসুমী ভৌমিকের গান ভাইরাল, কাঁদলেন ডাক্তারা

ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনে সমর্থন আরও জোরদার হচ্ছে। সমাজের নানা স্তরের মানুষজন এই আন্দোলনের তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। বাদ পড়ছেন না তারকাও। তাঁদের এই অনশনে সামিল হয়েছেন বিনোদন জগতের একটা বড় অংশ। তাঁদের প্রতিবাদীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ময়দানে নামতে দেখা গিয়েছে। তারকারা প্রতিনয়ত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। পাশাপাশি তাঁদের হয়ে প্রতিবাদের ডাকও দিয়েছেন। আর এবার তাঁদের সেই প্রতিবাদের সামিল হলেন সঙ্গীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিক।

বিজয়ার আবহেই তাঁকে দেখা গেল ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে। রবিবার সেখানে যান তিনি। গেয়ে শোনান তাঁর বিখ্যাত গান – ‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি…’। দুর্গাপুজো আর উৎসবের মরশুমে যখন মেতে গোটা শহর, তখন ধর্মতলায় ধরা পড়ল এই ছবি। আর জি কর কাণ্ডের সুবিচার চেয়ে পথে আমজমতা, আর তাঁদের সঙ্গে প্রতিবাদ উদ্দীপ্ত কন্ঠে মৌসুমী ভৌমিকের গান। তাঁর সেই গান শুনে আবেগে ভাসলেন অনশনকারীরা। তাঁরা ধরে রাখতে পারলেন না তাঁদের চোখে জল। গায়িকার পাশে বসেই কেঁদে ফেললেন এই প্রতিবাদের অন্যতম পরিচিত মুখ অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার অর্ণব মুখোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, বাংলা সঙ্গীতজগতে মৌসুমী ভৌমিকের জনপ্রিয়তা যে কতখানি তা নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। তবে কেবল গান নয়, প্রতিবাদেও থেকেছেন তিনি। নানা ঘটনায় হয়েছেন সোচ্চার। তাঁর গানেও সেই প্রতিবাদের ভাষা বারবার উঠে এসেছে। তাই জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে তাঁর এই সমর্থন যে এই প্রতিবাদের আগুনকে আরও খানিকটা ছড়িয়ে দিল তা বলাই বাহুল্য।

উল্লেখ্য শুরু থেকেই আরজি করের ঘটনায় প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীও। এই মুহূর্তে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন আন্দোলনেও পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাঁর। ধর্মতলা চত্ত্বরের সেই অনশন মঞ্চেও গিয়েছিলেন একাধিকবার। এমনকি জুনিয়র ডাক্তারদের অরন্ধনের ডাককেও সমর্থন জানানোর আমন্ত্রণ জানিয়ে পোস্ট করেছিলেন সুদীপ্তা। সম্প্রতি জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবিকে সকলের সামনে তুলে ধরছেন অভিনেত্রী।

১০ দফা দাবিগুলি ঠিক কী কী?

১) দীর্ঘসূত্রিতায় বিভ্রান্ত না করে দ্রুত ও স্বচ্ছতার সাথে অভয়ার ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে।

২) স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রশাসনিক অক্ষমতা ও দুর্নীতির দায় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে নিতে হবে এবং স্বাস্থ্যসচিবকে অবিলম্বে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।

৩) অবিলম্বে রাজ্যের সমস্ত হাসপাতাল ও মেডিকাল কলেজে কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৪) প্রতিটি মেডিকাল কলেজ ও হাসপাতালে ডিজিটাল বেড ভ্যাকান্সি মনিটর চালু করতে হবে।

৫) অতি দ্রুত সব কটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব সহ কলেজ ভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠন করে প্রয়োজনমাফিক সিসিটিভি, অন কল রুম, বাথরুমের সাথে হেল্পলাইন নম্বর, প্যানিক বোতামের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬) হাসপাতালগুলিতে পুলিশি সুরক্ষা বাড়াতে হবে। সিভিক ভলেন্টিয়ার নয়, স্থায়ী পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী নিয়োগ করতে হবে।

৭) হাসপাতালগুলিতে ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের শূন্যপদগুলি অবিলম্বে পূরণ করতে হবে৷

৮) প্রতিটি মেডিকাল কলেজে থ্রেট সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে এনকোয়ারি কমিটি বসিয়ে তাদের শাস্তি দিতে হবে। রাজ্যস্তরেও এনকোয়ারি কমিটি তৈরী করতে হবে।

৯) অবিলম্বে রাজ্যের প্রতিটি মেডিকাল কলেজে ছাত্রসংসদ নির্বাচন করতে হবে। সব কটি কলেজে আর ডি এ কে স্বীকৃতি দিতে হবে। কলেজ/হাসপাতাল পরিচালনার সব কটি কমিটিতে ছাত্রছাত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে হবে।

১০) WBMC ও WBHRB-এর অভ্যন্তরে যে ব্যাপক দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ আছে তার সাপেক্ষে দ্রুত তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

(Feed Source: hindustantimes.com)