বাংলাদেশে ফের ছাত্র বিক্ষোভ! নয়া বিশ্ববিদ্য়ালয়ের দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন

বাংলাদেশে ফের ছাত্র বিক্ষোভ! নয়া বিশ্ববিদ্য়ালয়ের দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন

গত জুলাই, অগাস্টের তীব্র আন্দোলন ও তার জেরে হওয়া সরকারি পালাবদলের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।

সোমবার স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে ঢাকা শহরে জমায়েত, মিছিল ও মানববন্ধন করেন সাতটি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। যার ফলে কাজের দিনে চরম ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় নিত্যযাত্রী ও পথচলতি মানষজনকে।

প্রথম আলো সংবাদপত্রের ডিজিট্যাল সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এদিন স্থানীয় সময় সকাল ১১টা থেকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন সাতটি কলেজের পড়ুয়ারা। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, স্থানীয় বিকেল সাড়ে তিনটের সময়েও সেই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি ওঠেনি।

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বিক্ষোভকারীরা রাজধানী ঢাকার নীলক্ষেত ও সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে রেখেছেন। ফলে সেখানে যান চলাচল একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। যার রেশ গড়িয়েছে শহরের অন্যান্য অংশেও।

বহু জায়গাতেই দেখা গিয়েছে, নিত্যযাত্রীরা বাস, রিকশা থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেছেন। কারণ, তা না হলে গন্তব্যে পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব।

কী দাবিতে এই বিক্ষোভ?

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ২০১৭ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানী শহরের সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু, ‘অপিকল্পিত’ সেই সিদ্ধান্তে কোনও লাভ হয়নি। বস্তুত, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নিয়ে এই কলেজগুলিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়েছিল, গত সাত বছরেও তা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।

তাই, এই সাত কলেজের পড়ুয়ারা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত থাকতে রাজি নন। বদলে তাঁদের দাবি, এই সাতটি কলেজের জন্য আলাদা ও স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্ত শাসনের অধিকার দিতে হবে।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, এই দাবি সামনে রেখে ইতিমধ্যেই বহুবার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। কিন্তু, লাভ কিছুই হয়নি। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামতে হয়েছে তাঁদের।

বিক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের তিন প্রস্তাব:

বিক্ষোভকারীরা তাঁদের দাবি আদায়ের জন্য তিনটি প্রস্তাব সামনে এনেছেন। প্রথমত, সংশ্লিষ্ট সাতটি কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত করার লক্ষ্যে দ্রুত একটি সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, সেই সংস্কার কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে সাতটি কলেজের শিক্ষক, পড়ুয়া ও অন্য সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শুধুমাত্র এই সাতটি কলেজের সমন্বয়েই একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা তৈরি করতে হবে।

এবং তৃতীয়ত, এই পরিবর্তনের ফলে যাতে পড়ুয়াদের পড়াশোনায় কোনও সমস্য়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে সমন্বয় কমিটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

কোন সাতটি কলেজ এই পরিবর্তন চাইছে?

যে সাতটি কলেজ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকতে চাইছে না, সেগুলি হল – ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবারের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে যাতে নতুন করে অশান্তি না তৈরি হয়, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।

(Feed Source: hindustantimes.com)