ডাক্তারি পড়তে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়ছে পড়ুয়ারা। মেডিক্যাল কলেজগুলোর বেশি ফি-এর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকেরা। এমন পরিস্থিতিতে কড়া পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেছে তামিলনাড়ু সরকার।
রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমএ সুব্রামানিয়ানের মতে, যে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজগুলি খুব বেশি টাকা নেয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে তামিলনাড়ু সরকার। তিনি বলেছিলেন যে অযৌক্তিকভাবে বেশি ফি নেওয়া নিয়ে কলেজগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে দু’ টি অভিযোগ। রিভিউ করার জন্য এই প্রত্যেকটি অভিযোগ ফি কমিটির কাছে পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।
জুলাই মাসে, বিচারপতি আর. পঙ্গিয়াপ্পানের নেতৃত্বে একটি কমিটি পরামর্শ দিয়েছিল যে এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সের টিউশন ফি বাড়ানো উচিত নয়। এরপরেই তারা সিদ্ধান্ত নেয়, যে কলেজগুলো নিজেরাই ফান্ডিং করে, সেই কলেজগুলিতে সরকারি কোটার মাধ্যমে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য ফি ৪.৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ধার্য করা হবে। ম্যানেজমেন্ট কোটার পড়ুয়াদের জন্য, ফি ১৩.৫ লক্ষ টাকা, এবং এনআরআই কোটার জন্য, এটি ২৪.৫ লক্ষ টাকা ধার্য হবে।
সুব্রামনিয়ান আরও জানান যে বেসরকারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ফি বেশি। কলেজগুলি এই বছর তাদের ফি বাড়াতে চেয়েছিল, কিন্তু কমিটি সায় দেয়নি। তবে, নির্ধারিত ফিতে হোস্টেল, মেস এবং পরিবহন চার্জ অন্তর্ভুক্ত নেই। তাই কলেজগুলি চাইলে এর জন্য আলাদাভাবে চার্জ করতে পারে।
তবে, কলেজগুলি অনেক বেশি চার্জ নিলে, অভিভাবকরা প্রমাণ সহ অভিযোগ করতে পারেন। তখনই কমিটিকে সেই কলেজগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে জানান তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই ফি কমিটির দায়িত্বে রয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রাক্তন উপাচার্য, মেডিক্যাল এডুকেশন ডিরেক্টর এবং একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
যদিও, অভিভাবক এবং স্টুডেন্ট কাউন্সিলরদের দাবি, কমিটির এই সিদ্ধান্ত খুব বেশি সাহায্য করতে পারবে না। গত বছরও, কমিটির কাছে ২০ টিরও বেশি অভিযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর মানিকাভেল অরুমুগাম৷ তাই কলেজগুলোকে নিজেদের প্রসপেক্টাসে এবং ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে ফিগুলো তালিকাভুক্ত করতে বলা উচিত রাজ্যের। এইভাবে, হয়ত অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য মনস্থির করার আগে সবটা জেনেবুজে নিতে পারবেন, বলে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এই স্টুডেন্ট কাউন্সিলরের সঙ্গে সহমত অভিভাবকরাও। সন্তানকে নামাক্কালের একটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে একজন অভিভাবক জানান, ‘আমরা ভেবেছিলাম অতিরিক্ত ফি হিসাবে হয়ত ১-২ লক্ষ টাকার বেশি নেওয়া হবে না। কিন্তু এই অতিরিক্ত ফি-ও টিউশন ফি এর সমান ছিল। সন্তানকে ভর্তি করার জন্য, প্ৰথমে ৪.৫ লক্ষ টাকা অফিশিয়াল ফি এবং তার উপরে আরও ৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। সব টাকা আমাদের নগদে দিতে বলা হয়েছিল। অথচ কোনও রসিদ দেয়নি।’ আরও জানা গিয়েছে যে চেন্নাইয়ের একটি নামি কলেজ, অভিভাবকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি বাবদ ৩.৫০ লক্ষ টাকা চার্জ করেছে৷
(Feed Source: ndtv.com)