Delhi Air Pollution: ‘সিভিয়ার প্লাস’ বায়ুদূষণ রাজধানীতে, বাতাসে বিষ! বিপদের ভয়ে বন্ধ স্কুল-কলেজ

Delhi Air Pollution: ‘সিভিয়ার প্লাস’ বায়ুদূষণ রাজধানীতে, বাতাসে  বিষ! বিপদের ভয়ে বন্ধ স্কুল-কলেজ

Delhi Air Pollution: পরিস্থিতি শোধরানোর বদলে দিন দিন আরও খারাপ হয়ে উঠছে। সোমবার সকালেই দিল্লির বাতাসের মান ‘সিভিয়ার প্লাস’-এ পৌঁছে গিয়েছে। ফলে উত্তরোত্তর বাড়ছে উদ্বেগ।

দিল্লিতে বায়ুদূষণ

নয়াদিল্লি: বিষ বাতাসে ঢাকা পড়েছে রাজধানী। গত সপ্তাহ থেকেই পরিস্থিতি শোচনীয় হয়ে উঠেছে। তবে পরিস্থিতি শোধরানোর বদলে দিন দিন আরও খারাপ হয়ে উঠছে। সোমবার সকালেই দিল্লির বাতাসের মান ‘সিভিয়ার প্লাস’-এ পৌঁছে গিয়েছে। ফলে উত্তরোত্তর বাড়ছে উদ্বেগ। যার জেরে সুস্থ মানুষদের পর্যন্ত শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর যাঁদের আগে থেকেই হার্ট অথবা ফুসফুসের রোগ রয়েছে, তাঁদের তো গুরুতর স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা দেখা দিতেই পারে বলে আশঙ্কা।

গত ২৪ ঘণ্টায় গড় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) পৌঁছে গিয়েছে ৪৮১-তে। যার জেরে গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান (জিআরএপি)-এর চতুর্থ পর্যায়ে দূষণ প্রতিরোধকারী কঠোর পদক্ষেপ লাগু করা হয়েছে। আর এই কঠোর নিষেধাজ্ঞার জেরে ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিতে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণী ছাড়া অন্যান্য শ্রেণীর ক্লাসগুলি অনলাইন করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ধোঁয়া নির্গমনকারী গাড়ি এবং দূষণ সৃষ্টিকারী কার্যকলাপের উপরেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সেন্ট্রাল কমিশনের তরফে আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন বা এনসিআর-এর অফিসগুলিকে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে হবে। বাকি কর্মীদের ওয়ার্ক ফ্রম হোম দিয়ে দেওয়া হবে।

এবার বায়ুদূষণের মাত্রার বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক। একিউআই যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তাহলে সেটাকে ‘গুড’ বা ভাল বলে গণ্য করা হবে। আবার ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে একিউআই থাকলে তা ‘স্যাটিসফ্যাক্টরি’ বা সন্তোষজনক বলে ধরা হয়। এরপর বায়ুদূষণের মান ১০১ থেকে ২০০-র মধ্যে থাকলে সেটাকে ‘মডারেট’ বা মাঝারি বলে মনে করা হয়। আবার ২০১ থেকে ৩০০-র মধ্যে বায়ুদূষণের মান থাকলে সেটাকে ধরা হয় ‘পুওর’ বা খারাপ। এখানেই শেষ নয়, একিউআই যদি ৩০১ থেকে ৪০০-র মধ্যে থাকে, তাহলে সেটাকে ‘ভেরি পুওর’ বা খুব খারাপ বলে ধরা হয়। আর ৪০১ থেকে ৪৫০-এর মধ্যে একিউআই থাকে, তাহলে সেটাকে ‘সিভিয়ার’ বা গুরুতর হিসেবে ধরা হবে। তবে বায়ুদূষণের মাত্রা যদি ৪৫০-এর উপরে হয়, তাহলে সেটাকে ‘সিভিয়ার প্লাস’ বলে গণ্য করা হয়।

ইতিমধ্যেই আবার দেশের রাজধানী ঢেকে গিয়েছে ঘন ধোঁয়াশায়। যার জেরে দিল্লি জুড়ে কমলা সতর্কতা বা অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে আইএমডি। সোমবার সকালেও দৃশ্যমানতা ছিল অত্যন্ত কম। যার জেরে উড়ান এবং ট্রেন চলাচলেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ পরিস্থিতি আগের সপ্তাহের তুলনায় এতটুকু বদলায়নি। গত সপ্তাহেও উড়ান এবং ট্রেন চলাচলে বিলম্ব হয়েছিল।

অধিকাংশ জায়গায় একিউআই-এর রেকর্ড ৪৫০-এর বেশি:

সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (সিপিসিবি) জানিয়েছে যে, দেশের রাজধানীর একাধিক জায়গাতেই বাতাসের মান ৪৫০-র উর্ধ্বে চলে গিয়েছে। ফলে একিউআই সিভিয়ার প্লাস-এ পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে একিউআই ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে ৪৮১-তে। সিপিসিবি ডেটা বলছে যে, আলিপুর এলাকায় একিউআই ছিল ৪৭৫। এর পাশাপাশি সোমবার সকালে অশোক বিহার ও বাওয়ানায় ৪৯৫, দ্বারকায় ৪৯৯, বুরারিতে ৪৬১ এবং নজফগড়ে ৪৯৩-এ পৌঁছে গিয়েছে একিউআই। গত বুধবার এই মরশুমে প্রথমবারের জন্য একিউআই সিভিয়ার ক্য়াটাগরিতে ছিল একিউআই। তবে তারপর থেকে এই প্রথমবারের জন্য সোমবার সকালে একিউআই পৌঁছে গিয়েছে সিভিয়ার প্লাস মাত্রায়।

জিআরএপি-র চতুর্থ পর্যায় জারি:

গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান (জিআরএপি)-এর চতুর্থ পর্যায়ের আওতায় দিল্লিতে কোনও ট্রাককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে যেসব ট্রাক পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহার করে তাদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। আর প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে, সেই সমস্ত ট্রাককে, যেগুলি প্রয়োজনীয় সামগ্রী বহন করবে।

এখানেই শেষ নয়, হাইওয়ে, রাস্তা, উড়ালপুল, পাওয়ার লাইন, পাইপ লাইন এবং অন্যান্য পাবলিক প্রজেক্ট-সহ সমস্ত নির্মাণ কাজ আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু দিল্লি জুড়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তাই দেশের রাজধানীতে গাড়ির জোড়-বিজোড় সংখ্যা সংক্রান্ত নিয়ম আবার লাগু করতে পারে সরকার। এটা বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করার একটা অন্যতম কার্যকর উপায়। এই নিয়মের আওতায় রেজিস্ট্রেশন নম্বরের শেষ ডিজিটের ভিত্তিতে পথে নামার অনুমতি পাবে গাড়িগুলি।

প্রসঙ্গত রাজধানী শহরের এই বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে সবথেকে বড় অবদান রয়েছে গাড়ির ধোঁয়ার। পরিসংখ্যান বলে যে, শহরের বায়ুদূষণের মধ্যে ১৫.৪ শতাংশই আসছে গাড়ির ধোঁয়া থেকে। এখানেই শেষ নয়, ফসলের আগাছা পোড়ানোও দিল্লির ঘন ধোঁয়াশার জন্য দায়ী। আসলে দিল্লির আশপাশের রাজ্যগুলিতে প্রতি বছরই এই সময় ফসলের আগাছা পোড়ানো হয়। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে দিল্লির বাতাসের উপরেও। বিশেষজ্ঞদের মতে, পড়শি রাজ্যগুলিতে ফসলের আগাছা পোড়ানোর জন্যই রাজধানীর বাতাস ধোঁয়াশায় ঢেকে যায়।