আজ অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে শিরোমণি অকালি দলের নেতা সুখবীর সিং বাদলকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি। অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলেই ধরে ফেলেন আশেপাশের লোকেরা। পরে গ্রেফতার করা হয় সেই বন্দুকবাজকে। জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম নারায়ণ সিং চৌরা। কে এই ব্যক্তি? রিপোর্ট অনুযায়ী, নারায়ণ সিং একটা সময়ে খলিস্তনি জঙ্গি ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা এবং অভিযোগ ছিল। জীবনের অনেকটা সময় ধরে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ ছিলেন। এই নারায়ণই বুরাইল জেল ভেঙে কয়েদিদের নিয়ে পালানোর ঘটনায় ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন। সেই সময় জগতর সিং হাওয়ারা, পরমজিৎ সিং ভেওরা এবং তাদের আরও দুই সহযোগীকে পালাতে সাহায্য করেছিল।
উল্লেখ্য, অকাল তখতের শোনানো শাস্তি অনুযায়ী, অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে ‘সেবাদার’ হিসাবে কাজ করতে হচ্ছে সুখবীর সিং বাদলকে। আজ সেই শাস্তি পালনের দ্বিতীয় দিন ছিল। আর সেই সময়ই সুখবীরকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে এডিসিপি হরপাল সিং বলেছেন, ‘এখানে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল… সুখবীরজিকে যথাযথভাবে কভার দেওয়া হয়েছে… নারায়ণ সিং চৌরা (আততায়ী) গতকালও এখানে ছিলেন… আজও তিনি এখানে এসে প্রথমে গুরুকে প্রণাম জানান…’।
উল্লেখ্য, আগেই ধর্মীয় অপরাধ করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল সুখবীরকে। পরবর্তীতে, শিরোমণি অকালি দলের সভাপতি পদও তাঁকে ছাড়তে হয়েছিল। এরপর ‘অকাল তখত’-এর তরফে সোমবার সুখবীর সিং বাদলের বিরুদ্ধে তাঁর ধর্মীয় অপরাধের জন্য শাস্তি ঘোষণা করা হয়। সেই আদেশে বলা হয়, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে শিরোমণি অকালি দল এবং তাদের দ্বারা পরিচালিত সরকার ‘ভুল’ করেছে। সেই কারণেই সুখবীরকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, শিখ ধর্ম অনুসারে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হিসাবে স্বীকৃত ‘অকাল তখত’।
রিপোর্ট অনুযায়ী, অকাল তখতের তরফে বলা হয়েছে, সুখবীর সিং বাদলকে কীর্তন শুনতে হবে। একইসঙ্গে, অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে ‘সেবাদার’ হিসাবেও কাজ করতে হবে। তাঁকে সেখানে বাসন মাজতে এবং তা ধুতে হবে। সেইসঙ্গে, জুতো পরিষ্কারও করতে হবে। এই গোটা ঘটনার জেরে সুখবীর সিং বাদল তাঁর বাবার উত্তরসূরি হিসাবে যে ‘ফখরে-এ-কোয়াম’ উপাধি এত দিন ধরে ভোগ করতেন, তা তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, সুখবীর সিং বাদলের বাবা প্রয়াত প্রকাশ সিং বাদল ছিলেন পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, তাঁকে এবং বিদ্রোহী নেতা সুখদেব সিং ধিন্দসাকে দু’দিন ধরে স্বর্ণ মন্দিরের দরজার বাইরে ‘সেবাদার’-এর পোশাক পরে বসে থাকতে হবে। দুই দিনই তাঁদের এভাবে এক ঘণ্টা করে মন্দিরের বাইরে বসে থাকার কথা।
এছাড়াও, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে যে শিখ নেতারা শিরোমণি অকালি দল মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁদের এই ধর্মীয় অপরাধের শাস্তি ভোগ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট পাঁচজন সিং সাহিবাঁ তাঁদের বিরুদ্ধে এই শাস্তি ঘোষণা করেছেন। তাঁদের এক ঘণ্টা করে স্বর্ণ মন্দিরের শৌচালয় পরিষ্কার করতে হবে এবং তারপর স্নান করে কমিউনিটি কিচেনের বাসন মাজতে ও তা ধুতে হবে।
(Feed Source: hindustantimes.com)