General Knowledge: ট্রেনটি পর্তুগাল থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত যাত্রীদের নিয়ে যায়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম রেলযাত্রা হিসেবে পরিচিত। এই যাত্রায় মোট ২১ দিন সময় লাগে।
নয়াদিল্লি: বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে কিসের না থাকে। এই জন্য মানুষ হাজারো টাকা খরচ করতে দ্বিধা করেন না। হানিমুনের কথা উঠলে সবার প্রথমে মাথায় আসে, খরচ যতই হোক, ভ্রমণ অবশ্যই চমৎকার হওয়া উচিত। কিন্তু ভাবুন তো, যদি এমন একটি ট্রেন পাওয়া যায়, যা আপনাকে খুব সুন্দর পর্তুগাল থেকে শুরু করে প্যারিসের সুন্দর দৃশ্যও দেখাবে, সিঙ্গাপুরে শপিং করার সুযোগও দেবে, তাহলে কেমন হয়! হ্যাঁ, এমন একটি ট্রেন আছে যা ১৩টি দেশের মধ্যে ভ্রমণ করায়, এবং ভাড়া এমন কিছু বেশি নয়।
মিররের প্রতিবেদনের মতে, এই ট্রেনটি পর্তুগাল থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত যাত্রীদের নিয়ে যায়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম রেলযাত্রা হিসেবে পরিচিত। এই যাত্রায় মোট ২১ দিন সময় লাগে। পথে অনেক চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, তাই সম্ভবত কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে। কারণ এই ট্রেনটি ১৮,৭৫৫ কিলোমিটার পাড়ি দেয়। এটি আপনাকে ইউরোপের সুন্দর দেশগুলো থেকে শুরু করে সাইবেরিয়ার ঠান্ডা অঞ্চলেও নিয়ে যাবে, পাশাপাশি এশিয়ার গরম অঞ্চলগুলোও দেখাবে।
ভাড়া কত? আপনি হয়তো ভাবছেন, এত বড় যাত্রা, বিশেষ ট্রেন, তাহলে ভাড়া নিশ্চয়ই অনেক বেশি হবে। কিন্তু আপনি ভুল ভাবছেন। এই ট্রেনের ভাড়া মাত্র ১২০০ আমেরিকান ডলার। ভারতীয় টাকায় যা প্রায় ১ লাখ টাকা। ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত এই যাত্রা আপনি মাত্র ১ লাখ টাকায় করতে পারবেন এবং তা-ও লাক্সারি ট্রেনে। এর মধ্যে আপনার খাবার, থাকা-খাওয়া সব কিছুই অন্তর্ভুক্ত। যদি আপনি প্লেনের মাধ্যমে এসব দেশ সফর করতে যান, তাহলে অনেক বেশি খরচ হবে।
ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত ভ্রমণ এই যাত্রা বোতেন-ভিয়েনতিয়ানে রেললাইন খুলে যাওয়ার ফলে সম্ভব হয়েছে, যা চীনকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে যুক্ত করে। যাত্রাটি পর্তুগালের লাগোস শহর থেকে শুরু হয়। এরপর এটি স্পেনের উত্তরের এলাকা পেরিয়ে প্যারিসে পৌঁছায়। প্যারিস থেকে যাত্রীদের ইউরোপের পথ ধরে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো পর্যন্ত নিয়ে যাবে। সেখান থেকে ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ে লাইনে ৬ রাতের সফর শেষে তারা বেইজিং পৌঁছাবেন। তারপর বোতেন-ভিয়েনতিয়ানে রেলপথের মাধ্যমে সবাই ব্যাংকক পৌঁছাবে। এরপর মালয়েশিয়া পেরিয়ে সিঙ্গাপুরে পৌঁছাবে।
তবে এখনই বুকিং করা যাবে না কিন্তু থামুন, আপনি এখনই এই ট্রেনে বুকিং করতে পারবেন না। কারণ ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কারণে এই যাত্রাটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কারণ এই ট্রেনটি ইউরোপের সেই সব রাস্তায় চলাচল করে, যেখানে বর্তমানে যুদ্ধ চলছে। ট্রেনটি রাশিয়ার মস্কোতে যাবে, কিন্তু যুদ্ধের কারণে এখন সেখানে পরিস্থিতি অনুকূল নয়। রেল প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হলেই এই রুটটি আবার চালু করা হবে।